E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ধর্মনিরপেক্ষ দলকে তালাক দিতে হবে

‘কোন মুসলমান কখনও ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে না’

২০২৪ আগস্ট ১৩ ২৩:৪২:৪৭
‘কোন মুসলমান কখনও ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে না’

ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক : বাংলাদেশের সুপরিচিত প্রখ্যাত আলেম শেখ ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার বলেছেন, ‘তোমাদের দ্বীন তোমাদের, আর আমার দ্বীন আমার’ মাঝামাঝি নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ নাই। ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই ধর্মহীনতা। তাই যারা নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ দল বলে দাবি করেন তাদেরকে অবশ্যই গুডবাই জানাতে হবে বা তালাক দিতে হবে।

শনিবার (১০ আগষ্ট) যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ার কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত প্রবাসে মুসলমানদের সবচেয়ে বৃহৎ মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা)’র ৭ম বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি সূরা কাফিরুনের (১০৯. সূরা কাফিরুন-৬) ‘লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন’ সুপরিচিত এ আয়াতটি ব্যাখ্যা করে বলেন, কোন মুসলমান কখনও ধর্ম নিরপেক্ষ হতে পারে না। ‘তোমাদের দ্বীন তোমাদের, আর আমার দ্বীন আমার’ মাঝামাঝি নিরপেক্ষ থাকার কোন সুযোগ নাই। ধর্মনিরপেক্ষতা মানেই ধর্মহীনতা। আয়াতটির মৌলিক ধ্যান-ধারণা পরিষ্কার করেন তিনি।

শেখ ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার তাঁর মুল্যবান বক্তব্যে বলেন, মহানবীকে অনুসরণকারী সাহাবীরা নিশ্চয় বেহস্তী হবেন। শুধু ঈমান থাকলেই নবীজীর (সা:) সাথে থাকলেই সাহাবী হওয়া যায় না। সাহাবীর মর্যাদা পাওয়া খুব কঠিন কাজ। সাহাবীদের জীবন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি ইসলামের দাওয়াত বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মুনাকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানান।

‘ইসলাম শান্তি ও মানবতার জন্য ন্যায় বিচার’ এ শ্লোগানে প্রবাসে ৯ আগষ্ট শুরু হওয়া তিন দিনের এ সম্মেলন শেষ হয়েছে ১১ আগস্ট দুপুরে। এবারের মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা)’র বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাভাষী প্রতিটি বক্তার মুখেই বারবার উঠে এসেছে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি কথা। প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রান প্রবাসী মুসলমান এবারের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বলে মুনা’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনে সন্তোষ প্রকাশ করে মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা)'র জাতীয় কমিটির সভাপতি হারুন ও. রশিদ বলেন, গত ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। উক্ত আন্দোলনে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অভিবাদনও জানিয়েছেন মুনা’র সভাপতি হারুন ও. রশিদ গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখলকারী শেখ হাসিনাকে ক্ষমাতচ্যুত করায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুনা’র জাতীয় কমিটির সভাপতি হারুন ও. রশিদ।

তিনি বলেন, ইমাম ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের সার্বিক সহযোগিতায় ও আল্লাহর অশেষ রহমতে বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও বিশাল আকারের মুনা কনভেনশন বাস্তবায়ন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তিন দিনব্যাপী ওই কনভেনশন বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ আমেরিকান মুসলিম কমিউনিটির মাঝে ব্যক্তি এবং সমাজ গঠনে প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আমরা মুনা ন্যাশনাল সংগঠনের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে এবং আপনাদের মাধ্যমে গোটা বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

ইমাম দেলোয়ার হোসাইন তাঁর মুল্যবান বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে জুলুমবাজ শাসক পরাজিত হয়েছে এর পেছনে ছিলো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ। তারা অন্যায়, অবিচার, অবিবেচকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলো বলেই একটি জুলুমবাজ সরকারের দ্রুত পতন সম্ভব হয়েছে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে কোরআনের আলোকে ঐক্যবব্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কোরআন ও হাদিসের আলোকে তিন দিনের আলোচনায় অংশ নেন ড. ইয়াসির কাধি, ইমাম ড. ওমর সুলেমান, ইমাম সিরাজ ওয়াহহাজ, মুফতি হুসাইন কামানি, শন কিং, ইমাম সুলেমান হানি, হারুন ও. রশিদ, শায়খ আব্দুল নাসির জাংদা, উস্তাদা তাইমিয়া জুবায়ের, ইমাম ড. মোহাম্মদ আবু তালেব, ড. আলতাফ হোসেন, ইসমাহান আবদুল্লাহি, ওসামা আবু ইরশাইদ, ড. সাইয়েদুর রহমান চৌধুরী, আবদুল রহমান খান, ড. জাহিদ বুখারী, ইমাম দেলোয়ার হোসেন, শেখ ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, ড. তাহির ওয়াইট, ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান, ব্যারিস্টার হামিদ হোসেন আজাদ, ইমাম বাবা গালে ব্যারি, ড. উসামা আল-আজামী, শেখ এ টিডিয়ান ডায়ালো, শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহি, নিহাদ আওয়াদ, আবু সামিহা সিরাজুল ইসলাম, ড. হাসান আবদেল সালাম, ড. আয়মান হাম্মুস, ডা. সাবিল আহমেদ, ডা. মাহেরা রুবি, ডা. আবুদুল্লাহ বালদি, আরমান চৌধুরী, সিপিএ, ডা. মহসিন আনসারী, আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন পেনসেলভেনিয়া ষ্টেট সিনেটর নিখিল সাবা এবং মার্কিন রাজনীতিক তারেক খান প্রমুখ।

শনিবার রাতে শেষ পর্বে আবৃত্তিকার তোফাজ্জল হোসেন খান ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মনসুর এবং ডা. আতাউল ওসমানী ও ইকবাল হোসেন জীবনের নেতৃত্বে উম্মাহ শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্যরা দলীয় ও একক ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়াও রেনেসাঁকালচারাল গ্রুপ, আটলান্টিক কালচারাল গ্রুপ, নায়াগ্রা কালচারাল গ্রুপ এবং মুনা চিল্ডরেন উইং-এর নতুন প্রজন্মের শিল্পীরাও এতে অংশ নেন।

কনভেনশনের বিভিন্ন পর্বপরিচালনা করেন মুনা’র ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হারুন ও. রশিদ, কনভেনশনের কনভেনর আরমান চৌধুরী, সোস্যাল সার্ভিস-এর পরিচালক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল আরীফ, মিডিয়া ও কালচালার বিভাগের পরিচালক আনিসুর রহমান গাজী ও অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মনসুর প্রমুখ।

(আইএ/এসপি/আগস্ট ১৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২১ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test