E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

গাজায় পোলিও টিকা কর্মসূচির মধ্যেই ইসরায়েলের হামলা, নিহত ২৭

২০২৪ সেপ্টেম্বর ০৭ ১২:৪২:২৪
গাজায় পোলিও টিকা কর্মসূচির মধ্যেই ইসরায়েলের হামলা, নিহত ২৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা ভূখণ্ডে চলমান পোলিও টিকা কর্মসূচির মধ্যে বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে একদিনে অন্তত ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
 

শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) গাজা উপত্যকাজুড়ে এ হামলা চালানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ফিলিস্তিনে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাজার সব এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজা সিটিতে বিমান হামলায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। উপত্যকার বৃহত্তম এবং ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবির নুসেইরাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই নারী এবং দুজন শিশু নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে খান ইউনিস, রাফা, জেইতুনের বাসিন্দাও রয়েছেন।

গাজা উপত্যকার শিশুদের জন্য পোলিও টিকাদান কার্যক্রম গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে চলছে। শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানোর কর্মসূচি তত্ত্ববধানে রয়েছে জাতিসংঘের তিন অঙ্গসংগঠন— বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা আনরোয়া। টিকাদান কর্মসূচি শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী এবং হামাস।

এবার টিকাদান কর্মসূচির মেয়াদ ছিল ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ সেপ্টেম্বর। তবে ৩ সেপ্টেম্বর গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফায় আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের দাবিতে কর্মসূচির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কারণ, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে রাফায় অনেক শিশু টিকা পায়নি।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা আনরোয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘গত ১ সেপ্টেম্বর টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য গাজার ১ থেকে ১০ বছর বয়সী সব শিশুকে টিকার আওতায় আনা। ’

এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের জেইতুন শহরতলিতে হামাসযোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করছে। সেখানের বাসিন্দারা বলেছেন, খান ইউনিসের পূর্বে পার্শ্ববর্তী এলাকায় এবং মিশরের সীমান্তের কাছে রাফাতে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্কগুলো এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে টহল দিচ্ছে ও বেশ কয়েকটি বাড়ি উড়িয়ে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গত ১১ মাসে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বাহিনীর এই বর্বরতা থামাতে মাসের পর মাস ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধাবসান ও শান্তি স্থাপনে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার প্রায় সবই ব্যর্থ।

একাধিক দফা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারেনি। গাজায় বন্দি ইসরায়েলি ও বিদেশি জিম্মিদের ছাড়াতে এবং ইসরায়েলে জেলে থাকা অনেক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test