E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

২০২৪ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৭:৪৫:৩৫
ঈশ্বরদীতে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে কম খরচে বেশি আয়ের আশায় পতিত জমিতে আদা চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। এতে উপজেলায় কম-বেশি বস্তায় আদা চাষের আগ্রহ বাড়ছে। এবারে উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। দিন দিন বেড়েই চলেছে বস্তায় আদা চাষ।

আদা মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম খুবই পরিচিত ফসল। বাঙালি রান্নার অন্যতম একটি মসলা আদা, যা খাবাবের স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে। মসলা এবং ভেষজ ওষুধ হিসেবে আদার সুনাম রয়েছে। বাজারে এর দামও বেশ চড়া। আর বস্তায় এই আদা চাষ করেই সফল হয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন ঈশ্বরদীর জলিল ও ফাতেমা দম্পতি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সরাইকান্দি এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল ও ফাতেমা দম্পতি তাদের পতিত জমিতে ১২শ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। প্রতিটি বস্তায় সারি সারি আদার গাছ শোভা পাচ্ছে। আব্দুল জলিল বলেন, আমার পতিত জায়গায় ১২শ বস্তায় আদা চাষ করেছি। অন্যান্য ফসলের চেয়ে আদার দাম অনেক বেশি। কম খরচে উৎপাদন করা যায়। প্রতি বস্তায় আদা লাগানো থেকে শুরু করে তোলা পর্যন্ত আনুমানিক ৪০-৫০ টাকা খরচ হবে। ১২শ বস্তা থেকে প্রায় তিন লাখ টাকার আদা বিক্রি করার আশা পোষণ করছেন তিনি।

ফাতেমা বলেন, সাংসারিক কাজের পাশাপাশি স্বামীকে আদা চাষে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছি। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে আগামীতে আরও বড় পরিসরে বস্তায় আদা চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বস্তায় আদা চাষের জন্য আলাদা করে জমির দরকার নেই। অনেকের বাড়িতে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ হয়। আবার অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ডুবে ফসল নষ্ট হওয়ার ভয়ও নেই। একটি ফসল তোলার পর সেখানে আলাদা করে কোনো সার ছাড়াই আরেকটি ফসল ফলানো যাবে। খরচও তুলনামূলক কম।

এ পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহিত রোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। বাড়ির উঠোন, প্রাচীরের কোল ঘেঁষে বা বাড়ির আশেপাশের ফাঁকা জায়গা অথবা ছাদে যেখানে খুশি রাখা যায়। এর জন্যে আলাদা কোনও জমি বা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না।

কৃষি বিভাগ আরও জানায়, ছায়াযুক্ত জায়গাতেও এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায় । সাধারণত বাঁশ বাগানের তলায় কোন ফসল চাষ হয় না। ফলে জায়গাটা ফাঁকা পড়েই থাকে। সেই বাঁশ বাগানে বস্তায় আদা চাষ করা যায় খুব সহজেই।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি এলাকার অন্যান্য কৃষকদের মাঝেও সাড়া ফেলেছে। আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক। আগামীতে তারাও বস্তায় আদা চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে বাণিজ্যিক ভাবে বস্তায় আদা চাষ শুরু হলে বাজারে অবশ্যই আদার সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দামও অনেক কমে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি বিদেশ থেকে আদার আমদানি কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, বস্তায় আদা চাষ খুবই সহজলভ্য একটি পদ্ধতি। আদার গাছে রোগের আক্রমণ খুবই কম। এছাড়া সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না বললেই চলে। তাই দিন দিন বস্তায় আদা চাষ জনিপয় হয়ে উঠছে। চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীতে প্রায় দুই শত কৃষকের মাধ্যমে ২০ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ মেট্রিক টন।

(এসকেকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৩ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test