E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ঐতিহ্যের প্রতীক শ্রীমঙ্গলের চা কন্যা ভাষ্কর্য

২০২৪ অক্টোবর ২৩ ১৯:২৮:৩৪
ঐতিহ্যের প্রতীক শ্রীমঙ্গলের চা কন্যা ভাষ্কর্য

মো: আল-আমিন, শ্রীমঙ্গল : শ্রীমঙ্গল বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার একটি চা বাগান সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে অবস্থিত একটি বিশেষ ভাষ্কর্য হল চা কন্যা, যা শ্রীমঙ্গলের চা শিল্পের প্রতীকী প্রতিচ্ছবি হিসেবে পরিচিত। এই ভাষ্কর্যটি স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।

শ্রীমঙ্গলের চা কন্যা ভাষ্কর্যটি একটি নারীর মূর্তি, যিনি মাথার ওপর চা পাতার ঝুড়ি বহন করছেন। এটি মূলত চা শ্রমিকদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে, যারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। চা শিল্প শ্রীমঙ্গলের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির মূল স্তম্ভ, এবং চা কন্যা ভাষ্কর্য সেই ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

চা-কন্যাদের হাতে সংগ্রহ হওয়া পাতা ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর এগুলো মেশিনে প্রক্রিয়াজাত করে পাঠানো হয় বিক্রির জন্য ওয়্যার হাউজে। বাগানে চা-কন্যাদের শ্রমের ওপর ভর করেই দেশ অর্জন করছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। তাই চা কন্যারা হচ্ছেন দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীক। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বড় অবদান রয়েছে এই চা-কন্যাদের।

তাই চা-কন্যাদের স্মরণীয় করে রাখতে সাতগাঁও চা-বাগানের অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কে হবিগঞ্জ জেলার শেষ সীমান্তে এবং মৌলভীবাজার জেলার প্রবেশদ্বারের ঠিক মাঝামাঝি স্থানে নির্মিত চা-কন্যার ভাস্কর্য মুগ্ধ করছে পর্যটকদের। নতুন কোনো আগন্তুক এই ভাস্কর্যের পাদদেশে এলে একটু থমকে দাঁড়ান। মুগ্ধ নয়নে অপলক ভাস্কর্যটি দেখেন।

চা কন্যা ভাষ্কর্যটি আধুনিক শিল্পকলা ও ঐতিহ্যবাহী নকশার সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। চা শ্রমিক নারীদের প্রতিদিনের জীবনের চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাষ্কর্যের মূর্তিটি শ্রীমঙ্গলে প্রবেশদ্বারের কাছাকাছি অবস্থানে স্থাপন করা হয়েছে।

চা কন্যা ভাষ্কর্য পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে আকর্ষণীয়, কারণ এটি শুধুমাত্র একটি ভাষ্কর্য নয় বরং শ্রীমঙ্গলের চা বাগানের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে জড়িত। এখানে আসা পর্যটকরা চা বাগানের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন এবং চা শিল্পের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন। অনেক পর্যটক চা কন্যা ভাষ্কর্যটি দেখার পর আশেপাশের চা বাগানে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন, যা তাদের একটি অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির প্রকৌশলী সঞ্জিত রায়ের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় দীর্ঘ তিন মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে নির্মিত এই ভাস্কর্য মন কেড়ে নিচ্ছে পথচারীদের। প্রায় ২৪ ফুট উঁচু এই ভাস্কর্যটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নারী চা শ্রমিকের কোমল হাতে চা পাতা চয়নের মনোমুগ্ধকর এক নিপুণ প্রতিচ্ছবি।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষদিকে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে এ ভাস্কর্যটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। সড়কপথে ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে যেতে পাহাড় ও চা বাগানের বুক চিরে আঁকাবাঁকা পথ ধরে বয়ে গেছে ঢাকা-সিলেট পুরানো মহাসড়ক। হবিগঞ্জের সীমানা পেরিয়ে আসতে থাকে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল। দুই জেলার সংযোগস্থলে রয়েছে মুছাই এলাকা। পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত শ্রীমঙ্গলের প্রবেশদ্বারেই অপরূপ সাজে সজ্জিত এই চা কন্যার ভাস্কর্য।
সড়কপথে ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে যেতে পাহাড় ও চা-বাগানের বুক চিরে আঁকাবাঁকা পথ ধরে বয়ে গেছে ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়ক। হবিগঞ্জের সীমানা পেরিয়ে তারপর মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল। দুই জেলার সংযোগস্থলে রয়েছে মুছাই এলাকা। পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত শ্রীমঙ্গলের প্রবেশদ্বারেই অপরূপ সাজে সজ্জিত এই চা কন্যার ভাস্কর্য।

(এএ/এসপি/অক্টোবর ২৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test