দিনাজপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ
শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ( ১৪ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে দিনাজপুর সদর, বিরল খানসামা ও ঘোড়াঘাট হানাদার মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ও মুক্তিযুদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ, র্যালি, ডুকমেন্টারী প্রদর্শন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরহাদ হোসেন দালিলিক ভাবে প্রমাণ করেছেন, দিনাজপুর মুক্ত হয়েছিল ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই মুক্তিযোদ্ধাদের হামলার মুখে পাকিস্তানি সেনারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ৮ ডিসেম্বর চিরিরবন্দরে মুক্তিযোদ্ধারা ৫১ জন রাজাকারকে বন্দি করে।
১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা বিরলে পাকিস্তানি সেনাদের ঘাঁটির ওপর হামলা চালান। ১১ ডিসেম্বর বিরলে হানাদার বাহিনী হামলা চালিয়ে বহু নিরীহ মানুষকে হত্যা করে চলে যায়। ১৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা বিরলের বহলা গ্রামে ৪৪জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে সৈয়দপুরের দিকে রওনা হয়।
১৪ ডিসেম্বর বিরল উপজেলার মঙ্গলপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মিত্রবাহিনী যোগ দেয়। এরপর ওইদিনই হানাদাররা কাঞ্চন নদীর রেলওয়ের লোহার ব্রিজ, ভুষিরবন্দর ব্রিজ, মোহনপুর ব্রিজ, দিনাজপুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ভেঙে দেয়াসহ অনেক ক্ষতি করে।
১৩ ডিসেম্বরে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে কোনঠাসা হয়ে পাকিস্তানি সেনারা সৈয়দপুরে চলে যায়। ১৪ ডিসেম্বরেই দিনাজপুর মুক্ত হয়।
দিনাজপুর জেলা সেক্টর কমান্ডার ফোরামের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ জানান, চারদিক থেকে মুক্তিযুদ্ধা আর মিত্রবাহিনী ১৪ই ডিসেম্বর দিনাজপুর শহরের বাহাদার বাজারে এসে বিজয় উল্লাস করতে থাকেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন হয়েছিল ও প্রশাসন চালু হয়েছিল। তৎকালীন ৭নং সেক্টরের চেয়ারম্যান এবং সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য অ্যাড. এম আব্দুর রহিম স্বাধীন বাংলাদেশের ১৮ ডিসেম্বর তারিখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
দিনাজপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মকসেদ আলী মঙ্গলীয়া বলেন,সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দিক দিয়ে দিনাজপুরে প্রবেশ করেন। কেউ আগে প্রবেশ করতে পেরেছেন আবার কেউ পরে। প্রথম মুক্তি বাহিনীরা ১৪ ডিসেম্বর প্রবেশ করায় ১৪ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত হয়।
গেলিলা মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ ইব্রাহিম খলিল জানান,টানা ৯ মাস যুদ্ধ করার পর ১৩ ডিসেম্বর ভোররাতে পাকিস্তানী বাহিনীদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে হামজাপুর ৭ সেক্টরের ক্যাপ্টেন ইদ্রিসের নেতৃত্বে প্রায় ৫ শতাধিক মুক্তি বাহিনী পানির মত গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে চৌপুকুরিয়া, জগৎপুর হয়ে বিরল অভিমুখে প্রবেশ করে তিন দিক থেকে পাক বাহিনীদের ঘিরে ফেলে। এসময় পাক বাহিনী ও তাদের দোসররা তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিরল বাজার, ঢেলপীরসহ বিভিন্ন গ্রামে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পিছন দিকে সরতে থাকে।
সন্ধ্যায় তারা দক্ষিণ বহলা গ্রামে গণহত্যা চালিয়ে ৪৪ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। সারা রাত যুদ্ধ চলার পর ১৪ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তি বাহিনী ও জনতা রেল লাইনের ধার দিয়ে জয় বাংলার শ্লোগান দিতে দিতে দিনাজপুরের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে বগুলা খাড়ী জলুকা নামক রেল ব্রীজের নিকট পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পাকসেনারা আবারো গুলি ছুঁড়তে থাকে। এ সময় ১১ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। হাতে গুলিবিদ্ধ হন ক্যাপ্টেন ইদ্রিস।
টানা দুই ঘন্টা সম্মুখ যুদ্ধ চলার পর পাকা হানাদার বাহিনীরা বিরল উপজেলা সীমানা ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। আর রাজাকাররা দেয় গা ঢাকা।
দিনাজপুরের বিরল, মঙ্গলপুর এলাকা মুক্ত করে ১৩ ডিসেম্বর ভোররাতে মুক্তিবাহিনী শহরের কাছাকাছি এসে উপনীত হয়। খানপুর, কমলপুর, রামসাগর এলাকা মুক্ত করে মুক্তি বাহিনীর আরেকটি দল শহরের কাছাকাছি এসে দাড়ায়।
এদিকে পাক সেনারা ক্রমাগতভাবে বিভিন্ন এলাকায় কোণঠাসা হতে হতে ১৩ ডিসেম্বর দিনাজপুর শহরে পিছিয়ে আসে।
পাক বাহিনী ক্রমাগত পিছু হটতে হটতে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে দিনাজপুর শহরের কুঠিবাড়ীতে সমবেত হয় এবং মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানের মুখে রাতের মধ্যেই ফুলবাড়ী-খানসামা হয়ে সৈয়দপুুরের দিকে পালিয়ে যায়। ফলে কোন প্রকার প্রতিরোধ ছাড়াই দিনাজপুর শহর মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে।১৪ ডিসেম্বর সকাল বেলাই দিনাজপুর মুক্ত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী জানান,ঘোড়াঘাট থেকে ৪১জন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। যুদ্ধ চলাকালীন ১৩ জন শহীদ হন। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হানাদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান কুলালন্দ গ্রামের আইয়ুব আলী, আফসারাবাদ কলোনীর সোহরাব আলী, মোশারফ হোসেন, খাইরুল গ্রামের মহেন্দ্রনাথ সরকার, পালশা গ্রামের তৎকালীন চেয়ারম্যান কাজী আ. রশিদ, সাইফুল ইসলাম, ডুগডুগিগ্রামের বগা মন্ডল ও তার ছেলে, কশিগাড়ী গ্রামের সিরাজ উদ্দিন, হিজল গাড়ীর ওসমান আলী,জোড়গাড়ী গ্রামের সায়েদ আলী,ভেপসিগ্রামের আঃ সাত্তার,ঘোড়াঘাট সদরের বদর উদ্দিন,আমিরুল ইসলাম ও আঃ রশিদ (খোকা)।
মুক্তিবাহিনীসহ যৌথবাহিনীর অব্যাহত গেরিলা হামলার মুখে ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভিতর দিয়ে হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায়। ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট।
পাক বাহিনী ক্রমাগত পিছু হটতে হটতে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে দিনাজপুর শহরের কুঠিবাড়িতে সমবেত হন এবং মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযানের মুখে রাতের মধ্যেই ফুলবাড়ী-খানসামা হয়ে সৈয়দপুরের দিকে পালিয়ে যায়। ফলে কোনো প্রকার প্রতিরোধ ছাড়াই দিনাজপুর শহর মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে। ১২ থেকে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, বীরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে আসে। ১৪ ডিসেম্বর সকাল বেলাই দিনাজপুর মুক্ত হয়।
(এসএএস/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০২২)
পাঠকের মতামত:
- নেত্রকাণায় ভাগ্নের প্রহারে মামা খুন
- নড়াইলে জোরপূর্বক জমি দখল করে ফসল কেটে নিল দুর্বৃত্তরা
- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ১৮ বিঘা কৃষি জমি দরপত্র ছাড়াই ইজারা
- কোন মামলায় আসামি না হয়েও গ্রেফতার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা
- বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলের উপর গণশুণানী অনুষ্ঠিত
- ওয়ালটন ইনভার্টার এসির পিসিবিতে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা
- নোয়াখালীতে থানার গোলঘরে মারামারি, ৬ আসামির জামিন
- ‘কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চক্রান্ত করলে তাকে আমরা প্রতিহত করবো’
- মোংলায় আ.লীগের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে নেমেছে বিএনপি
- নলুয়া ভূঁইয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরুষ্কার বিতরণ
- মোংলায় মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু ফাদার রিগনের জন্মশতবার্ষিকী পালিত
- হত্যা করতে এনে জনতার হাতে ধরা খেল ৪ যুবক
- নোয়াখালী শিবপুর দরবার শরীফে চলছে বাৎসরিক ওরস মাহফিল
- লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে বিএনপি নেতাদের ধাওয়ায় পালালো আ.লীগ নেতা
- মায়ের বাধায় আটকে গেলো শহীদ আরাফাতের মরদেহ উত্তোলন
- র্যাব ও নৌ পুলিশের পৃথক অভিযানে ডাকাত সর্দারসহ ৩ জন গ্রেপ্তার
- টাঙ্গাইলে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উদযাপিত
- ফরিদপুর ওয়ালটন প্লাজার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
- টাঙ্গাইলে তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন
- ফরিদপুরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি
- সালথায় শীতকালীন স্কুল, মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
- বিএনপির ৪৭ নেতা খালাস, ঈশ্বরদীতে আনন্দ মিছিল
- নাটোরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচী
- ‘ফ্যাসিস্টরা ইতিহাস পড়ে কিন্তু শিক্ষা নেয় না’
- দেলদুয়ার-নাগরপুরের উন্নয়নে কর্মবীর এমপি টিটু
- প্রজন্মের কাছে এক মুক্তিযোদ্ধার খোলা চিঠি
- মঙ্গলবার থেকে ফের শুরু হচ্ছে বৃষ্টি, থাকতে পারে ৪ দিন
- তিস্তার পানিতে উৎপাদন হবে ২২ লাখ ৯৪ হাজার ১৯৫ টন চাল
- ময়মনসিংহে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন তিন যৌনকর্মী
- ঈদগাঁওতে দিনব্যাপী শেখ রাসেল শিশু-কিশোর উৎসব
- কাঁপা
- শরীয়তপুরে বজ্রপাতে নিহত ৩
- বাসের ধাক্কায় খাদে লেগুনা, প্রাণ গেলো ৪ জনের
- অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিমুল্লাহ চৌধুরী
- ‘ছাত্ররা নিজেরাই দল গঠন করবে’
- সাতক্ষীরায় ইজিবাইকের চাকায় ওড়না জড়িয়ে কিশোরীর মৃত্যু
- ভোলার তজুমদ্দিনে আত্নরক্ষায় কারাতে প্রশিক্ষণ
- শিক্ষায় সংস্কার আনলেই টেকসই হবে অন্য সংস্কার
- ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে’
- জামালপুরে মামলার বাদীকে হুমকি, আসামি গ্রেপ্তারের দাবি
- বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা শাখার কমিটি গঠন
- ওসি পরিচয়ে অপহরণ-চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেফতার
- হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে পালিত হলো সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস
- সিটি ব্যাংকের ডিএমডি হলেন মেসবাউল আসীফ সিদ্দিকী