E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ট্রাম্পের শুল্কনীতি, বিশ্বে মন্দার চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির শঙ্কা

২০২৫ এপ্রিল ১৫ ১২:০৩:৫৩
ট্রাম্পের শুল্কনীতি, বিশ্বে মন্দার চেয়ে খারাপ পরিস্থিতির শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক শুল্ক আরোপের ঘোষণায় টালমাটাল হয়ে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বিশ্বকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি সঠিক ভাবে সামলানো না যায় তবে মন্দার চেয়েও খারাপ কিছু হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

গত রবিবার এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্ক হার ঘোষণা করবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই প্রতিশ্রুতির অর্থ হচ্ছে, চীন থেকে আমদানি করা স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ওপর দেওয়া শুল্ক ছাড় আর বেশি দিন থাকছে না। ট্রাম্প মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে আরও শক্তিশালী করতে চাচ্ছেন।

সোমবার ফেডারেল রেজিস্টারের ফাইলিংয়ে দেখা গেছে, ওষুধ এবং চিপসের বিদেশী উৎপাদনের উপর ব্যাপক নির্ভরতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি- এমন যুক্তিতে ট্রাম্প প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই শুল্ক আরোপের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টর আমদানির বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৯৬২ সালের বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইনের ২৩২ ধারার সর্বশেষ ব্যবহারকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে তথাকথিত খাতভিত্তিক শুল্কের ন্যায্যতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এর আগে সেমিকন্ডাক্টর আমদানির ওপর শিগগির শুল্ক আরোপ করা হবে বলে জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্প। আগামী সপ্তাহে এই ব্যাপারে স্পষ্ট ঘোষণা আসতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা চিপ, সেমিকন্ডাক্টর ও অন্যান্য জিনিস আমাদের দেশেই তৈরি করতে চাই।

স্মার্টফোনের মতো কিছু পণ্য এখনো অব্যাহতিপ্রাপ্ত হতে পারে কি না তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট নমনীয়তা দেখাতে হবে। কারও এত কঠোর হওয়া উচিত নয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমরা আসন্ন জাতীয় নিরাপত্তা শুল্ক তদন্তে সেমিকন্ডাক্টর ও পুরো ইলেকট্রনিক্স সরবরাহ শৃঙ্খলের দিকে নজর দিচ্ছি।

ট্রাম্প গত শুক্রবারের ঘোষণা ঘিরে তৈরি হওয়া গুজব উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছেন, শুল্কের ক্ষেত্রে কোনো দেশই রেহাই পায়নি। এমনকি, চীনা ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ শুল্ক এখনো বহাল রয়েছে, তবে সেগুলো এখন ‘ভিন্ন শুল্ক শ্রেণিতে’ রাখা হয়েছে।

এর আগে তিনি চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করছেন। তবে তার প্রশাসন পরে জানায়, এই ১২৫ শতাংশের সঙ্গে আগে থেকে আরোপিত ২০ শতাংশ শুল্কও যুক্ত থাকছে। ফলে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ১৪৫ শতাংশে।

পরবর্তীতে খবর ছড়ায়, ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেয়েছে চীনের কম্পিউটার এবং কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি। কিন্তু সেটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এদিকে ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে চীন থেকে আসা গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিপণ্য ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর নতুন শুল্ক বসানো হবে।

লুটনিক বলেন, ট্রাম্প সেমিকন্ডাক্টর ও ফার্মাসিউটিক্যালসকে লক্ষ্য করে খাতভিত্তিক শুল্কের পাশাপাশি এক বা দুই মাসের মধ্যে স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলোতে ‘বিশেষ ধরণের শুল্ক’ কার্যকর করবেন।

তিনি বলেন, নতুন শুল্কগুলো ট্রাম্পের তথাকথিত পারস্পরিক শুল্কের বাইরে পড়বে, যার অধীনে গত সপ্তাহে চীনা আমদানির ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছিল।

অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম এবিসির ‘দিস উইক’ নামের একটি অনুষ্ঠানে লুটনিক বলেন, এক থেকে দুই মাসের মধ্যে ট্রাম্প স্মার্টফোন, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে শুল্ক আরোপ করবেন। এর সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর ও ওষুধশিল্প খাতে শুল্ক আরোপ করা হবে। তার মতে, এই শুল্কনীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এসব পণ্যের উৎপাদন বাড়বে।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ১৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test