E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ষষ্ঠ-অষ্টমে ভর্তি বন্ধের নির্দেশ, বাড়ছে না প্রাথমিক শিক্ষার পরিসর

২০২৫ মার্চ ১৯ ১৩:০৫:০৪
ষষ্ঠ-অষ্টমে ভর্তি বন্ধের নির্দেশ, বাড়ছে না প্রাথমিক শিক্ষার পরিসর

স্টাফ রিপোর্টার : ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই। রয়েছে শিক্ষক সংকট। নানান সংকটের মুখে সেই উদ্যোগ থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে শুধু যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু রয়েছে, তাদের জন্য এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে।

আদেশে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বৃদ্ধি করে আট বছর অর্থাৎ, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। এক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বিবেচনায় বিদ্যালয়গুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নেই। পাশাপাশি পাঠদানের জন্য রয়েছে শিক্ষক সংকট ও দক্ষতার ঘাটতি।

এতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গঠিত কনসালটেশন (পরামর্শক) কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসার পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি থাকা স্কুলগুলোতে ভর্তি বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি না করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২৬) থেকে চালু থাকা ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না।

জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদের নেতৃত্বে একটি পরামর্শক কমিটি করেছিল সরকার। সেই কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, প্রাথমিক স্তরকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীতকরণ করার যুক্তি ও বাস্তবতা প্রশ্নসাপেক্ষ। বর্তমানে যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে, সেগুলোতে অবিলম্বে ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা যায়, ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০’ অনুযায়ী—দেশে শিক্ষার স্তর হবে তিনটি। এর মধ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং এরপর উচ্চশিক্ষা স্তর। বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নিম্নমাধ্যমিক, নবম-দশম শ্রেণি মাধ্যমিক, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি উচ্চমাধ্যমিক। তারপর শুরু উচ্চশিক্ষা।

২০১০ সালের শিক্ষানীতি মেনে ২০১৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর গত বছরের ৫ মে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবৈতনিক পাঠদান কার্যক্রম ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করা হবে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় কমাতে কাজ করবে।

(ওএস/এএস/মার্চ ১৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২০ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test