E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

প্রেসিডেন্ট পুত্র দোষী সাব্যস্ত 

ট্রাম্প ও হান্টার বাইডেনের মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল 

২০২৪ জুন ১৪ ১৬:৫১:২১
ট্রাম্প ও হান্টার বাইডেনের মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল 

শিতাংশু গুহ


নিউইয়র্কে মে ২০২৪-এ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হবার পর মঙ্গলবার ১১ই জুন ২০২৪ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-এর পুত্র হান্টার বাইডেন ৫৪, ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন। পুত্রের দুঃসংবাদ শুনে প্রেসিডেন্ট তড়িঘড়ি ডেলওয়ারে আসেন। আগেই তিনি বলেছেন, আমি প্রেসিডেন্ট, আমি বাবাও, আমি ও জিল আমাদের ছেলেকে ভালবাসি। পূর্বাহ্নে তিনি ঘোষণা করেছেন, হান্টার বাইডেন দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি তাঁকে ক্ষমা করবেন না। মামলাটি ফেডারেল, প্রেসিডেন্ট চাইলে ক্ষমা করতে পারেন। 

এ মামলায় হান্টার বাইডেনের ২৫বছর জেল, ৭৫০হাজার ডলার জরিমানা হতে পারে। তবে যেহেতু এটি হান্টার বাইডেনের প্রথম অপরাধ, তার জেল না হবার সম্ভবনা বেশি। এ মামলার বিচারক মেরিলিন নরিকা। সেপ্টেম্বরে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে ‘কর ফাঁকি’ মামলা শুরু হবে, তিনি ক’বছর কর দেননি। সেটিও নির্বাচনের আগেই শেষ হবে, এবং দোষী হলে তাকে জেলে যেতে হতে পারে। বাইডেন জিতলে হয়তো তিনি কথা রাখবেন, বাইডেন হারলে হোয়াইট হাউস ছাড়ার প্রাক্কালে তিনি পুত্রকে ক্ষমা করে দিয়ে যাবেন না, তা কি হয়? অবশ্য, এনিয়ে তখন কারো মাথাব্যথা থাকবে না!

হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে বন্দুক ক্রয়ের ঘটনায় তিনটি ফৌজদারি অভিযোগ ছিলো, (১) বন্দুক বিক্রেতাকে মিথ্যা বলা (২) বন্দুক ক্রয়ের আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেয়া ও (৩) ১২-২৩ অক্টবর ২০১৮-মোট ১১ দিন একটি অবৈধ অস্ত্র নিজের কাছে রাখা। ২০২৩’র জুলাইতে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও হান্টার পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিল, কিন্তু তাতে ‘হাজতবাস’ ছিলোনা বলে বিচারক সেটি নাকচ করে দেন্। এ মামলা চলাকালে ফাস্টলেডী জিল বাইডেন প্রতিদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডেন্ট যাননি। হান্টারের স্ত্রী মেলিসা কোহেন বাইডেন, কন্যা এশলে বাইডেন প্রায়শ: আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় হান্টার বাইডেনের প্রথমা স্ত্রী ক্যাথলিন বাহলে-কে সাক্ষী হিসাবে ডাকেন। হান্টার বাইডেনের বিধবা ভাতৃবধূ হ্যালি বাইডেনও সাক্ষ্য দেন্। হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় ট্রাম্পের আমলে ২০২০’র নির্বাচনের পূর্বে। হান্টার বাইডেন তার বাবা ভাইস-প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন কন্সালটেনসিং ও লবিং-র সাথে যুক্ত ছিলেন। ইউক্রেন ও চীনের সাথে ব্যবসায় তিনি তাঁর পিতার ভাবমূর্তি কাজে লাগান। বিজনেস আলোচনায় তিনি কখনো-সখনো অন্যদের শুনিয়ে তার পিতার সাথে স্পিকারফোনে কথা বলতেন। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হলে পরেও তদন্ত থামেনি।

নির্বাচনী বছর বলেই ট্রাম্প ও হান্টারের মামলার গুরুত্ব বেড়ে যায়। ট্রাম্প হলেন প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হ’ন। হান্টার বাইডেনও প্রথম যিনি একজন সিটিং প্রেসিডেন্টের ফ্যামিলি মেম্বার হিসাবে দণ্ডিত হলেন। হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে প্রথমে বিচার বিভাগ মামলা করেনি, বলেছিলো অপরাধ ততটা গুরুতর নয়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাটি ছিলো মিস্ডমিনার, সরকারি কৌঁসুলি এর সাথে ষড়যন্ত্র ঢুকিয়ে এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য করেন।

বিচারক বলেছেন, ১২০দিনের মধ্যে হান্টার বাইডেনের দন্ড প্রদানের তারিখ দেয়া হবে, অর্থাৎ নির্বাচনের আগেই সেটি হবে। হান্টারের পিতা প্রেসিডেন্ট না হলে তাকে এ মামলা খেতে হতোনা। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী না হলে তার বিরুদ্ধে এ মামলা হতোনা। সুতরাং বলাই যায়, ট্রাম্প ও হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা দু’টি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল। এখন দেখার বিষয় এসব মামলা আগামী নির্বাচনে কি প্রভাব ফেলে। উল্লেখ্য, ২৭শে জুন বাইডেন-ট্রাম্প প্রথম বিতর্ক, আয়োজক সিএনএন।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test