E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

‘গাছবাড়ি’র গল্প

২০২৫ মার্চ ০৬ ১৮:৩৯:২৮
‘গাছবাড়ি’র গল্প

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : যেন গাছের গবেষণাগার। বিশাল আঙিনায় শোভা পাচ্ছে বৈচিত্রময় ও দুর্লভ সব গাছ। সৌন্দয্যবর্ধক গাছগুলো নান্দনিক সাজে গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া ফলদ, বনদ, ঔষধী বৃক্ষও রয়েছে এখানে। জাপান, ফ্রান্স, ইতালি, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গাছ নিয়ে এসে রোপন করা হয়েছে বাড়িটির আঙ্গিনায়। ছেঁটে রাখা হয়েছে ফুল-ফলের গাছগুলো। দেওয়া হয়েছে চেয়ার, ডাইনিং টেবিল,ঘোড়া সহ নানা আকৃতি। গাছে গাছে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। বাড়িজুড়ে সারাক্ষণ পাখির কলরব। এলাকাবাসী বাড়িটির নাম দিয়েছে ‘গাছবাড়ি’। 

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণদিয়া গ্রামে গেলে দেখা মিলবে এ গাছের সংগ্রহশালার। শখ ও বিলুপ্তপ্রায় গাছ সংগ্রহে রেখে গাছের গবেষণাগার তৈরির লক্ষে দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি তৈরি করেছেন সূচিশিল্পী আমিনুল ইসলাম। পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকলেও তাঁর মন পড়ে থাকে সবুজেঘেরা গ্রামের এই বাড়িতে। ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মিত বাড়ির সামনে ও আশপাশে দেশি-বিদেশি ৫’শ প্রজাতির প্রায় ১০ হাজার গাছ রয়েছে। বাড়িটি আশপাশের কয়েক জেলার মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

প্রকৃতি প্রেমিক আমিনুল ইসলাম রোপণ করেছেন বিদেশি প্রজাতির ক্যাসিয়া, উইসটেরিয়া, কিগেলিয়া আমাজন লিলি সহ দুর্লভ সব গাছ। বাড়ির দেয়ালও আচ্ছাদিত ছিল ‘ওয়াল কার্পেট’ নামের এক ধরনের লতায়। তবে তা বেয়ে সাপ ঘরে ওটার ঘটনার পর লতাটি সম্প্রতি তুলে ফেলেছেন আমিনুল ইসলাম।

জানা যায়, গাছের সংগ্রহশালা করতে বাবার দেওয়া জমির সঙ্গে কিছু জমি কেনেন আমিনুল ইসলাম। ১৫ বিঘা জমির ২০১৪ সালে তৈরি করা হয় এই বাড়িটি। তৈরি করেন গাছের সংগ্রহশালা। দেশ-বিদেশ থেকে গাছ পছন্দ করে নিয়ে আসেন। এরপর এই সংগ্রহশালায় লাগিয়ে বড় করে তোলেন। প্রতি মাসেই বাড়ছে এই গাছের সংখ্যা। ঢাকা থেকে প্রতি মাসে বাড়িতে আসেন আমিনুল, সঙ্গে নিয়ে আসেন নানা প্রজাতির গাছ। গাছবাড়িতে যেমন রয়েছে মূল্যবান গাছ, তেমনি রয়েছে দেশীয় ষড়াসহ নানা গাছ। যে গাছটি জঙ্গলে হয়ে থাকে, সেই গাছটিও তিনি এই বাড়িতে লাগিয়ে সুন্দর করে রাখেন। জীবনে যা আয় করেছেন তার বেশি পরিমাণ ব্যয় করেছেন এই গাছের সংগ্রহশালা তৈরিতে। গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণেও রয়েছে ৩জন কর্মচারী।

গাছবাড়ির মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখেছি আমার মা-বাবা ও ভাইদের দেখেছি বাড়ির আাঙিনায় গাছ লাগাতে। তখন থেকেই গাছের প্রতি ভালবাসা জন্মে। গাছপালা ও বন উজার হয়ে যাওয়া আমাকে অনেক পীড়া দেয়। ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে বিলুপ্ত গাছের পরিচয় ও গাছের গবেষণাগার তৈরির চিন্তা মাথায় নিয়েই এমন উদ্যেগ নিয়েছি। গাছের ফুল ফলের কারণে প্রতিদিনই এই বাড়িটিতে বিভিন্ন প্রজাতির শত শত পাখি আসে। গাছের বিভিন্ন ফল পাখিরাই খায়। এছাড়াও নিজ উদ্যেগে প্রতিদিনি সকাল ও বিকালে পাখিগুলোকে খাবার দিই। এগুলো মনের খোরাক মেটায়। ভবিষ্যত প্রজন্ম যদি এসব বিলুপ্তপ্রায় গাছ নিয়ে গবেষণা করতে চাই তবে আমার এই সংগ্রহশালা তাদের কাজে লাগতে পারে।’

(এসআই/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৯ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test