E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

টাঙ্গাইলের পথেঘাটে দীপ্তি ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া

২০২৫ এপ্রিল ২৮ ১৯:২০:৫৩
টাঙ্গাইলের পথেঘাটে দীপ্তি ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল : গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে যখন অতিষ্ঠ জনজীবন ঠিক তখনই বাহারি ফুলের পসরা সাজিয়ে অপার সৌন্দর্য ঢেলে দিচ্ছে প্রকৃতি। টাঙ্গাইলে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, সড়ক-মহাসড়কে দুপাশে কৃষ্ণচূড়া দীপ্তি ছড়াচ্ছে। যে দিকে দুচোখ যায় সেদিকেই বাহারি ফুলের সমারোহ। কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য প্রকৃতিতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। প্রচণ্ড গরমে স্বস্তি দিচ্ছে মৃদু বাতাস আর মনোমুগ্ধকর কৃষ্ণচূড়া গাছের ছায়া।

বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি আর বহু আন্দোলনের পটভূমির সাথে কৃষ্ণচূড়ার নিবিড় সম্পর্ক। বাংলা সাহিত্যের ছড়া-কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা রুপে প্রকাশ পেয়েছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যের বর্ণনা। গ্রীষ্মের শুরুতে প্রচন্ড তাপদাহেও একটু মন আন্দোলিত করে উঠে, প্রকৃতিও যেন প্রাণ ফিরে পায় কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে। রুক্ষতা ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে উজার করে আপন মহিমায়। এই গ্রীষ্মে শহর কিবা গ্রামের রুক্ষ প্রকৃতিকে ছাপিয়ে নতুন রুপে প্রকৃতির পরিচয় মেলে ধরে আমাদের চারপাশে দীপ্তি ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া। সবুজ চিরল পাতার ফাঁকে গাঢ় লাল রঙে আগুন জ্বেলে দিয়েছে কৃষ্ণচূড়া। গ্রীষ্মের ঘামঝরা দিনে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় ক্লান্ত, অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথিক পুলকিত নয়নে উপভোগ করেন এর সৌন্দর্য। পথচারীরা একবার হলেও থমকে দাঁড়ায়, কৃষ্ণচূড়ার রুপের ছটায় মনকে পুড়িয়ে নেয়।

কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় সাধারণত ১২ থেকে ১৫ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এটির ব্যাপ্তি বেশ প্রশ্বস্ত। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। মুকুল ধরার কিছু দিনের মধ্যে পুরো গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো বড় ৭ থেকে ৮টি পাপড়িযুক্ত গাঢ় লাল। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়ে থাকে।

পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ বাংলাদেশে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত।

কবিগুরু রবি ঠাকুরের ভাষায়- ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি’।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দুই লাইন মনোমুগ্ধকর গানে উপলব্ধি সৌন্দর্য। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’। ‘রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে/পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা ডেকে ওঠে পাপিয়া।’

তবে ক্রমে ক্রমে বাড়ছে কৃষ্ণচূড়া গাছের কদর। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শোভাবর্ধনে কৃষ্ণচূড়া গাছ অতুলনীয়। তাই সৌন্দর্য্যর পাশাপাশি মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থেই বেশি করে কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রকৃতিপ্রেমীরা।

কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ। ‘গুলমোহর’ নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো গাঢ় লাল রঙের হয়। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়।

(এসএম/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test