E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

শরণখোলায় ব্যাপক হারে ডায়রিয়ার প্রকোপ

২০২৫ মার্চ ২০ ১৯:০৪:৫৮
শরণখোলায় ব্যাপক হারে ডায়রিয়ার প্রকোপ

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের শরণখোলায় উপজেলায় ব্যাপক হারে ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে শুরু হয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। চারটি ইউনিয়নের ছোট এই উপজেলা হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে গড়ে ৪০ জনের মতো ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী। এছাড়া জরুরি ও বহির্বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রতিদিন আরো ৫০ থেকে ৬০ জন।  শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় ঠাঁই হচ্ছে রোগীদের। এতো রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাছে প্রতিদিন আরো শত শত রোগী চিকিৎসা নেয়ার খবর জানা গেছে। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা খারাপ তাদেরকে হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন গ্রামীণ চিকিৎসকরা। হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি, রমজানে ভেজাল তেলে তৈরী সেহরি ও ইফাতারের খাবার গ্রহন এবং দূষিত পানি পানে অসময়ে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শুধু ডায়রিয়া রোগীই ভর্তি রয়েছে ৩৮ জন। ডায়রিয়া ওয়ার্ড পুরোটাই রোগীতে ঠাঁসা। মহিলা ওয়ার্ডেও অন্যান্য রোগীর সঙ্গে দেখা গেছে ডায়রিয়া আক্রান্তদের। এসব রোগীর মধ্যে বেশির ভাগই বয়ষ্ক নারী-পুরুষ।

মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ী গ্রামের রাহিলা বেগম (৫০) ও নলবুনিয়া গ্রামের মানবর বেগম (৫৫) জানান, গত বুধবার সকালে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আগেরদিন সন্ধ্যায় ইফতারি খাওয়ার পর রাতেই ডায়রিয়ায় আক্রমণ হন তারা।

হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার রেবা রাণী দেবনাথ জানান, অন্যান্য বছর এমন সময় হাতেগোণা দুই-চার জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হতো। কিন্তু এবছর এতো চাপ যা, সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া সাধারণ রোগীর চাপতো আছেই। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় বিছানা করে থাকছে ভর্তিরা।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিপ্লব সাধক জানান, বিকেল হলে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বাড়ে। বেশিরভাগই খারাপ অবস্থায় আসায় তাদের ভর্তি করা হয়। এই সময় ডায়রিয়া রোগীর এতো প্রকোপ অন্যান্য বছর দেখা যায়নি।

শরণখোলা উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. আশফাক হোসেন বলেন, প্রতিদিন তিন থেকে চার শ’ রোগী বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। এর মধ্যে গড়ে এক শ’ জনই ডায়রিয়া আক্রান্ত। এবছর হঠাৎ ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। যা এর আগে দেখা যায়নি। আবহাওয়ার পরিবর্তন, লবণাক্ত ও দূষিত পানি পান এবং রমজানে ভেজাল তেলে তৈরী খাবার খেয়ে বয়ষ্করাই বেশি ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি পানি ও খাবার গ্রহনে আরো সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে যে পরিমান ওষুধ ও স্যালাইন মজুদ আছে তাতে এক সপ্তাহ চলবে। রোগীর চাপ আরো বাড়লে চিকিৎসা সংকট দেখা দিতে পারে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

(এস/এসপি/মার্চ ২০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২১ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test