E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে শেখ হাসিনার অবদান ও বিএনপির মিথ্যাচার

২০২৪ জুন ২৬ ১৮:৩৮:০৫
সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে শেখ হাসিনার অবদান ও বিএনপির মিথ্যাচার

মানিক লাল ঘোষ


লক্ষ লক্ষ ভক্ত পূজারী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ঢাকেশ্বরী মন্দির বাংলাদেশের জাতীয় মন্দির। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উপাসনালয়। নিয়মিত পূজার্চনার পাশাপাশি শারদীয় দূর্গাপূজা, সরস্বতী পূজা, কালিপূজা, শনিপূজা, শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী, রথযাত্রা উৎসব, দোলযাত্রা, দিপালী থেকে শুরু করে প্রতি মাসে কোন না কোন পূজাকে ঘিরে ভক্তকূল থাকে উৎসব মুখর। পূজা আয়োজনের বাইরে মহান সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ প্রাপ্তির আশায় মন্দিরের মেলাঙ্গনে বিবাহ অনুষ্ঠান, অন্নপ্রাশন, প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনায় শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন মনিষীদের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীর পাশাপাশি ধর্মীয় সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনতো আছেই। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় হওয়ার কারণে বিজয়া পুনর্মিলনী,পরিবার দিবসসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতো রয়েছেই। উৎসবমুখর থাকা, দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দেশ-বিদেশের পর্যটকদেরও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মরিশাসের রাষ্ট্রপতি পৃথ্বীরাজ সিং রূপন সহ বিশ্বের হিন্দুধর্মের শীর্ষ ব্যক্তিরা বাংলাদেশ সফরকালে একবার হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন ও পূজা দিতে আসেন।

আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সংখ্যা বেশি বলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির ভাবমূর্তি বৃদ্ধি ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট নামে একটি নামধারী সংগঠনের ব্যানারে বিএনপির এজেন্ট কতিপয় ব্যক্তি নতুন ষড়যন্ত্রে নেমেছে। সম্প্রতি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের নামে তাদের ষড়যন্ত্রের নতুন ডালাপালা ছড়াতে অপচেষ্টা শুরু করেছে। সংখ্যালঘুদের নির্যাতন প্রতিরোধে আজ পর্যন্ত ঐ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট নামের কোনো সংগঠনের কার্যক্রমতো কারো চোখে পড়ে নাই। হঠাৎ করে ঢাকেশ্বরী মন্দির কেন্দ্রিক তাদের রাজনীতি ও সংখ্যালঘুদের জন্য মায়া কান্নায় নতুন ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।

ষড়যন্ত্রকারীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই তারা কি ভুলে গেছেন বৈদ্যুতিক আর সহস্র প্রদীপের আলোয় আলোকিত ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সেই নিকষ কালো অন্ধকার অধ্যায়ের কথা? পাকিস্তান আমলে এবং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরও বি়ভিন্ন সময়কালে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দ্বারা বার বার আক্রান্ত হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের আবেগ ও ভালোবাসার এই পবিত্র অঙ্গন। পাকিস্তান সৃষ্টির পরেই ১৯৫০ সালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হামলা হয়। লুট করা হয় মন্দিরের স্বর্ণালংকার। ১৯৬৪ সালের দাঙ্গার পর বেশ কিছুটা সময় মন্দিরে পূজা অর্চনা বন্ধ থাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মন্দিরটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মন্দিরের অর্ধেকের বেশি ভবন ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। প্রধান ভবনটি দখল করে পাক হানাদার বাহিনী গোলাবারুদ রাখার গুদামে পরিণত করে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের নির্দেশনা ও উদ্যোগে হারানো গৌরব ফিরে আসে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আনন্দের সাথে পূজা অর্চনা শুরু করে। কিন্তু জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের পর শুধু সারা দেশে যে অন্ধকার নেমে আসে তার প্রভাব পড়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরেও। ১৯৭৫ সালের ২৫ নভেম্বর মন্দিরে আবারও হামলা চালানো হয়। সামরিক শাসনামলে ১৯৮৩ সালে মন্দির লুট ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ১৯৯০ সালে এরশাদের আমল ও ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়ার আমলে সারা দেশে মন্দিরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে হামলাসহ আগুন দেয়া হয়। সেই মন্দিরে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন কিসের জন্য? কার স্বার্থে? সেই প্রশ্ন অনেকরই।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিশ্চিত করেছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য মতে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলে এদেশের সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে নিরাপদে থাকে।

বিএনপির আমলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র ভুলে যাবার নয়। ২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সহিংসতার দগদগে ঘা এখনো দৃশ্যমান। ওই সময় ১৪ হাজার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন পাঁচ হাজার ৫৭১টি অভিযোগের তথ্য প্রমাণ খুঁজে পায়। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ৩৫৫টি। ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ গুরুতর অপরাধের তিন হাজার ২৭০টি ঘটনা চিহ্নিত করা হয়।

ঐ সময়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন সূত্রের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত জোট হিন্দুদের তাণ্ডব চালায়। পরিকল্পিত, ছকবদ্ধভাবে হিন্দুদের দেশত্যাগ করতে বাধ্য করার হীন প্রচেষ্টা ছিল বিএনপির।

সেসময় বিএনপি- জামাত জোটের হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিলো বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, যশোর, কুমিল্লা ও নরসিংদী। ওই সময় আক্রমণকারীরা হিন্দুদের বাড়িতে ঢুকে তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর, সম্পত্তি লুটপাট এবং অনেক হিন্দু নারীদের ধর্ষণ করে। পাওয়া গেছে হিন্দু মেয়েদের অপহরণের খবরও।

২০০১ সালের ১২ অক্টোবর গৌরনদী, আগৈলঝাড়ায় নির্বাচনী বিজয়ের পাশবিক উল্লাসে প্রশাসন ছিলো নীরব। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৫০টি।

২০০১ সালের ৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার মিঠানালার দাসপাড়ায় সোমবার মধ্যরাতে বিএনপি সন্ত্রাসীদের হামলায় আওয়ামী লীগ কর্মী সুনীল দাস সাধু নিহত হয় এবং প্রায় ৩০ জন নারী ও শিশু আহত হয়েছে। ধর্ষণ, হামলা ও লুটপাটে ৫১টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন উল্লেখ করার মতো পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা রয়েছে অসংখ্য। বিএনপির হয়ে আজ যারা সংখ্যালঘুদের জন্য মায়াকান্না করছেন সেদিন তারা কোথায় ছিলেন? ২০০১ সালে নির্বাচনের পর বিএনপি-জামাতের হামলার ভয়ে যখন রাতের পর রাত জেগে জগন্নাথ হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকেশ্বরী মন্দির পাহাড়া দিয়েছেন তখন তারা কোথায় ছিলেন? শত প্রতিকূলতায়ও শেখ হাসিনা মন্দিরের খোঁজ খবর নিতেন। তখন কই ছিলেন আপনারা?

২০২২ সালে ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি: সমস্যা এবং উত্তরণ’ বিষয়ে এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপলের (এলকপ) গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় ‘সংখ্যালঘুরা তুলনামূলকভাবে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে অনেক ভালো অবস্থানে আছেন।’

সেই প্রতিবেদনের যথার্থতা খুঁজে পাওয়া যায় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার চিন্তা-চেতনা ও তাঁর বক্তব্যে। সকল ধর্মের সহ-অবস্থান নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফিরে আসার পর নতুনকরে ঘুরে দাঁড়াবার স্বপ্ন দেখে এদেশের নির্যাতিত নিপীড়িত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সকল সভা সমাবেশে আশ্বস্ত করে বারবার বলেছেন, ‘আপনারা নিরাপদে যার যার ধর্ম পালন করবেন। কারা সংখ্যায় বেশি, কারা কম, সেটা বড় কথা নয়। যে যার ধর্ম উৎসবের সঙ্গে স্বাধীন ভাবে পালন করবেন। সেটা নিশ্চিত করা নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’

প্রধানমন্ত্রী যা যা বলেন তা যথাযথ বাস্তবায়নের শতভাগ চেষ্টাও করেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে জাতীয় মন্দিরের মর্যাদা দেয়া হয়। নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির। মন্দির সংস্কারের জন্য ঐ সময়ে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় এবং হিন্দুরা নির্বিঘ্নে পূজা অর্চনা করার সুযোগ পায়। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আস্থার জায়গা ফিরে পায়। ঢাকেশ্বরী মন্দিরসহ সারা দেশের মন্দির ও উপাসনালয়ে আবারও ভক্তকুলের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়। ফিরে আসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। যার কারণে প্রতিবছর শারদীয় দূর্গা উৎসবে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়েছে বহুগুণে।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ইতিহাস খুঁজে জানা যায় দেবীর প্রতিমা যেখানে স্থাপিত সেসব জায়গা ঘিরে ভাওয়াল রাজার আমলের শেষদিকে মন্দিরের জন্য ২০ বিঘা জায়গা দেবোত্তর ভূমি হিসেবে রেকর্ডভূক্ত হয়। সেই দেবোত্তর ভূমি মানুষ রূপী একশ্রেণির ভূমি দস্যুরা দখল করে অবৈধ বস্তি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল। এর কারণে মন্দিরের প্রবেশ পথ ছিল খুবই সরু ও জরাজীর্ণ। এর কারণে একদিকে মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হতো, অন্যদিকে ভক্ত ও পর্যটকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মন্দির কমিটির দাবি ছিল দ্রুত এই জায়গাটুকু পুনরুদ্ধার করে মন্দিরের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু এই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা থাকায় পুনরুদ্ধারে জটিলতা ছিল নানামুখী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর দূরদর্শিতায় অনুধাবন করলেন দ্রুততম সময়ে, মামলা নিষ্পত্তি করে এই জমি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। তখন তিনি বিকল্প পথে গিয়ে মোটা অংকের টাকা দিয়ে আপোস মীমাংসা করে মন্দির কমিটির হাতে জমিটি ফিরিয়ে দেন। ২০১৮ সালে দুর্গা পূজার উপলক্ষ্যে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পরিদর্শন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময়কালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্দির কর্তৃপক্ষকে জমি উপহারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘এই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জমি নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। ইতোমধ্যেই সেই সমস্যা আমরা সমাধান করে ফেলেছি। বাকি কাজটা আপনাদের ওপরই নির্ভরশীল।’

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মন্দিরের দক্ষিণ-পশ্চিমের দেড় বিঘা জমি বুঝে পেয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। শুধু জায়গা ফিরিয়ে দিয়েই দায়িত্ব পালন শেষ করেননি প্রধানমন্ত্রী। মন্দিরের আধুনিকায়নের জন্য ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন তিনি। যার উন্নয়ন কাজ এখনো চলমান। সুবিশাল জায়গায় ঢাকেশ্বরীর মন্দিরের আধুনিকায়ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত ও আদর্শের যোগ্য উত্তরসূরি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার-ই অবদান। মন্দির কর্তৃপক্ষ ও এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় আাশায় বুক বেঁধে আছে, আরো যেসব বেদখল জমি রযেছে, সেগুলোও প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একদিন দখলমুক্ত হয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে ফিরে আসবে। হিন্দু সম্প্রদায়সহ এদেশের সংখ্যালঘুরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে মানবতার জননী শেখ হাসিনা - ই তাদের বিশ্বাস ও আস্থার শেষ ঠিকানা।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আলাদা একটা আবেগ-ভালোবাসা রয়েছে। শত ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি প্রতিবছর স্ব-শরীরে মন্দিরে উপস্থিত হয়ে ভক্তদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং যখন যা প্রয়োজন তাই করে দেন। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী, মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিনামূল্যের ক্লিনিকটা পুনরায় চালু করা হবে। সেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে আধুনিক মানসম্মত চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়া ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের অর্থায়নে পূজারীদের সুবিধার্থে একটি লিফটসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে।

আওয়ামী লীগ সরকার সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষদেরও সমান গুরুত্ব দেয়। সকল ধর্মীয় উপাসনালয় সংস্কার, ধর্মীয় শিক্ষা প্রচারের ক্ষেত্রে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার মসজিদ ভিত্তিক যেমন গণশিক্ষা চালু করেছে ,ঠিক মন্দির ভিত্তিক ধর্মীয় শিক্ষাও চালু করেছে। সেবায়েত–পুরোহিতদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা আলাদা কল্যাণ ট্রাস্ট চালু করা হয়েছে।

সকল ধর্মের সহ-অবস্থান নিশ্চিত করে সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এতো অবদান থাকার পরও বিএনপির আমলে হাতে গোনা কয়েকজন সুবিধাভোগী সংখ্যালঘু প্রশ্নে বিভ্রান্তি ছড়াতে মাঠে নেমেছে। বিএনপির এজেন্ট এইসব মুখোশধারীদের মুখোশ উন্মোচন করে তাদের সমুচিত জবাব দিতে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও তাদের কল্যাণে শেখ হাসিনার অবদানকে সামনে নিয়ে আসতে হবে।

লেখক : বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য।

পাঠকের মতামত:

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test