E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

দিনাজপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাক্স বাদাম

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ০১ ২৩:৩৫:৪৭
দিনাজপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বাক্স বাদাম

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরে বাক্স বাদাম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মুখোরচক খাবার হিসেবে অনেকে তা ক্রয় করে খাচ্ছেন। গাছ থেকে সদ্য সংগ্রহ করা বাক্স বাদাম ফল দিনাজপুরে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে।  শহরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানস্থ শিশু পার্কের দক্ষিণে বড়পুলের উপর বিক্রি হচ্ছে এসব বাক্স বাদাম।

কাঠ বাদাম বলে বিক্রি হলেও তা বাক্স বাদাম বলে জানিয়েছেন দিনাজপুর বিভাগীয় সামাজিক বন কর্মকর্তা মো.বশিরুল আল মামুন।

তিনি বলেন, এসব এভাবে খাওয়া খুবই দুষ্কর। প্রসেসিং করে খেতে হয়। তবে অনেকে তা খাচ্ছেন। খেলে ক্ষতি নেই। পুষ্টিকর খাদ্য। তবে এভাবে খাওয়া কষ্টকর অবশ্যই।

দিনাজপুর শহররের বড়পুল নামক এলাকা থেকে অনেকেই কঠ বাদাম ভেবে এ বাক্স বাদাম কিনছেন।

১০ থেকে ১৫ টাকা হিসেবে প্রতি পিস বাক্স বাদাম ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। একটি ফলের ভিতরে রয়েছে ১০ থেকে ১৫টি বাদামের বিচি রয়েছে।

শহরের বড়পুলের উপরে ফুটপাতে ফলসহ বাক্স বাদাম বিক্রেতা মোহাম্মদ অনু জানালেন, দিনাজপুর শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য এই বাদামের গাছ রয়েছে। তারা এই বাদামকে কাঠ বাদাম বলেই চিনেন। কেউ কেউ আবারা এটাকে জংলি কাঠ বাদামও বলেন। তবে এটা যে বাক্স বাদাম তা তিনি জানেন না।

এই বড় পুলের আশপাশেই ১০ থেকে ১২টি গাছ রয়েছে বাক্স বাদাম্বে। দিনাজপুরের মানুষ কাট বাদাম গাছ বা এই বাদাম চেনেন না। আগে এই বাদাম বড় হয়ে পেকে পরিপুষ্ট হয়ে পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যেত। গত তিন বছর ধরে আমি ও মোঃ মিলন ভাই এই কাট বাদাম গাছ গুলো থেকে পেড়ে বিক্রি করছি,বলেও আনু জানালেন।

পাশে আরেক বাক্স বাদাম বিক্রেতা মোঃ মিলন জানালেন,১০ থেকে ১৫ টাকা হিসেবে প্রতি পিস কাট বাদাম ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। একটি ফলের ভিতরে রয়েছে ১০ থেকে ১৫টি কাট বাদাম। মুখোরচক কাবার হওয়ায় মানুষ কিনে নিঝে খেয়ে পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। ফলটি গাছে আসে সবুজ হিসেবে। পরে তা পুরট হয়ে কাঠ কালারের হয়। ফলটি শক্ত কিছুতে আঘাত করলে মাঝখানে ফেটে যায়। এতে করে ভিতরে লাল আবরণের মধ্যে কালো রঙের বিচি সেটি ছিললে প্রথমে লাল আবরণ বের হয়, সেটিকে আবার ছিললে বেরিয়ে আসে সাদা রঙের কাটবাদাম। যা খেতে অনেক সু-স্বাদু।

পাশেই কাট বাদাম বিক্রি করছিল শিশু মোঃ ফিরোজ। সে জানালো, সে দুইদিনে চার বস্তা কাট বাদাম ফল বিক্রি করেছে ৪ হাজার টাকায়। আজও এক বস্তা নিয়ে বিক্রি করছে এবং তার বাবা কাট বাদাম গাছ থেকে পাড়তে গেছেন।

বাক্স বাদাম কিনতে আসা দিনাজপুর জেলা জজ কোটের অফিস সহকারির মোয়াজ্জেম হোসেন শাহ বলেন, তিনি গত ৩ বছর ধরে এই বড়পুল এলাকা থেকে মিলন ও অনুর কাছ থেকে কাট বাদাম কিনে থাকেন। পরিবারের সবাই এই কাটবাদাম খেতে পছন্দ করেন। কারণ বাজারে যেগুলি পাওয়া যায় তা পক্রিয়াজাত করা। কিন্তু এটি সরাসরি কিনতে পারেন এবং খেয়ে প্রকৃত স্বাদ পান।

পুলহাট স্টাফ কোয়াটারের গেটে পাশের বাক্স বাদাম গাছের মালিক মোঃ রোস্তম আলী(৫৫) বলেন, তার গাছটির বয়স ৭০/৮০ বছর। তিনি জানতেননা যে এটি কাট বাদামের গাছ। গাছটিকে কমপক্ষে ১০ হাজার ফল হয়। গত তিন বছর আগে জানতে পেরেছেন যে এটি কাট বাদামের গাছ। এখন বিক্রি করে তিনি ভাল টাকা পান।

অনেকেই জানেন না বাক্স বাদাম কী?
দিনাজপুর বিভাগীয় সামাজিক বন কর্মকর্তা মো.বশিরুল আল মামুন বলেন,বাক্স বাদামের ভেতর শক্ত-চ্যাপ্টা গোলাকৃতির সবুজাভ খোলস দেখে মনে হবে যেন বুনোফল। তবে দু’ভাগ করলে খোলসের ভেতরের শিমুল লাল রঙ কৌতূহলী করে তুলবে। গুচ্ছাকারে সাজানো বেশকিছু দানা খোলসটির মধ্যে লুকিয়ে আছে। খেতে সুস্বাদু, পুষ্টিগুণেও ভরপুর!আকৃতির সঙ্গে মিল রেখে অনেক এলাকায় এটা ‘জংলি কাঠ বাদাম’ নামেও পরিচিত।

উপরের বাকলটি ফেলার পরও ভেতরে আরেকটি পাতলা বাকল রয়েছে। যার পরের স্তরের মিলবে সফেদ বাদাম। খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। রয়েছে পুষ্টিগুণও।

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ পরিপক্ক হলে এর বাইরের রঙ হয় কালো, একটু কম হলে হালকা লাল, আর অপরিপক্ক কাঠবাদামের বাইরের আবরণ অনেকটা সাদা। পরিপক্ক ফলটি মাঝখান দিয়ে আপনাআপনি ফেটে যায়।

(এসএএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test