যে গ্রামে যুগ যুগ ধরে তৈরি হয় কুমড়ো বড়ি
স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : শীতের সকাল। সূর্য উঠার আগেই শহর থেকে ঘণ্টাখানিকের পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে হাকোবা নামক গ্রামে। দেশের বৃহৎ উপজেলা মনিরামপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম হাকোবা। এই গ্রামে যুগ যুগ ধরে কুমড়ো বড়ির সাথে সুপরিচিত মানুষ। কুমড়ো বড়ির সাদা রং আর এই গ্রামের কুন্ডুবাড়ির বধুদের হাতের সাদা সাকা সোনালী আলোয় মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। শীতের মৌসুমে এই গ্রাম জুড়ে কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম পড়ে।
লক্ষী রাণী হাকোবার একজন বয়স্ক নারী। শীতের সকালে কুয়াশার চাদরে যখন চারদিক আচ্ছাদিত তখন ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনের কাজকর্ম সেরে বসে যান বাড়ির ছাঁদে। পাত্রে কুমড়ো, কলই মিশাতে থাকেন। অবশ্য বাড়িতে থাকা ডাল ভাঙা মেশিনে কুমড়োর জন্য নির্ধারিত ডাল ভেঙে নিয়েছেন তিনি। আস্তে আস্তে গাছপালা-ঘাসের উপরে পড়ে থাকা বিন্দু বিন্দু শিশির কণা সূর্যের আলোতে ঝলমল করতে শুরু করে। ডাল কুমড়ো মিশানোর কাজ শেষ হতে থাকে। শুরু হয় নির্ধারিত কাপড়ে হাতের সাহায্যে বড়ি তৈরির কাজ। এই কাজে লক্ষী রাণীর সাথে সাহায্য করেন পরিবারের অন্যান্য লোকজন।
অঙ্কিতা কুন্ডু লক্ষী রাণীর ছেলের মেয়ে। সম্পর্কে তারা ঠাকুমা-পুতনি। মনিরামপুরের আদর্শ সম্মিলনী স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ভোরবেলা ঠাকুমার পাশে বসে বসে সেও কুমড়ো বড়ি তৈরি করছে।
পাশের একটা বাড়ির ছাদে দেখা গেল কুমড়ো বড়ি তৈরি করছেন স্মৃতি কুন্ডু। সাথে তার ছেলে ও ছেলের বউ এই কাজে তাকে সাহায্য করেন। পাশের অন্য একটি ছাদে গানের সুরে তাল মিলিয়ে কুমড়োর বড়ি তৈরির কাজ করেন মধুসূদন কুন্ডু।
শুধু লক্ষী, অঙ্কিতা বা মধুসূদন নয়, এই গ্রামের শতাধিক মানুষ এই কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজের সাথে জড়িত। তবে, তৈরিকৃত বড়ি তারা শুধু নিজেদের খাওয়ার কাজে ব্যবহার করেন এমনটা নয়। বরং বাণিজ্যিকভাবে তৈরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের তৈরি কুমড়ো বড়ি দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় হয়। ফলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।
কথা হয় বেশ কয়েকজনের সাথে। তাদের মধ্যে স্মৃতি কুন্ডু বলেন, শ্বশুরবাড়িতে আসার পর থেকে কুমড়ো বড়ির সাথে পরিচিত তিনি। তার শ্বাশুড়ির কাছ থেকে শিখেছেন। প্রায় ৪০ বছর এই কাজ করছেন। শীতের মৌসুমে কাজের চাপ বাড়ে। প্রতিদিন সকালে ২০ থেকে ৩০ কেজি ডালের কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন তিনি। আগে বড়ি তৈরির মালামালের দাম কম ছিলো। এখন সব জিনিসের দাম বাড়ার কারণে লাভের পরিমান কমেছে।
লক্ষী রাণী বলেন, আমার বয়স ৮০ বছর। অল্প বয়সে বিয়ে হয়। ৬০ বছর ধরে এই কাজ করছি। অনেকজন কুমড়োর বড়ি বানাতে কুমড়ো ব্যবহার করে না। কুমড়ো ব্যবহার না করলে বড়ি ভালো হয় না। আমাদের তৈরি বড়ি দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়।
অঙ্কিতা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি আমি আমার পরিবারকে সাহায্য করি। এই কাজের মাধ্যমে আমি আনন্দ পাই।
মধুসূদন কুন্ডু বলেন, এই কাজ করেই আমি টিকে আছি। অনেক ঋণ ছিলাম। যখন থেকে কুমড়োর বড়ি তৈরির ব্যবসা শুরু করেছি, তখন থেকে অভাব কেটে গেছে।
মনিরামপুর বাজারে উত্তম কুমার নামে পাইকারি ও খুচরা কুমড়ো বড়ি বিক্রেতা বলেন, শীতের মৌসুমে কুমড়ো বড়ির চাহিদা বাড়ে। কুমড়ো বাদে তৈরি বড়ি ৩০০ টাকা কেজি। কুমড়োসহ ৩৫০ টাকা। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কেজি কুমড়ো বড়ি বিক্রি করেন তিনি।
যশোর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে কাঁচামালের গুণাগণ মান বজায় রেখে কুমড়ো বড়ির তৈরির বিষয়ে আমরা আগামিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আমরা চাই তারা সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠবে এবং কুমড়ো বড়ি রপ্তানি করে নিজেরা সাবলম্বী হওয়ার সাথে সাথে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।#
(এসএ/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- শীতকাল কেন বিয়ের মৌসুম
- ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে রেলওয়ের সতর্কতা
- পাঠ্যবইয়ে র্যাপার হান্নান ও সেজান
- মেয়াদ বাড়ল ছয় সংস্কার কমিশনের
- সাকিবের জন্য ‘আবার চেষ্টা’ করবে বিসিবি
- মহম্মদপুরে কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ
- ‘সবাই মিলে প্রিয় বাংলাদেশকে সাজাতে চাই’
- ‘মিডিয়াকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে’
- শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে ঈশ্বরদীতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ
- ‘দেশে যেন কখনোই ফ্যাসিবাদ ফিরতে না পারে’
- ‘বিগত সরকার ভারতের স্বার্থরক্ষায় বেশি ব্যস্ত ছিল’
- পঞ্চগড়ে তারুণ্যের উৎসব
- পদ্মার চর থেকে বালু লুটের ‘মহোৎসব’
- নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা শাওন হত্যার আসামি ডিবির সাবেক এসআই কনক গ্রেফতার
- ‘গুপ্ত নয়, ৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর ছাত্রশিবিরের সম্মেলন হয়েছে’
- ৪২ লাখ টাকায়ও মুক্তি মেলেনি আসাদের
- রাজবাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি
- বইয়ের চাহিদা ৬ লাখ ৬৯ হাজার ১২২টি, পাওয়া গেছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯২টি
- কাপ্তাই ক্লাব কর্তৃক শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ
- ৪০৭ শতাংশ জমিতে অবৈধ স্থাপনা ৬৪৮
- রাজশাহীকে হারিয়ে প্রথম জয় চিটাগং কিংসের
- ধর্ষণের বিচার না পেয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
- শীতে জবুথবু উত্তরাঞ্চলের জনজীবন
- শরীয়তপু্রে পুনাকের উদ্যোগে অসহায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
- ‘আমরা গণতন্ত্রের কথা বললেও গণতন্ত্র চর্চা করি না’
- আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সমীপে [পর্ব : চার]
- আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সমীপে [পর্ব : দুই]
- শ্বশুরবাড়ির দরিদ্র মানুষকে তিন মাস খাওয়ানোর উদ্যোগ
- ভোলা সদর আসনে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হেমায়েত উদ্দিন
- ঝালকাঠি-২ আসনে আমির হোসেন আমুর গণসংযোগ
- পা হারানো রাসেলকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ
- ভোলায় ঈগলের প্রচারণায় নেমে নৌকার সমর্থকের ওপর হামলা
- শুধু টাকার দিকে মনোযোগী নন মেসি, চাই অন্য কিছু!
- বড়াইগ্রামে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত
- অবশেষে পুলিশে চাকরি পেলো অদম্য প্রমিতা
- 'রাজশাহীতে মুক্তিবাহিনী হঠাৎ পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে'
- 'রাজশাহীতে মুক্তিবাহিনী হঠাৎ পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে'
- বিএডিসি'তে চাকুরির শুরু থেকে দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে মাহবুবা বেগমের রামরাজত্ব!
- বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই'র পাশে থাকবে জাতীয় প্রেসক্লাব : আইয়ুব ভুঁইয়া
- গৌরনদী টোয়েন্টিফোর ডটকমের যুগপূর্তি উদযাপন
- আমনের বাম্পার ফলন, ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব
- নয়াবাদ মসজিদে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভীড়
- অবৈধপথে দেশে ফেরার সময় সাতক্ষীরা সীমান্তে ৮ বাংলাদেশী আটক
- ৬ মাসেও হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় শঙ্কিত বাদিপক্ষ!
- তোমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম যে ব্যক্তিটি খুনি মোশতাককে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তিনি মাওলানা হামিদ খান ভাসানী, যাকে তুমি পিতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতে