E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

রূপকথার গল্প

২০২২ নভেম্বর ১৩ ২০:১০:১৩
রূপকথার গল্প








 

আলিফ লায়লার রাজ্য

ছোট্ট একটা রাজ্য। আরঙ্গান। তিন দিন ধরে একটানা বাজনা বেঁজে চলেছে এই রাজ্যে। রাজপুত্র তালেবের বিয়ে আজ। পাশের রাজ্যের রাজকন্যা তায়েবার সাথে। কিন্তু বাঁধ সাধল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাদুকর, হাজারো দৈত্য, দান আর জ্বীনদের মালিকীন জাদুকরি মালেকা হামেরীন । সে তালেবকে ভালবাসে। আর তার জন্যই তালেব-তায়েবার বিয়েতে এই বাঁধা । তীব্র ক্ষোভে আগুনের মতো রূপ ধারন করল মালেকা হামেরীন । ছোট দৈত্যদের সর্দার সমগ্র দৈত্যদের প্রধান রাজা চিমাদেবের বিশস্ত সহচর জাররাদেবকে স্মরন করলেন মালেকা হামেরীন । ক্রোধে তখন তার সর্বাঙ্গ চলছে ।অগ্নীস্ফুলিঙ্গ ছড়ানো তার চোখ দুটো শুধু তালেব তায়েবার মৃত্যুদেহ দেখতে চাইছে।

-আকরম! আকরম!

জাদুর বিচ্ছুটা চারদিকে ঘুরিয়ে মন্ত্র পড়তে শুরু করলো হামেরীন।

-জাররাদেব! জাররাদেব! তোকে স্মরণ করছি। হাজার হ।শীঘ্র হাজির হ।

জাদু গোলকে হাত রাখলেন জাদুকরী মালেকা হামেরীন। কিছুখনের মধ্যেই চারদিকে আগুনে হুলকা ছড়িয়ে হাজির হল জাররাদেব।

-হে আমার মালেকীন। সমগ্র জাদুরাজ্যের সাম্রাজ্ঞী। এই অধম কে কেন ডেকেছেন। কি করতে হবে আমায়।

বজ্র কন্ঠে আন্তরিকতা আর প্রভু ভক্তের স্বরে বলল জাররাদেব।

-জাররাদেব ! প্রচন্ড প্রতাপের সাথে বলতে লাগলো মালেকা হামেরীন।

-তুই কি জানিস! আমার মনে আজ কিসের ঝড়ে বইছে? আমার মন আজ কি কামনা করছে? আমার দুটো চোখদুটো আজ কি দেখতে চাইছে?

-না মহান সাম্রাঙ্গী হামেরীন। কি চাইছে আপনার মন !কি দেখতে চাইছে আপনার চোখ। শুধু একবার বলেন। সে যদি হয় কোন পাথরের পাহাড়ের ধ্বংসাবশেষ, তবে সেটা আমি এক গুতোতে গুড়ো করে আপনার পায়ে এনে ফেলব। সেটা যদি হয় কোন বিশাল দৈত্যের মাথা, আমি আমার এই দৈত্যের মাথা আমার এই তরবারীর এক আঘাতে কেটে আপনার হাতে এনে দেব।

- না জাররাদেব ।আমার এসব কিছুই চাইনা ।আমার দরকার রক্ত। স্রেফ এক বদমাশ মানুষের রক্ত।

- কেসে বদমাশ মানুষ ?কেসে? একবার শুধু মুখ থেকে ওর নাম বের করুন। আমি এক্ষুনি ওর এমন অবস্থা করছি যে, কোন দৈত্যদানবও ওর বিকৃত লাশ দেখে শিহরে উঠবে।

-তাহলে চল ।

হাতদুটো দিয়ে আবার জাদুর বিচ্ছুটাকে ঘুরাতে শুরু করলেন মালেকা হামেরীন। কিছুক্ষনের গুহা ছেড়ে মধ্যে নীল আকাশ দিয়ে পেঁচার বেশে উড়তে শুরু করলো হামেরীন আর জাররাদেব।

বেলা দুপুরে গড়াতেই রাজকন্যার দেশে পৌছলেন রাজকুমার তালেব। কিন্তু ততখনে পৌছে গেছে কুচক্রি হামেরীন আর জাররাদেব। অজ্ঞতা জাররাদেবের সাথে লড়তে হলো তালেবকে। কি ভয়ঙ্কর সে লড়াই। জাররাদেবের এক একটা থাবায় পুরো রাজপুরী কাঁপতে শুরু করলো। তালেব বুঝলেন শক্তিতে দানবটার সাথে পেরে উঠবেন না ওনি। তাই বুদ্ধি খাটালেন। তার তরবারী নিজের পিছনের মাটিতে গেড়ে দিলেন। তখন সামনের দিক থেকে লাফিয়ে আসছে জাররাদেব। কাছে এসে সে লাফিরে পড়তে গেল তালেবের উপরে। কিন্তু তালেব সরে গেল। আর তার পিছনে উল্টে করে বিধাঁনো তরবারীর আঘাতে মৃত্যু হলো জাররাদেবের।

কিন্তু তখুনি ঘটে গেল আরেক অঘটন। পেচাবেশী হামেরীন উড়ে রাজকন্যা তায়েবার গলায় ঝুলানো বিস্ময়করন তিনটি মুক্তাযেগুলো থাকলে কোন মানুষের উপর জাদু খাটেনা,সেগুলো কেড়ে নিল। আর তত্ক্ষনাত্ তার জাদু প্রয়োগ করে রাজকন্যাকে একটা পুতুলের সমান করে কাচের জাদুর কুঠুরিতে বন্দি করে ফেললেন। হা !হা ! করে হেসে উঠলো হামেরীন।

-তোকে আমি দুটা সুযোগ দিলাম তালেব। তুই হয়তো তায়েবাকে ভলে আমাকে ভালবাস আর নয়তো তিনমাসের মধ্যে এই তিনটা মুক্তা উদ্ধার করে রাজকন্যাকে বাঁচা। নয়তো আরও ছোট হতে হতে রাজকন্যা তায়েবার এমন অবস্থা হবে যে একটা কিটও ওকে খুব সহজেই খেয়ে ফেলতে পারবে।

বলেই আবার বিকটভাবে হেসে উঠলো হামেরীন। হাসতে হাসতেই উড়ে চলে গেল সে। কান্নার ঢল নামলো রাজপুরিতে।

পাঠকের মতামত:

১৪ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test