E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বাগেরহাট জেলা হাসপাতাল

১৯৯ চিকিৎসকের পদ শূন্য, স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত 

২০২৫ এপ্রিল ১০ ১৯:০২:৪৫
১৯৯ চিকিৎসকের পদ শূন্য, স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত 

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাট জেলা ২৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালটিতে ২২০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এখন আছে মাত্র ২১ জন। চিকিৎসকের ১৯৯ পদই শুন্য। চিকিৎসকের অভাবে জানুয়ারি থেকে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটও বন্ধ। ২৫০ শয্যার বিপরীতে এখন ৫০০ জন পর্যন্ত রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকছেন। জেলার ১৮ লাখ মানুষের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে সমস্যার শেষ নেই। হাসপাতালটির টিকিট কাউন্টার, জরুরী বিভাগ, চিকিৎসকের কক্ষ, প্যাথলজি, ফার্মেসি, ওয়ার্ড, ফ্লোর সর্বোত্রই রোগীর উপচে পড়া ভীড়। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে টিকিট কেটেও কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।

শুধু চিকিৎসকই নয়, ২০০ জন সেবিকার স্থলে আছে মাত্র ৫০ জন। এই হাসপাতালটিকে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনির ৩৭টি পদ এখন শূন্য রয়েছে। নামেই ২৫০ জেলা শয্যা হাসপাতাল হলেও এখনো চলছে ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে। এই ১০০ শয্যার জনবলের মধ্যেও মধ্যে চক্ষু, এ্যানেসথেশিয়া, সার্জারী, নাক-কান-গলা, কার্ডিওলজিরসহ সিনিয়র কনসালটেন্ট মত গুরুত্বপূর্ণ ৫৮টি প্রথম শ্রেনির পদের মধ্যে ৩৭টি পদই শুন্য রয়েছে। জুনিয়র কনসালটেন্টের ৭টি পদ খালি রয়েছে। নেই সিটি এসকান, এমআইআর, আকো, ইটিটি, ইউরোলজি, সিরাম ইলেক্ট্রোলাইট, থাইরয়ডের পরীক্ষ, লেবরোজকপি মেশিন। মেশিন নেই ১০ বেডের ডায়লাইসিস ইউনিটে। চিকিৎসক, সেবিকাসহ শুধু জনবল সংকট নয়, প্রয়োজনীয় ঔষধ সংকটও রয়েছে এই হাসপাতালে।

ঔষধসহ অন্যান্য খাতে এই জেলা হাসপাতালটির জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে মাক্র ৬ কোটি টাকা। ঔষধ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও রোগ নির্নয়ের ব্যবস্থা না থাকায় কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে রোগীরা যাচ্ছেন খুলনা-ঢাকার বিভিন্ন বড় হাসপাতালে। ফলে রোগীরা অর্থনৈতিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, তেমনি পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অনেককেই আবার অর্থ সংকটে বাধ্য হয়ে পড়ে রয়েছেন বাগেরহাট জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। শরণখোলা উপজেলা থেকে আসা একরাম হোসের জানান, ১০দিন আগে মাকে এখানে ভর্তি করার পর এখনো আছি। মা এখনও সুস্থ্য হয়নি, চিকিৎসক বলছেন সব পরীক্ষা নেই, খুলনায় নিয়ে যান। টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় এখনে খুলনা নিতে পারিনি। শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যাথা নিয়ে কচুয়া থেকে এসে এক সপ্তাহ আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ছলেমান ফকির নামে এক বৃদ্ধ। বেড না পেয়ে মেঝেতেই চলছে তার চিকিৎসা। হাসপাতালে প্রয়োজনিয় ঔষদ না থাকায় বাইরে থেকে ঔষধ কিনতে হচ্ছে হতদরিদ্র রোগীকে।

বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার জানান, বাগেরহাট ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতাল হলেও সেই জনবল এখনো পাইনি। জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে ২২০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এখন আছে মাত্র ২১জন। চিকিৎসকের ১৯৯ পদই শুন্য। এখনো ১০০ শয্যার জনবলে চলছে এই হাসপাতালটি। ১০০ শয্যার জনবলের ৫৮টি প্রথম শ্রেনির পদের মধ্যে ৩৭টি পদই এখন শুন্য রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য পদেও চরম জনবল সংকট রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবার অনেক যন্ত্রপাতির সংকটও রয়েছে। রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পরেও আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। জনবলসহ অন্যান্য সংকটের বিষয়টি উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

(এস/এসপি/এপ্রিল ১০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৩ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test