E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

হিন্দুরা চায় না মাদ্রাসার ছাত্ররা পূজায় পাহারা দিক

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৮:০০:৩৪
হিন্দুরা চায় না মাদ্রাসার ছাত্ররা পূজায় পাহারা দিক

শিতাংশু গুহ


প্রথমে শুনলাম, মাদ্রাসার ছাত্ররা দুর্গাপূজায় পাহারা দেবে। ধর্ম-উপদেষ্টা জানালেন, মাদ্রাসার ছাত্ররা পাহারা দিতে রাজি হয়েছে। এখন শুনছি, পূজা কমিটি চাইলে মাদ্রাসার ছাত্ররা মন্দির বা পূজামণ্ডপ পাহারা দেবে। আমাদের উত্তরটা বেশ স্পষ্ট ও শক্ত এবং তা হচ্ছে, ‘আমরা চাইনা মাদ্রাসার ছাত্ররা মন্দির/মণ্ডপ পাহারা দিক’। মাদ্রাসার ছাত্ররা বরং তাঁদের উগ্রপন্থী ভাইদের পাহারা দিক যাতে তারা মন্দিরের ধারে-কাছে না আসে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি ও অন্যান্য পূজা কমিটি একযোগে একথা জানিয়ে দিন। 

আমাদের এ সিদ্ধান্তের ৩টি কারণ উল্লেখ করছি: (১) মাদ্রাসার ছাত্ররা খুলনার উৎসব মন্ডলের যে পরিণতি ঘটিয়েছে সেই ক্ষত এখনো শুকায়নি। হিন্দুরা ‘শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা’ দিতে চায়না। (২) পূজায় আমাদের মা-বোনেরা ব্যাপকভাবে উপস্থিত থাকে, তাদের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। (৩) শেখ হাসিনা ‘কওমী মাতা’ হয়ে তাঁর সন্তানতুল্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধ প্রবেশের ব্যবস্থা করে নিজে দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন, আমরা তার ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চাইনা।

নোবেল বিজয়ী ড: মোহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, ‘এমন দেশ গড়বো যাতে মন্দির পাহারা দিতে না হয়’। আমরা তার কথার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই। পূজায় পাহারা লাগবে কেন? ঈদে তো পাহারা লাগেনা। কারণটা সবাই জানে, বলেনা। প্রশাসন বা পুলিশ-ৱ্যাব প্রহরা ঠিক আছে, তবে তা হওয়া উচিত ‘নিমিত্তমাত্র’, যদি প্রয়োজন পড়ে। আমরা চাই কোন প্রকার পাহারা ছাড়া পূজা করতে। সেটি যখন সম্ভব হবে, যখন হিন্দুর মন্দির আক্রমন হবেনা, মূর্তি ভাঙবে না, সেদিন আসবে প্রকৃত স্বাধীনতা।

জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া-শেখ হাসিনা সকল সরকারের আমলে হিন্দু ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হয়েছে। ফখরুদ্দিন-মঈন তত্বাবধায়ক সরকার আমলে পরিস্থিতি কিছুটা ভাল ছিলো। ড: ইউনুস আমলে হিন্দুরা ভাল থাকতে চায়, যদিও প্রথম মাসে, বা এখনো ঘটনা ঘটছে। তবু আমরা দেখছি প্রধান উপদেষ্টাকে এনিয়ে কথা বলতে, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যেতে। ধর্ম উপদেষ্টা ও জামাতের আমির ঢাকেশ্বরী গেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘হাতজোড়’ করে ক্ষমা চেয়েছেন। এসব আমরা আগে দেখিনি।

তবে কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। অতীতে সকল সরকার মিথ্যাচার করে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’র গীত গাইতেন। সরকার প্রধান যখন মিথ্যাচার করেন তখন রাষ্ট্রযন্ত্রের ক্ষতি হয়। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। বাংলাদেশে যেদিন পাহারা ব্যাতিত পূজা হবে; সিএসএ ব্লাসফেমী হিসাবে ব্যবহৃত হবেনা; হিন্দুরা দেশত্যাগে বাধ্য হবেনা; বাড়িঘর-ব্যবসা লুট হবেনা; কন্যা ধর্ষিতা হবেনা; হিন্দুরা বৈষম্যহীনভাবে দেশ সেবার সুযোগ পাবেন; সেদিন দেশে সম্প্রীতি জোয়ার বইবে, তার আগে নয়?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test