E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বছরের প্রথম দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৩

২০২৫ জানুয়ারি ০২ ১৩:০৫:০২
বছরের প্রথম দিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নতুন বছরের প্রথম দিনে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন। এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় নিহতের মোট সংখ্যা ৪৫ হাজার ৫৫০ ছাড়িয়ে গেছে। চলমান বর্বর এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। বুধবার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম দিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় বুধবার কমপক্ষে ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে মেডিকেল সূত্রগুলোর বরাতে জানা গেছে। একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের একটি ফাইটার জেট পূর্ব গাজা শহরের শেজাইয়া পাড়ার একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে আঘাত হানলে দুই নারী এবং তিন শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।

এছাড়া মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েল ড্রোন হামলা চালিয়েছে। মেডিকেল সূত্র অনুসারে, এই হামলায় একজন নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী বুরেইজ এবং নুসেইরাত ক্যাম্পের পূর্ব এবং উত্তর অংশেও গোলাবর্ষণ করেছে, তবে হতাহতের বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

একটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে বিমান হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং শিশুসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজার বেইট লাহিয়া এবং জাবালিয়ায় বাড়িঘর ও আবাসিক ভবন উড়িয়ে দিয়েছে।

দক্ষিণ গাজায়, পূর্ব খান ইউনিসের আল-ফুখারি এলাকায় একটি বাড়িতে বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের (৭ অক্টোবর) হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হামাসের সেই আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় ৪৫ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

ডিসেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ০২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ জানুয়ারি ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test