E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

নেই কোন কর্মসূচি 

৪ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় রাজৈর

২০২৪ ডিসেম্বর ০৪ ১৭:২২:৪১
৪ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় রাজৈর

বিপুল কুমার দাস, রাজৈর : ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় উপজেলাটি। তবে রাজৈর মুক্ত দিবস উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না।

১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে রাজৈরে পাক হানাদার বাহিনী আস্তানা গড়ে তোলে। মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে আগস্ট মাসের প্রথম দিক থেকে হানাদারদের ওপর আক্রমণ করতে শুরু করেন।

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। মধ্যরাত পর্যন্ত তুমুল যুদ্ধের পর রাজৈর উপজেলা থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া এলাকায় পালিয়ে যায় হানাদার বাহিনীর সদস্যরা।

৪ ডিসেম্বর ভোরে সেখান থেকে বন্দি হয় ১৩৫ জন পাক হানাদার। বিজয়ের পতাকা ওড়ে, শত্রুমুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার পাখুল্যা, লাউসার, কদমবাড়ি, কমলাপুর, মহিষমারী, ইশিবপুর, কবিরাজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। ওই সব অস্থায়ী ক্যাম্প থেকেই পাক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

রাজৈরে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর মুক্তিকামী মানুষের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। একদিনে খালিয়ার সেন্দিয়ার আখ ক্ষেত ও জঙ্গলে পালিয়ে থাকা ১৩১ জন মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে তারা।

পাকবাহিনী ও স্থানীয় রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় রাজৈর বড় ব্রিজ, আমগ্রাম ব্রিজ ও টেকেরহাটে। পাখুল্যায় মুখোমুখী যুদ্ধ হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে। এই সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন কর্নেল (অব.) সরোয়ার হোসেন মোল্যা।

জানা গেছে, পাখুল্যায় সকাল ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সম্মুখযুদ্ধ হয় হানাদার বাহিনীর সঙ্গে। এছাড়া ১৯৭১ সালের ঈদের আগের রাতে রাজৈর উপজেলার বৌলগ্রামে পাক বাহিনীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে ৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পাকবাহিনী রাজৈর ছেড়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পালিয়ে যায়।

পরের দিন ৪ ডিসেম্বর গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় ১৩৫ জন পাক হানাদারকে আটক করেন মুক্তিযোদ্ধারা। শত্রুমুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা।

রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী বলেন, বর্তমান প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে রাজৈর শত্রুমুক্ত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি নেই কেন জানতে চাইলে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো মাহফুজুল হক বলেন, এই দিনে রাজৈর উপজেলার শহীদ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সশ্রদ্ধ সালাম জানাই। এছাড়া এদিনটি রাজৈর উপজেলাবাসীর জন্যও গর্বের ও আনন্দের দিন। সকল উপজেলাবাসীকে অভিনন্দন জানাতে চাই।

পাঠকের মতামত:

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test