E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি, টিউলিপকে যুক্তরাজ্যে জিজ্ঞাসাবাদ

২০২৪ ডিসেম্বর ২৩ ১৩:০৩:২০
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি, টিউলিপকে যুক্তরাজ্যে জিজ্ঞাসাবাদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রকল্পে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৫.২ বিলিয়ন ডলার) অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। তদন্তে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে এসেছে। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনার মেয়ে এবং যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী।

এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা অফিসের প্রোপ্রাইটি অ্যান্ড এথিকস টিম (পিইটি)। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দ্য সানডে টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, টিউলিপকে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনি তার অফিসে কর্মকর্তাকে স্বাগত জানান এবং রূপপুর পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন।

দ্য সানডে টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া চুক্তি নিয়ে তার ব্যাখ্যা সরলভাবে গ্রহণ করা হয়েছে এবং তিনি যে সাক্ষাৎকারটি দিয়েছেন, তাতে তার বিরুদ্ধে কোনো সিভিল সার্ভিস তদন্ত হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ব্যাপায়ে টিউলিপ কোনো মন্তব্য না করলেও কেবিনেট অফিস জানিয়েছে, "আগে যা বলা হয়েছিল, মন্ত্রী তার জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি (অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সচিব) এবং সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সচিব হিসেবে তিনি যুক্তরাজ্যের আর্থিক বাজারে দুর্নীতি মোকাবিলা করার দায়িত্বে আছেন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনার সময় মধ্যস্থতা করেন টিউলিপ। যদিও ওই সময় তিনি ব্রিটেনের কোনো সরকারি দায়িত্বে ছিলেন না। সেই বছর চুক্তি সই করার সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং তার খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি ছবি তোলেন।

তার কাছের সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশি ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক পরিচালনার অভিযোগগুলো "ভুয়া" এবং "সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত"। টিউলিপ নিজেকে "রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার" মনে করার কথা পিইটি কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করার সময় জানিয়েছেন।

একটি সূত্রের মতে তিনি বলেছেন, দশ বছর আগে তিনি নিজের খালাকে দেখতে মস্কো গিয়েছিলেন, কারণ রাশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশের চেয়ে সহজ ছিল। তবে শনিবার ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ওই বৈঠকে একটি ১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।

দ্য মেইলে বলা হয়েছে, হাসিনা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন যাতে বাংলাদেশকে রুশ অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হবে। টিউলিপ তখন লেবার কাউন্সিলর ছিলেন এবং ২০১৫ সালে এমপি হন।

একজন দলীয় মুখপাত্র মেইলকে বলেন, "টিউলিপ এমপি হওয়ার দুই বছর আগেই দুই দেশের মধ্যে হওয়া এই চুক্তির সাথে তার (টিউলিপ) কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।"

ডেইলি মেইল রোববার জানিয়েছে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পাঁচজন কর্মকর্তার একটি দল গঠন করেছে। তারা টিউলিপ ও অন্যান্যদের সম্পর্কে "ডকুমেন্টারি প্রমাণ" সংগ্রহ করছে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছে চিঠি পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

টিউলিপের জবাবের ওপর ভিত্তি করে তদন্তকারীরা সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা প্রথম তথ্য রিপোর্ট (এফআইআর) জারি করবেন কি না। এফআইআর জারি করা হলে তিনি একজন আনুষ্ঠানিক সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হবেন এবং বাংলাদেশি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে।

জানা গেছে যে, এখন পর্যন্ত কোনো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ টিউলিপ সিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করেননি। দুদকের তদন্তের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, টিউলিপের প্রতি তার পূর্ণ আস্থা রয়েছেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী এখনও টিউলিপের পক্ষে রয়েছেন।

একটি সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনার সাথে টিউলিপের সম্পর্কের কারণে আরও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন পিইটি কর্মকর্তারা। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে শতাধিক আন্দোলনকারীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test