E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

একজন নারী উদ্যোক্তার গল্প 

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৪ ১৮:৫৯:১৪
একজন নারী উদ্যোক্তার গল্প 

দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : গল্পটা একজন নারী উদ্যোক্তার। স্বপ্ন বুনছেন ভার্মি কম্পোস্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে ওঠার। গড়ে তুলেছেন কম্পোস্ট তৈরির কারখানা। পরিশ্রমী এই নারী  উদ্যোক্তার নাম কামরুন্নাহার।  তার বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার কোমরপুর গ্রামে। কোমরপুর বাসস্ট্যান্ড হতে একটু পূর্ব দিকে রাস্তার ডানপাশে নাহার এগ্রো ফার্ম  লেখা একটি সাইনবোর্ড ঝুলছে। বাড়ির পিছনে টিনের কয়েকটা  সেড। সেডের ভেতরে ইট দিয়ে হাউজ তৈরি করা হয়েছে। হাউজের মধ্যে গোবর ও কলাগাছের ছোবরা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ছোট বড় ৩৭ টি হাউজ রয়েছে তার শেডে। ভিতরে একটি টিনের ঘর যেখানে তৈরি সার স্তুপ দিয়ে রাখা আছে। পাশের সার চালার জন্য একটি মেশিন রাখা আছে। প্লান্টের বিভিন্ন জায়গায় বস্তা ভরা গোবর জমিয়ে রাখা হয়েছে।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে তিনি ব্ল্যাক সোলজার প্লান্ট তৈরি করেন ।পরে তিনি এসডিসির এক কর্মকর্তার পরামর্শে ব্ল্যাক সোলজার প্লান্ট বাদ দিয়ে বাড়ির পাশে প্রায় ৩ একর জায়গার উপরে গড়ে তুলেন একটি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির কারখানা। সার তৈরির কারখানায় নিয়মিত কাজ করেন ৫ জন শ্রমিক। কোনো কোনো সময় বেড়ে ১০ জনও হয়। বর্তমানে এই প্ল্যান্ট থেকে মাসে প্রায় ৩০ টন সার উৎপাদন করে থাকেন। এবং এ সার উৎপাদনের প্রধান উপকরণ কেঁচো সেটাও এখানে উৎপাদন হয়ে থাকে এবং এখান থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে এ কেঁচো কিনে নিয়ে যান। এবং এই কেঁচো বেচেও তিনি মাসে বেশ টাকা উপার্জন করে থাকেন। বর্তমানে তিনি এই ভার্মি কম্পোস্ট প্লান করে বেশ লাভবান হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে আরো দিন দিন বাড়তে থাকবে। এবং তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চান।

কামরুন্নাহার মুরগির খামার ও ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই এর প্ল্যানটা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। পরে তার মনে হল আরো কিছু একটা করা দরকার।তিনি তৈরি করেন ভার্মি কম্পোস্ট সার কারখানা সেখান থেকেই শুরু। এটা বর্তমানে বাণিজ্যিক আকারে রূপ নিয়েছে। এছাড়া বিষমুক্ত খাবার উৎপাদন করতে জৈব সারের বিকল্প নেই। কৃষিকাজে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানো দরকার। জৈব সারের ব্যাবহার বাড়াতে পারলে মানুষের রোগবালাই কমে যাবে। এখানে সাধারণত দুই ধরনের সার উৎপাদন করা হয়। একটা ভার্মি কম্পোস্ট, আর একটা ট্রাইকো কম্পোস্ট। মাসে গড়ে খামারে ৩০ টন সার উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতিকেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার ১২টাকা ও ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ৮ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। উৎপাদিত বেশির ভাগ সার এলাকার সবজি চাষি ও মাছের খামারীরা নিয়ে যায়।এ কাজে তার স্বামী শাহান খান তাকে সব সময় উৎসাহ জুগিয়ে থাকেন।

ফরিদপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, কৃষি কাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটা হচ্ছে মাটি। এই মাটির প্রাণ হচ্ছে জৈব সার। সম্প্রতি আমাদের দেশে ভার্মি কম্পোস্টের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আমরা সাধারণত এই আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনেক উদ্যোক্তা এ ভার্মি কম্পোস্ট ও ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরি করে থাকেন পরে সেটা মার্কেটিং করতে গিয়ে অনেক বিপদে পড়ে যান। ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের মাধ্যমে মার্কেটিং টা করে দেই। এবং এই ভার্মি কম্পোস্ট তৈরীর বিষয়ে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমাদের এখান থেকে করা হয়ে থাকে।

(ডিসি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test