E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মিলছে না কাঙ্খিত সেবা 

২০২৪ ডিসেম্বর ০৭ ১৭:০১:১৪
গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মিলছে না কাঙ্খিত সেবা 

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : উদ্বোধনের ১ বছর পরও পুরোপুরি চালু হয়নি  গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। হাসাপাতালের মেডিসিন, শিশু ও গাইনী বিভাগ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। এখনো সার্জরি, আই, ইএনটি এবং অবস্টেট্রিক্যাল বিভাগ খোলা সম্ভব হয়নি। হাসপতালের ৫শ’ বেডের মধ্যে ওই ৩ বিভাগের ২৭১ বেডে রোগী রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকী ৪টি বিভাগের ২২৯ বেড চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। এ হাসপাতালে গাইনী রোগী ভর্তি করা হলেও সিজারিয়ান অপারেশন করা হয় না। হাসপাতালটিতে মোট ৮২ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ হাসাপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩১ জন। ৫১ জন চিকিৎসকরে পদ শূন্য রয়েছে। ফলে ৫শ’ বেডের এ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে কাঙ্খিত সেবা সেবা পাচ্ছেন রোগীরা।

প্রতিদিন এ হাসপাতালের বর্হিবিভাগ থেকে গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলা, নাড়াইল জেলার কালিয়া, লোহাগড়া, ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী,আলফাডাঙ্গা, ভাঙ্গা, সালথা, রবিশাল জেলার আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, বাবুগঞ্জ, মাদারীপুর জেলার রাজৈর, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলার ১ হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহন করেন। আর ভর্তি থাকেন প্রায় ৩শ’ রোগী।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সূত্রে জানাগেছে, গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, ৫শ’ বেড হাসপাতাল ও নার্সি কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৬শ’ ৩৩ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠান ৩টি বাস্তবায়ন করে। শহরের আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসাপাতাল সংলগ্ন তেঘরিয়া মৌজার ৩৬ একর জমির উপর আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের আদলে দৃষ্টি নন্দন প্রতিষ্ঠান ৩টি নির্মিত হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক ডা. অসিত কুমার মল্লিক বলেন, হাসপাতালে আইসিইউ, ডায়ালিসিস, আইসোলেশন বা করোনা ইউনিট, সিটিস্ক্যান, ডিজিটাল এক্সরে মেসিন, ইকোকার্ডিও গ্রাফিসহ সর্বাধুনিক প্যাথলজি, ডোপ টেস্ট, হরমোনটেস্টসহ বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা-নীরিক্ষার ব্যবস্থা প্রকল্পে ধরা ছিলো। সেভাবেই যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।

নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার মুলশ্রী গ্রামের মহসিন উদ্দিন (৫৬) বলেন, হাসাপাতালটি ১ বছর হল কার্যক্রম শুরু করেছে। আমি এ হাসপাতালে ব্যাথা ও হাড় ভাঙ্গার চিকিৎসা নিতে এসে জানতে পারলাম সব বিভাগ চালু হয়নি। তাই অর্থপেডিক্স চিকিসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। আমি দ্রুত হাসপাতালটি পূর্নাঙ্গ রূপে চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার গাংনী গ্রামের গৃহবধূ আফরোজা রোগম (২৪) বলেন, গাইন বিভগের চিকিৎসক দেখিয়েছি। চিকিৎসা পেয়েছি। কিন্তু অস্ত্রপচারেরর প্রয়োজন হলে তারা গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড হাসপাতালে রিফার্ড করবে বলে জানিয়েছে। ৫শ’ বেড হাসপাতাল পুরোপুরি চালু হলে আমরা ভাল সেবা পেতাম।

শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, ২০২৩ সালে ২৫০ বেড জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে ৫শ’ বেড হাসপাতালের আউট ডোরের কার্যক্রম শুরু করা হয়। সরকার এ হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার পর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী হাসপাতালটির ইনডোরের ৭টি বিভাগের মধ্যে ৩টি বিভাগ শুরু করা হয়। আমরা হাসপাতালটি পূর্নাঙ্গ চালুর জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তারা পর্যায়ক্রমে হাসপাতালটি অবশিষ্ট ৪টি বিভাগ চালু করে দেবে বলে জানিয়েছে। এখানে গাইনি বিভাগের কার্যক্রম রয়েছে। কিন্তু অবস্টেট্রিক্যাল বিভাগ এখনো চালু হয়নি। তাই সিজারিয়ান অপারেশন এখানো হচ্ছে না।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এখানে রক্তের কমন টেস্টগুলো হয়। এক্সে, ইসিজি, আল্টাসেনো, ইকো ও এন্ডোস কপি করা হচ্ছে। অন্যান্য সব সেবা দ্রুত শুরু করতে কাজ চলছে।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test