E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

তিতলি-মাইকেল-লুবান : একসঙ্গে তিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পৃথিবী

২০১৮ অক্টোবর ১২ ১৪:৪৭:০৭
তিতলি-মাইকেল-লুবান : একসঙ্গে তিন ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পৃথিবী

নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের দু’টি অংশের মানুষ এখন একসঙ্গে তিনটি বড় ধরনের ঝড়ের মোকাবিলা করছে। ভারতের ওড়িশা রাজ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি।’ ভারতের ঠিক অন্যপাশের উপকূলে, আরব সাগরের তীরে আঘাত হানতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন ‘লুবান’। প্রায় ৪০ বছর পর ভারতের একই অংশে একই সঙ্গে দুইটি সাইক্লোন আঘাত করতে যাচ্ছে।

আবার একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হেনেছে হ্যারিকেন মাইকেল। সবমিলিয়ে এ বছরের দশ মাসেই ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০টির বেশি ঝড়ের মুখে পড়তে হয়েছে এ পৃথিবীকে। আশঙ্কা রয়েছে, বছরের বাকি দু’মাসে কেবল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতেই সাত থেকে ১১টি সাইক্লোন তৈরি হতে পারে, যার মধ্যে তিন থেকে চারটি হবে বড় ধরনের।

এসব ছাড়াও ভূমিকম্প, বনের আগুন, ভূমি ধস এবং বন্যার ঘটনা তো রয়েছেই।

এতো বেশি ঝড়ের জন্য পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ঝড় বেশি হচ্ছে। এমনকি একই সময়ে বিশ্বে একাধিক ঝড়েরও তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং এল নিনোর নিরপেক্ষতার কারণে সাগরের পরিবেশগুলোও অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। যেমন ভারত মহাসাগরে স্বাভাবিকের তুলনায় তাপমাত্রা একদুই ডিগ্রি বেশি উষ্ণ ছিল। এসব কারণে এখানে ঝড়গুলো দ্রুত তৈরি হচ্ছে। তার অনেকগুলো পরবর্তীতে বড় হয়ে যাচ্ছে, অনেকগুলো আর বাড়ছে না।

তিনি বলছেন, যতদিন পর্যন্ত এসব সাগরের উষ্ণতা যথেষ্ট মাত্রায় নীচে নেমে না আসবে,ততদিন এসব ঝড়ের দেখা পাওয়া যাবে। সাইক্লোনের পরিবেশ তৈরির একটি বড় কারণ সাগরের ওপরের তাপমাত্রা ২৬.৫ বা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকা। এখন বিশ্বের অনেক এলাকার সমুদ্রেই এমনটা দেখা যাচ্ছে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, নভেম্বর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে দুর্বল এল নিনো তৈরি হতে পারে। এল নিনো তৈরির ৭৫ শতাংশ সম্ভাবনা দেখছেন তারা।

আবদুল মান্নান বলছেন, এল নিনো তৈরি হলে বিশ্বের অন্যান্য এলাকায় সাগরের উষ্ণতা কমে যাবে। তখন এসব সাগরে ঝড়ের প্রবণতাও কমবে। তবে সেটি বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধিকে আবার প্রভাবিত করবে। গত বছর ঝড় কম হয়েছে। এবার আবার বেশি হচ্ছে। এভাবে আবার একটি মৌসুম আসবে, যখন দেখা যাবে ঝড়ের প্রবণতা অনেক কমে যাবে। বিশেষ করে এল নিনো (পেরুর উপকূলে সমুদ্রের উপরের পানি গরম হয়ে যাওয়া, যা সেখানে মেঘ সৃষ্টি আর প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, দুই বা সাত বছর পরপর তৈরি হয়) তৈরি হলে সেটি বিশ্বের অন্যান্য এলাকায় একযোগে ঝড়ের প্রবণতা অনেক কমে যাবে।

ঝড় কেন তৈরি হয়

সমুদ্রের উষ্ণ পানির কারণে বায়ু উত্তপ্ত হয়ে হঠাৎ করে এসব ঝড়ের তৈরি হয়। তখন তুলনামূলক উষ্ণ বাতাস হালকা হয়ে যাওয়ার কারণে ওপরে উঠে যায়, আর ওপরের ঠাণ্ডা বাতাস নীচে নেমে আসে। এতে নীচের বায়ুমণ্ডলের বায়ুর চাপ কমে যায়। তখন আশপাশের এলাকার বাতাসে তারতম্য তৈরি হয়।

সেখানকার বাতাসের চাপ সমান করতে আশপাশের এলাকা থেকে প্রবল বেগে বাতাস ছুটে আসে। আর এ কারণেই তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড়ের। এরফলে প্রবল বাতাস ও স্রোতের তৈরি হয়। বিবিসি বাংলা।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২১ নভেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test