E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

শেবাচিমে সেবার মান বাড়াতে ২২ প্রস্তাব

২০২৫ জানুয়ারি ১২ ১৮:৫১:১৪
শেবাচিমে সেবার মান বাড়াতে ২২ প্রস্তাব

আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে জরুরী ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান প্রয়োজন। গত ১৫ বছর ধরে এ দাবি জানিয়ে আসছে বরিশালের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সুশীল সমাজ এবং হাসপাতাল প্রশাসন।

ইতিপূর্বে এ নিয়ে অসংখ্য বৈঠক হয়েছে। ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বরিশালের জন্য পাঠানো হলেও তাদের কেউ কেউ আজ পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি। আবার কেউ কেউ এসে ষড়যন্ত্রের মুখে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার অত্যাধুনিক মেশিন নষ্ট হয়ে পরে রয়েছে বছরের পর বছর। ইচ্ছে করেই নাকি বিশেষ সুবিধার আশায় এগুলো নষ্ট করে ফেলে রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের জন্য নিয়ে আসা মেশিনটি কোনো দিন ব্যবহারই হয়নি। কারণ এটি চালাতে সক্ষম লোকবল এখানে নেই। যেকারণে মেশিনটি নষ্ট না ভালো তাও বোঝার উপায় নেই। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বরিশালের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর। তিনি নিজেও তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান জরুরী প্রয়োজন বলে স্বীকার করেছেন।

মতবিনিময় সভায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি কাজী মিজানুর রহমান একটি উন্নয়ন প্রতিবেদন হাসপাতালের পরিচালকের হাতে তুলে দিয়েছেন। এতে শেবাচিম হাসপাতাল ও সরকারি জেনারেল হাসপাতালে উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে ২২টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। কাজী মিজানুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম সরকারি হাসপাতাল শেবাচিম ও সদর জেনারেল হাসপাতাল বহু বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। দুটি হাসপাতালেরই প্রায় একই সমস্যা। বিশেষায়িত চিকিৎসা নেই, একটু জটিল রোগী হলেই ঢাকায় প্রেরণের প্রবনতা দীর্ঘদিনের। যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বেশিরভাগই নষ্ট থাকে, কোন কোন যন্ত্র নির্দিষ্ট সময়ে চালু না করায় প্যাকেটেই মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে। অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ভঙ্গুর। ডাক্তার, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ জনবলের অভাব প্রকট। এক হাজার বেডের হাসপাতালে সব সময় কমপক্ষে ২৫শ’ থেকে তিন হাজার রোগী ভর্তি থাকে। অপরিচ্ছন্নতার অভিযোগ বর্তমান পরিচালকের হস্তক্ষেপে কিছুটা সহনীয় হলেও দালাল ও ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের উৎপাত এখনও অসহনীয়।

হাসপাতাল দুটির ব্যবস্থাপনাতেই ত্রুটি রয়েছে দাবি করে কাজী মিজানুর রহমান বলেন, এই প্রতিবেদনটি মূলত সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছে দিতে তৈরি করা হয়েছিল। শেবাচিম পরিচালকের আগ্রহের কারণে এটি তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক প্রস্তাবনার প্রায় সবগুলোর সাথে সহমত পোষণ করেছেন দাবি করে কাজী মিজানুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে পরিচালক কথা বলে সবার আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান সমস্যার সমাধান করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনাগুলো হলো-পরিচালকের অফিস সময়সূচি অন্য সরকারি দপ্তরের ন্যায় সকাল নয়টা থেকে পাঁচটা করা হলে সেবা প্রত্যাশীদের অনেক দুর্ভোগ কমে আসবে। পুরো হাসপাতাল সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করা, সু-শৃঙ্খল বাহিনীর প্রশিক্ষিত জনবলের সমন্বয়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হলে যাবতীয় তদারকি বিশেষ করে সকল প্রকার টেষ্ট, ওষুধ বিতরণ, খাদ্য প্রস্তুত, অবাঞ্ছিত প্রবেশরোধ নিশ্চিতসহ সর্বত্র শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। ভ্রাম্যমান বিক্রয় প্রতিনিধিদের (হকার) হাসপাতাল কম্পাউন্ডে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভিজিট বন্ধ করা, হাসপাতালের ভিতর ও বাহিরের পরিচ্ছন্নতা সমানভাবে করা। হাসপাতালের ওয়াশরুমগুলো সার্বক্ষণিক পরিচ্ছন্ন রাখা, দ্রুত নতুন অ্যাম্বুলেন্স সংগ্রহ করা, বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো হাসপাতাল কম্পাউন্ডের বাহিরে রাখা, হাসপাতালের কর্মচারীদের নিয়মিত বাধ্যতামূলকভাবে নির্দিষ্ট পোষাক পরিধান করা, পুরাতন এবং ঝুঁকিপূর্ণ লিফট প্রতিস্থাপন করা ইত্যাদি।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ১২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test