হুথিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পুনরায় ইয়েমেন-ভিত্তিক হুথি গোষ্ঠীটিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে আখ্যা দেওয়ার একদিন পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ এই গোষ্ঠীর সাত জ্যেষ্ঠ সদস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। খবর আল জাজিরার।
মার্কিন রাজস্ব বিভাগ জানিয়েছে, ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সামরিক-গ্রেডের জিনিসপত্র এবং অস্ত্র ব্যবস্থা পরিচালনায় নিয়োজিত রয়েছেন এমন ব্যক্তিরাই নতুন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন।
রাজস্ব বিভাগের প্রধান বেসেন্ট জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার সময় হুথিরা ইসরায়েল এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। কিন্তু গাজায় যুদ্ধবিরতির পর জানুয়ারিতে এই গোষ্ঠী তাদের আক্রমণ স্থগিত করেছে।
এর আগে গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের আবারও ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেন। গত ২২ জানুয়ারি সই করা এক নির্বাহী আদেশে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে নির্দেশ দেন, পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং রাজস্ব মন্ত্রী সঙ্গে পরামর্শ করে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে।
সে সময় হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাইডেন প্রশাসনের ‘দুর্বল নীতি’ হুথিদের সাহস বাড়িয়েছে। এর ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে ডজনখানেক এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে শতাধিক হামলা চালিয়েছে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন তার আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে হুথিদের কার্যক্রম ও সম্পদের উৎস বন্ধ করার নীতি গ্রহণ করেছে। এর ফলে হুথিদের হামলা বন্ধ করে দেওয়া এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদের শেষদিকে হুথিদের ‘বিশেষভাবে মনোনীত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ (এসডিজিটি) এবং ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। তবে, জো বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক সপ্তাহ পরেই এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মানবিক সংকটের কথা উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
বাইডেন প্রশাসন ২০২৪ সালে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ ও নৌবহরে বারবার হামলার জন্য হুথিদের আবারও এসডিজিটি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
মূলত হুথি মুভমেন্ট প্রথম শুরু হয় উত্তর ইয়েমেন থেকে। সেখানের অধিকাংশ মানুষই জায়েদিজম অনুসরণ করেন, যা শিয়া মুসলিমদের একটি শাখা। কয়েক শতাব্দী ধরে জায়েদি ইমামরা ওই অঞ্চলে নিজেদের আদর্শ বাস্তবায়নের চেষ্টা চালায়। ১৯১৮ সালে তারা এক সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এই ইমামরা ১৯৬২ সাল পর্যন্ত শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। সেসময় একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইয়েমেন আরব রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা হয়। পরে সুন্নি অধ্যুষিত এলাকার চেয়ে জায়েদি এলাকা তুলনামূলকভাবে গরিব হয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালের দিকে সৌদি ও ইয়েমেনের সরকার উত্তরাঞ্চলে সুন্নি মতবাদকে প্রোমট করে। এমন পরিস্থিতিতে জোয়েদি মুভমেন্টের আবির্ভাব হয়।
১৯৯০ দশকের দিকে জায়েদি ধর্মগুরু হুসেন আল-হুথি সৌদি সমর্থিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এটি ২০০১ সালের দিকে বিভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু তার অনুসারীরাই হুথি নামে পরিচিত হয়।
ধীরে ধীরে হুথিদের বিরুদ্ধে সমর্থন বাড়তে থাকে, যা হুমকি হয়ে দাঁড়াতে শুরু করে ইয়েমেনের সরকারের জন্য। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলারও সমর্থন করেছিল ইয়েমেনের নেতারা, যা ভালোভাবে নেয়নি ইরাকের জনগণ। তাদের এই ক্ষোভকে পুঁজি করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেয় হুথি। আল-হুথি ইরানের ইসলামিক বিপ্লব ও লেবনানের হিজবুল্লাহ মুভমেন্টকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করেন। গোষ্ঠীটির মূল স্লোগান ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে নির্মূল।
ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলে হুথি বিদ্রোহীদের প্রভাব বাড়তে থাকায় দেশটির সরকার দমনপীড়ন শুরু করে। ২০০৪ সালে সরকারি বাহিনী গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেন আল-হুথিকে হত্যা করে। হুথি বিদ্রোহীদের অস্ত্রের মূল উৎস কালোবাজার ও কিছু সামরিক বাহিনী।
২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক শাখা উত্তর ইয়েমেনের সাদা প্রদেশ দখল করে। নাম দেওয়া হয় আনসার আল্লাহ বা আল্লাহর রক্ষক
এরপর ২০১৪ সালে ইরানের সহায়তায় রাজধানী সানা দখলে নেয় হুথি বিদ্রোহীরা, মূলত তারা পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বো মনসুর হাদী সৌদি আরবে পলিয়ে যান। ২০১৫ সালে তার অনুরোধে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে সৌদি আরব। কয়েক বছরে ২৫ হাজারের বেশি হামলা চালানো হয়। নিহত হয় ১৯ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক।
২০২২ সালের এপ্রিলে দেশটিতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। তারপর থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যদিও চলতি বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘ জানায়, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানবিক সংকটের মুখোমুখি ইয়েমেন। তবে রাজধানী দখলে নেওয়ার পর থেকেই ইয়েমেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নেয় তারা।
হুথি যোদ্ধারে মূল লক্ষ্য ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যু। কিন্তু ইয়েমেনের বাইরে হামলা করার মতো তাদের তেমন কোনো সক্ষমতা নেই। তবে সম্প্রতি তারা ইসরায়েলে হামলা চালানোর মতো ক্ষেপণাস্ত্র হাতে পেয়েছে। তাদের দীর্ঘ পরিসরের ক্ষেপণাস্ত্রটি এক হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানতে পারবে।
এই পরিসরের ক্ষেপণাস্ত্র খুব একটা উদ্বেগের না হলেও লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার বিষয়টি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরানের সহায়তা হুথিদেরকে একটি রাগট্যাগ সেনাবাহিনী থেকে একটি বাহিনীতে রূপান্তরিত করেছে। হুথিদের অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তির সরবরাহ করেছে ইরান।
(ওএস/এএস/মার্চ ০৬, ২০২৫)
পাঠকের মতামত:
- 'আমরা অজেয়, কারণ আমরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত'
- পাংশায় তরমুজের দোকানে অভিযান, দুই আড়তদারকে জরিমানা
- ‘ওয়ান-ইলেভেনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ভুল ছিল’
- পাকিস্তান ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি যুক্তরাষ্ট্রের
- ঈদের পর বাংলাদেশে আসছে জিম্বাবুয়ে
- নারীর অধিকার হুমকিতে, জতিসংঘ মহাসচিব
- একদিনে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের ওমরাহ পালন
- ‘মানুষ খোঁজখবর নেওয়ার আগে জানতে চায় নির্বাচন কবে’
- ‘মানুষকে বিভ্রান্ত করতে খেলাফতের ট্যাবলেট বিক্রি শুরু করেছে’
- বিএনপির ইফতার মাহফিল স্থগিত
- সোনার দাম কমলো
- আশাশুনির ভূমিহীন পল্লীতে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন
- সোনারগাঁয়ে দুই ছিনতাইকারীর বাড়িতে এলাকাবাসীর হামলা ভাঙচুর
- সাতক্ষীরায় চাচার লাঠির আঘাতে ভাতিজার মৃত্যু
- বিএনপি ও যুবদল নেতা দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মারধর, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাটসহ নানা অভিযোগ
- গ্রেনেড-বন্দুক মিললো মুদি দোকানির রান্না ঘরে
- রাজবাড়ীতে নারী দিবসে দুস্থ্য নারীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ
- এবার নানাবাড়ি বেড়াতে আসা মাদরাসা পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা
- রাজবাড়ীতে সহস্রাধিক ট্যাপেন্টাডল ও মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার ২
- সাংবাদিক ও ক্রীড়াবিদ সাদেকুর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার বন্ধের আহবান
- টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে দুদকের অভিযানে
- মাদারীপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও তার ভাইসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩
- রামপাল উপজেলা বিএনপির আহবায়কসহ ২৮ জনকে আসামি করে মামলা
- ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বেগম রোকেয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নানা অনুষ্ঠান
- দিনাজপুরে ট্রাক-মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
- ড. ইউনূস কি জনগণকে পাশে পাবেন না?
- বাংলাদেশের সামনে এখন অনেক কাজ
- রমজানের আগে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন
- তুমি যে সেনা কর্মকর্তার ভাঙা ঘর জোড়া লাগিয়েছিলে, সেই তোমাকে সপরিবারে খুনের উস্কানিদাতা! কী কঠিন হৃদয় তার! এই জন্যই বুঝি তিনি সানগ্লাসে চোখ ঢেকে রাখতেন; চোখ দেখলেও নাকি খুনী চেনা যায়!
- ক্যান্সারের ওষুধ উৎপাদনে রসাটমের নতুন প্রযুক্তি
- নির্ভার, তবুও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ইকবাল হোসেন অপু
- কুষ্টিয়ায় আবারও প্রতীতি বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু শিক্ষার্থী নিহত
- ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- পালং-জাজিরায় দলীয় বিভেদ নিরসন করে চলেছেন অপু
- রাজশাহীতে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ৫
- ‘ছোট ছড়ায় বড় কথা’ শেখ হাসিনার ছড়া
- ঝালকাঠি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থী নিয়ে ব্যাপক আলোচনা
- বাবাকে আজ বড্ড বেশি মনে পড়ছে
- ‘বরেণ্য নারীদের লেখায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ বই প্রকাশ
- যুক্তরাষ্ট্রে নারীর হিজাব খুলে ফেলায় ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
- বঙ্গবন্ধু
- প্রতিবেশীর কাছে জমি কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার কৃষক শাহিদুল
- বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ৩ অতিরিক্ত আইজি
- লিভার রোগের ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজন সচেতনতা
- দুই নারী কসাই, আলোচনা সর্বত্রই!