E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইওলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা, নিরাপত্তাকর্মীদের বাধা

২০২৫ জানুয়ারি ০৩ ১৩:৫৪:৪১
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইওলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা, নিরাপত্তাকর্মীদের বাধা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তার করতে শুক্রবার সিউলে তাঁর বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেছে পুলিশ। তবে তাঁকে গ্রেপ্তারে বাধা দিয়েছে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা। তদন্তকারীরা বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা দলের সঙ্গে ৬ ঘণ্টার নানা নাটকীয়তার পর ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা স্থগিত করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্যেষ্ঠ কৌঁসুলি লি দায়ে হুয়ানসহ তদন্তকারী কর্মীরা কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে অভিশংসিত প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। ইওলের বাসভবনের ভেতরে থাকা সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের প্রতিহত করে। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তাকর্মীরা এর আগেও ইওলের বাসভবনে পুলিশের প্রবেশের চেষ্টা প্রতিহত করেছেন। প্রেসিডেন্টের বাসভবন চত্বরে পুলিশের বেশ কয়েকটি বাস, কয়েক শ পুলিশকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিউলের আদালত ইওলের বাসভবনে তল্লাশি চালানোর জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন।

এর আগে সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর কয়েকদিনের মধ্যে তাকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অভিশংসিত ও পরে বরখাস্ত করা হয়।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুমোদন করেছে বলে দেশটির তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার সিদ্ধান্তের কারণে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে তাকে অভিশংসন এবং ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্বে থাকা দ্য করাপশন ইনভেস্টিগেশন অফিস ফর দ্য হাই-র‍্যাঙ্কিং অফিশিয়ালস (সিআইও) নিশ্চিত করেছে, সামরিক আইন জারিকে কেন্দ্র করে তদন্তকারীদের অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সিউল ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমান কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো। দেশটির বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ সিআইওকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বর্তমান এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং এটি প্রয়োগ করা হলে ইউনকে সিউল ডিটেনশন সেন্টারে আটক রাখা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে ইওলের বাসভবনের সামনে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। ইওলের সমর্থকেরা পোস্টার ও ব্যানার নিয়ে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়েছেন। তারা ইওলকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে স্লোগান দেন। দেশটির দুর্নীতি তদন্তকারী কার্যালয় বলছে, প্রেসিডেন্ট ইউন সুক–ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করা শুরু হয়েছে। তদন্তকারী কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও পুলিশকে ইওলের বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার ইওলের সমর্থকদের সঙ্গে ইওলবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২ হাজার ৭০০ পুলিশ ও ১৩৫টি পুলিশের বাস ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তদন্তকারী কর্মকর্তারা ইওলকে গ্রেপ্তারের পর সিউলের কাছে গোয়াচিওনে তাঁদের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যেতে চান। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিধি অনুসারে তাঁকে সেখানে ৪৮ ঘণ্টা রাখা হতে পারে। তাঁকে হাজতে নিতে আরেকটি পরোয়ানার প্রয়োজন হবে।

চলতি বছরের ৪ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক আইন জারি করেন ইউন। এ সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত করে।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ০৩, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test