১৩ বছর ধরে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যাচ্ছেন ১১৫ বছর বয়সী অন্ধ রহমান
অমর ডি কস্তা, নাটোর : ১১৫ বছর বয়স তার। নাম আব্দুর রহমান মোল্লা। বয়সের ভাড়ে কাঁপা গলায় কথা বললেও মসজিদের মাইকে আযান দেওয়ার সময় সেই আযানের ধ্বনিতে খুঁজে পাওয়া যায় না তার আসল বয়সটা। লাঠিতে ভর করে হাঁটে সে। লাঠির মাধ্যমে পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে সে। গ্রামের মসজিদে গিয়ে নিয়মিত আযান দেওয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার জন্য পথ ঠিকই তৈরি করে নেন দৃষ্টিহীন আব্দুর রহমান মোল্লা। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ বেঁধে ও দড়ি টেনে নেন তিনি। এরপর সে বাঁশ ও দড়ি ধরে ধরে ও বেয়ে বেয়ে মসজিদে যান। মাইক চালিয়ে আযান দেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতিও করেন তিনি। এভাবেই চলছে দীর্ঘ ১৩ বছর।
মুয়াজ্জিন আব্দুর রহমান মোল্লা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামের সবচাইতে প্রবীণ ব্যক্তি। প্রায় ১৯ বছর আগে এক দুর্ঘটনায় তিনি তার দুই চোখের দৃষ্টি হারান। তার পরিবারে রয়েছে দুই স্ত্রী ও ২৫ জন ছেলে-মেয়ে। তাদের মধ্যে ৬ সন্তান মারা গেছে এবং বর্তমানে তার ১০ মেয়ে, ৯ ছেলে ও দুই স্ত্রী বেঁচে রয়েছেন। সকল সন্তানদেরই প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। করিয়েছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। তাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে শিক্ষক, কৃষি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, সৈনিক, ব্যবসায়ী এবং গেরস্তের কাজ করেন এমনও রয়েছে। অন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ২০১১ সালে তিনি পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন। হজ্ব পালন করে আসার পর নিজ গ্রামে নিজস্ব পাঁচ শতাংশ জমির ওপর তিনি তৈরি করেন একটি পাকা মসজিদ। ছেলে-নাতিন, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের মানুষদের নিয়ে ওই মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করেন। ২০১১ সালেই তিনি বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ ও দড়ি টেনে নেন যাতে তা বেয়ে বেয়ে নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত করতে পারেন। তিনি তখন থেকেই ওই মসজিদের অবৈতনিক মুয়াজ্জিন হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আব্দুর রহমান মোল্লা’র ছেলে আলহাজ্ব মো. শফিকুল ইসলাম সাইফুল (মাস্টার) বলেন, ২০০৫ সালে একটি দুর্ঘটনায় আমার বাবা অন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ বছর বিভিন্ন জায়গায় বাবাকে চিকিৎসা করানোর পরেও বাবার চোখে আলো ফিরিয়ে আনতে পারি নাই। পরে ২০১১ সালে বাবাকে নিয়ে হজ্বব্রত পালন করতে যাই। হজ্ব পালন শেষে বাবা গ্রামেই একটি মসজিদ স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বসত বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে নিজস্ব জমিতে মসজিদ স্থাপন করার পর সেখানেই বাবা মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সেখানেই আদায় করেন। বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে বাড়ি থেকে বাঁশ ও দড়ি টেনে দেওয়া হয় মসজিদ পর্যন্ত। প্রথমে প্রায় ১৫ দিন ছেলে ও নাতিরা বাঁশ ও দড়ি দেখিয়ে দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তাকে। পরে বাঁশ কিংবা দড়ি খুঁজে পাওয়ার জন্য হাতে একটি লাঠিও দেওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি নিজেই রাস্তা পার হয়ে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে নিয়মিত যাতায়াত করে আসছেন।
আরেক ছেলে রফিকুল ইসলাম (মাস্টার) বলেন, আমার বাবার বয়স চলছে ১১৫ বছর। এই বয়সে এসেও অন্ধ হয়ে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আযান দেন এবং নামাজ আদায় করেন। বাবার এমন মহৎ কাজে আমরা পরিবারের সকলেই অনেক খুশি। আমরা সকল ভাই-বোন বাবাকে নেয়ে গর্ববোধ করি।
দৃষ্টিহীন মুয়াজ্জিন আলহাজ্ব মো. আব্দুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাক আমাকে এখনও অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক রেখেছেন। মহান আল্লাহ আমার ইচ্ছে পূরণ করেছেন’। তিনি জানান, বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যেতে তার খারাপ লাগে না। যদিও রাস্তা পারাপারের সময় ঝুঁকি থাকে তারপরেও তিনি বিশ্বাস করেন আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজতেই তার গন্তব্যে পৌঁছে দিবেন। বাকি জীবন তিনি এভাবেই ইসলামের পথে থেকেই মৃত্যুবরণ করতে চান। তিনি সকল মুসলমানদের নামাজের দাওয়াতও দিয়েছেন।
নগর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা সাহেব জানান, আলহাজ্ব মো. আব্দুর রহমান মোল্লা ১১৫ বছর বয়সে এসে এবং অন্ধ হিসেবে প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে তার মানসিক দৃষ্টি সচল ও মনোবল দৃঢ় রেখেছেন তাতে মহান আল্লাহ পাকের অশেষ ও বিশেষ কৃপা রয়েছে। তার এই অদ্যম শক্তি দেখে এবং তা উপলদ্ধি করে অনেকেই ইসলামী জীবন যাপনে অনুপ্রাণিত হবে নিশ্চয়ই।
(এডিকে/এসপি/মে ১৮, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- নির্ভীক এর মোড়ক উন্মোচন করলেন ওবায়দুল কাদের
- ফরিদপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব শুরু হচ্ছ বৃহস্পতিবার
- ফরিদপুরে নিরাপদ খাদ্য সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি বিষয়ক কর্মশালা
- ফরিদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে ক্যাবের মতবিনিময়
- কানাইপুরে বিসিক শিল্প নগরীর ২ তলা অফিসে নিয়মিত অফিস করেন মাত্র ১ জন কর্মচারী
- ‘শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো’
- ভৈরবে চাউলের আড়তে পাটের বস্তা ব্যবহার না করায় ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
- সাভারে বাড়ি নির্মাণে চাঁদা দাবির অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
- কুলিয়ারচরে দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা
- ‘গঙ্গা-তিস্তা নিয়ে প্রশ্নটা ভারত সরকারকে করলে ভালো হয়’
- এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন র্যাঙ্কিংয়ে সাকিব
- আইএমএফকে ৫০ বিষয়ে উন্নতির প্রতিশ্রুতি সরকারের
- ‘রাশিয়া-চীনসহ উন্নত দেশগুলো থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় চলমান রয়েছে’
- নগরকান্দায় বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে নিহত ১
- গ্যাস বাবুকে নিয়ে অভিযান, কিছুই পায়নি পুলিশ
- সালথায় নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়
- শুদ্ধাচার পুরস্কার পেলেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক
- মাগুরার শিশু শিল্পী পার্বণ দে’র কন্ঠে সুরের জাদু
- সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে শেখ হাসিনার অবদান ও বিএনপির মিথ্যাচার
- গোপালগঞ্জে বন্দোবস্তের জমি পেতে ভূমিহীনদের মানববন্ধন
- ঈশ্বরদীতে কিশোর তপু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ
- আনার হত্যায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না: হারুন
- ‘সরকার অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে’
- হেলিকপ্টারে উড়ে ঝিনাইদহে ডিবি হারুনের দল, ফোন উদ্ধার অভিযান
- গাজীপুরে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
- খুলনায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে ট্রাক শ্রমিকরা
- সালথায় বেতন বৃদ্ধি ও চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে মানববন্ধন
- বালিয়াকান্দিতে প্রভাষকের বিরুদ্ধে স্টিলের পাইপ দিয়ে বিধবাকে মারধরের অভিযোগ
- জাতির পিতার সমাধিতে কেন্দ্রীয় আ.লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শ্রদ্ধা
- তুরস্কে ভয়াবহ দাবানল, নিহত অন্তত ১২
- ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে যমুনা পাড়ের মানুষ
- গাজায় পানি ব্যবস্থার নাকাল দশা পঙ্গু করছে অসুস্থ শিশুদের
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের ছুটি মিলবে না জুলাইয়ে
- পীযূষ সিকদার’র কবিতা
- সোনাইমুড়ীতে নারীর কাছে মিলল ১১৪ পিস ইয়াবা
- স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
- সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে বাবা-ছেলের মৃত্যু
- আফসিরের নেছা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেলো ৫ শিক্ষার্থী
- দেশে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক ১০২৭
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- কোটালীপাড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ২৫, বাড়িঘর ভাঙচুর
- ঈশ্বরগঞ্জের হাবিবুর রহমান জেলা এ্যাম্বাসেডর নির্বাচিত
- বিশ্বখ্যাত ফটোগ্রাফি স্টুডিও হারকোর্ট ফিচার নিয়ে আসছে স্মার্টফোন অনার ২০০ সিরিজ
- বঙ্গবন্ধু সেতুর ঢাকাগামী লেনে ১০ কিলোমিটার যানজট