ঈদুল আযহা : ত্যাগ, সংহতি ও সম্প্রীতির এক মহামিলন

ওয়াজেদুর রহমান কনক
বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে ঈদুল আযহা একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। কোরবানির ঈদ হিসেবে পরিচিত এই উৎসবটি শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঈদুল আযহার প্রস্তুতি শুরু হয় অনেক আগে থেকেই, এবং এটি মানুষের জীবনে এক নতুন উত্তেজনা ও আনন্দ নিয়ে আসে।
ঈদের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই কোরবানির পশু কেনার তোড়জোড় শুরু হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি শহর, মফস্বল এবং গ্রামের হাটে হাটে তখন জমে উঠে বিশাল পশুর মেলা। গরু, ছাগল, ভেড়া, এবং কখনো কখনো উটও থাকে এই মেলায়। প্রত্যেকটি পশু বেছে নিতে হয় খুব যত্ন সহকারে, কারণ এটিই হবে আল্লাহর প্রতি ত্যাগের নিদর্শন। পশু কেনার এই প্রক্রিয়াটি অনেকটা উৎসবের মতই। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা উল্লাসে মেতে থাকে, তাদের চোখে মুখে থাকে এক অনির্বচনীয় আনন্দ।
পশু কেনার পরেই শুরু হয় আরেক প্রস্তুতি। বাড়ির সামনে বা পাড়ার কোন খোলা জায়গায় পশু রাখার ব্যবস্থা করতে হয়। পশুর যত্ন নেওয়া, তার খাদ্য-খাবার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, সবকিছুই যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে ছোটরা এই সময়ে খুবই ব্যস্ত থাকে তাদের নতুন সঙ্গীর দেখাশোনায়।
ঈদের দিনটি ঘনিয়ে আসলে প্রস্তুতি আরও তীব্র হয়। ঈদের আগের রাতটি “চাঁদ রাত” হিসেবে পরিচিত, এবং এই রাতে আনন্দ যেন আরও বেড়ে যায়। মহিলারা মেহেদি পরেন, নতুন পোশাক, নতুন জুতা কেনা হয়, আর পুরুষরা ব্যস্ত থাকেন ঈদের নামাজের জন্য কাপড়-চোপড় প্রস্তুত করতে।
ঈদের দিন ভোরে সবাই ফজরের নামাজের পরেই প্রস্তুত হয়ে যান। পুরুষরা ঈদের জামাতে যোগ দেন, এবং সেখানে ঈদের বিশেষ খুৎবা শুনেন। নামাজ শেষে সকলে মিলে কোলাকুলি করে একে অপরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। এরপরই শুরু হয় কোরবানির কাজ।
কোরবানির কাজটি অত্যন্ত যত্ন সহকারে এবং ইসলামিক বিধান মেনে করা হয়। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়—এক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য, এবং এক ভাগ গরীব-দুঃখীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য। এই প্রক্রিয়াটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ঈদুল আযহা শুধু কোরবানির মাধ্যমে ধর্মীয় দায়িত্ব পালন নয়, এটি মানুষের মধ্যে আত্মত্যাগ, সহযোগিতা ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে থাকে। পুরো উৎসবটি এক বিশাল আয়োজনের মত, যেখানে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার সাথে সাথে পারিবারিক এবং সামাজিক বন্ধনও দৃঢ় হয়।
বাংলাদেশের মানুষেরা এভাবেই ঈদুল আযহা উদযাপন করে, যেখানে আনন্দ, উৎসাহ এবং মানবতার এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে।
বাংলাদেশে ঈদুল আযহার উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি ও কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতে গেলে আমাদের গ্রামীণ এবং শহুরে জীবনের বৈচিত্র্য লক্ষ্য করতে হবে। ঈদের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই বিভিন্ন শহর এবং গ্রামে পশুর হাট বসতে শুরু করে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা—প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এক নতুন উত্তেজনা কাজ করে। হাটের দিকে যাত্রা করা মানুষের কোলাহল, গরুর গলায় ঘণ্টার ঝনঝনানি, বিক্রেতার হাঁকডাক—সব মিলিয়ে এক জমজমাট পরিবেশ তৈরি হয়।
গ্রামের দিকে হাটগুলোতে যেন উৎসবের আমেজ। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা গরু, ছাগল, ভেড়া, এবং উট পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির পশু দেখতে মানুষের ভিড় জমে। বাচ্চারা একে অপরের সাথে নিজেদের পছন্দের পশু নিয়ে আলোচনা করে, আর বড়রা বেছে বেছে সেরা পশুটি কিনতে চান। এই সময় পশু বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতারা পশুর স্বাস্থ্য, বয়স, ওজন ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করেন।
শহরের দিকে আবার ভিন্ন দৃশ্য। এখানে বাসিন্দারা অনলাইনে কোরবানির পশু কিনতে শুরু করেছেন, বিশেষত যারা সময় এবং ভিড়ের কারণে হাটে যেতে পারেন না। অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে পশুর ছবি, বয়স, ওজন, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়, যা ক্রেতাদের জন্য ক্রয় প্রক্রিয়াটি সহজ করে তোলে।
পশু কেনার পর, বাড়ির সামনে বা পাড়ার কোনো খোলা জায়গায় পশু রাখার ব্যবস্থা করতে হয়। অনেকেই পশুর জন্য বিশেষভাবে জায়গা তৈরি করেন, যেখানে পশুর আরামদায়ক থাকা নিশ্চিত করা হয়। পশুর যত্ন নেওয়া, তাকে খাওয়ানো, পরিষ্কার রাখা—সবকিছুই যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে ছোটরা এই সময়ে খুবই ব্যস্ত থাকে তাদের নতুন সঙ্গীর দেখাশোনায়।
ঈদের আগের রাতটি “চাঁদ রাত” হিসেবে পরিচিত, এবং এই রাতে আনন্দ যেন আরও বেড়ে যায়। মহিলারা মেহেদি পরেন, নতুন পোশাক, নতুন জুতা কেনা হয়, আর পুরুষরা ব্যস্ত থাকেন ঈদের নামাজের জন্য কাপড়-চোপড় প্রস্তুত করতে। মার্কেটগুলোতে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়।
ঈদের দিন ভোরে সবাই ফজরের নামাজের পরেই প্রস্তুত হয়ে যান। পুরুষরা ঈদের জামাতে যোগ দেন, এবং সেখানে ঈদের বিশেষ খুৎবা শুনেন। নামাজ শেষে সকলে মিলে কোলাকুলি করে একে অপরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। এরপরই শুরু হয় কোরবানির কাজ।
কোরবানির কাজটি অত্যন্ত যত্ন সহকারে এবং ইসলামিক বিধান মেনে করা হয়। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়—এক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য, এবং এক ভাগ গরীব-দুঃখীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য। এই প্রক্রিয়াটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ঈদের পরের দিনগুলোতেও কোরবানির মাংস বিতরণ, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত, এবং বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম চলতে থাকে। এসময় সবাই মিলে কোরবানির মাংস দিয়ে নানা রকম সুস্বাদু খাবার তৈরি করেন—কাবাব, বিরিয়ানি, ভুনা, কোরমা, পায়া, এবং আরও কত কী! এই সব খাবার একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে খাওয়া হয়, যা সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
ঈদুল আযহার এই আনন্দময় প্রস্তুতি এবং উদযাপন প্রক্রিয়া শুধু ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, এটি মানুষের মধ্যে আত্মত্যাগ, সহযোগিতা এবং সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে থাকে। পুরো উৎসবটি এক বিশাল আয়োজনের মত, যেখানে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার সাথে সাথে পারিবারিক এবং সামাজিক বন্ধনও দৃঢ় হয়।
বাংলাদেশের মানুষেরা এভাবেই ঈদুল আযহা উদযাপন করে, যেখানে আনন্দ, উৎসাহ এবং মানবতার এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে।
(ওআরকে/এএস/জুন ১৪, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- ছোটপর্দায় আজকের ঈদ আয়োজন
- ঈদ আনন্দে সামিল হলেন রোনালদোও
- ঈদে ট্রেনের ফিরতি যাত্রা শুরু ২ এপ্রিল
- ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে’
- জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপি নেতাদের শ্রদ্ধা
- ‘ফ্যাসিস্টমুক্ত নতুন বাংলাদেশে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা’
- বিশ্ববাজারে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম
- কারাগারে ‘মলিন’ ঈদ দাপুটে আ.লীগ নেতাদের
- সালথার বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
- খালেদা জিয়া এপ্রিলে দেশে আসছেন : মিল্লাত
- দিনাজপুরে দেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদ জামাত
- পাংশাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ইউএনও এসএম আবু দারদা
- ঢাকার রাস্তায় বর্ণাঢ্য ঈদ আনন্দ মিছিল
- পুতিনের ওপর ‘খুব রেগে’ আছেন ট্রাম্প
- ‘যত বাধাই আসুক ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়বই’
- রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে হতাহত ৩৭
- মহম্মদপুরে ‘নবমতি পদক প্রদান’ ও ‘এই দেশে এক জুলাই এসেছিল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
- ২ সহস্রাধিক মানুষের মাঝে বিএনপি নেতা হাবিবের ঈদ উপহার প্রদান
- নড়াইলে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ১ জন নিহত, আহত ৪
- চট্টগ্রামে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
- জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
- বিএনপি নেতার উদ্যোগে দরিদ্রদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ
- দিনাজপুর শহর শত্রুমুক্ত হয়
- ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ
- ৯ বছর পর সিরিজ জিতল পাকিস্তান
- মহাকুম্ভ
- পলাশবাড়ীতে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত
- আওয়ামী লীগ থেকে অন্য দলগুলো কী শিক্ষা গ্রহণ করবে?
- মহম্মদপুরে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান
- পাংশা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জনবল সংকটে দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত
- সাংবাদিকদের নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদলেন হাজী মুজিব
- যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ উপদেষ্টা-গভর্নরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত
- আগৈলঝাড়ায় সাড়ে ৬ হাজার কিশোরীর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শুরু
- ১৬ বছর পর আজ নতুন সভাপতি পাচ্ছে বাফুফে
- কেটে গেলো নিষেধাজ্ঞা, ফের অধিনায়ক হতে পারবেন ওয়ার্নার
- নিউ ইয়র্কে চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ, পরিকল্পিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান
- প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর
- ‘বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, দলটি নিশ্চিতভাবে বঙ্গোপসাগরে ডুববে’
- ডিমের পর বাজার গরম পেঁয়াজের
- পাকহানাদার বাহিনী শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে
- তুলসী গ্যাবার্ড’র বক্তব্য সঠিক এবং সত্য
- রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে বন্ধ ‘বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা’
- ২০৩১ সালের পর শুরু হবে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম
- বাগেরহাটে ছেলের হত্যাকারীর বিচার চেয়ে মায়ের আকুতি