পৃথক সচিবালয় চেয়ে প্রধান বিচারপতির চিঠি
স্টাফ রিপোর্টার : বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় চেয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আজ রবিবার দুপুরে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের পাবলিক রিলেশন অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বায়নের এই যুগে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোতে সাংবিধানিক বিধিবিধানের আলোকে সরকার তথা নির্বাহী বিভাগের একচ্ছত্র ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির প্রয়োগ ও চর্চার বিষয়টি সর্বজনবিদিত। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার পৃথকীকরণ কার্যকররূপে বাস্তবায়িত না হলে রাষ্ট্রে সংবিধানের সুসংহত চর্চা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এর ফলে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগসমূহের মধ্যে ক্ষমতার সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখার যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা একদিকে যেমন ব্যহত হয়, তেমনি সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ একটি সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও আমাদের দেশে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে, দীর্ঘদিন ধরে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব প্রয়োগের প্রবণতার যে চর্চা অব্যাহত রয়েছে তা রোধ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, এর ফলে স্বাধীনতার পর হতে অদ্যাবধি আমাদের দেশে আইনের শাসন ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা চর্চার সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ, আমাদের সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নিশ্চিতকরণকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
তাই দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের সংবিধানে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক রাখার কথা বলা হলেও সমকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতায় এদেশে বিচার বিভাগের কার্যকর পৃথকীকরণ অসম্পূর্ণই থেকে গিয়েছে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, এমন একটি প্রেক্ষাপট সত্ত্বেও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৭৯/১৯৯৯ নম্বর সিভিল আপিল মামলার রায়ে (যা মাসদার হোসেন মামলা নামেই অধিক সমাদৃত) নির্বাহী বিভাগ হতে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের পূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরার মাধ্যমে আমাদের দেশে ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির বাস্তবায়নের পথকে সুগম করে দিয়েছে। উক্ত রায়ে ক্ষমতার পৃথকীকরণের যে রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে তার অন্যতম মৌলিক ভিত্তি হলো দেশের বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা। মাসদার হোসেন মামলার রায়ে একাধিকবার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের প্রসঙ্গ এসেছে।
আর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের সর্বোত্তম কার্যকর উপায় স্বাধীন বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা। এ কারণে উক্ত মামলার রায়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বর্তমানে প্রচলিত দ্বৈত-শাসন কাঠামো তথা অধস্তন আদালতের বিচারকগণের নিয়োগ, বদলি, শৃঙ্খলা প্রভৃতি বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের যে যৌথ এখতিয়ার রয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে বিলোপ করে বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠাকে ক্ষমতার পৃথকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করেছে।
এ কথা সত্য যে, বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক সরকারের অনীহার কারণে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ সম্ভবপর হয়নি। এ কারণে বিগত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বর্তমান সময় হচ্ছে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের শ্রেষ্ঠ সময়। এ প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে নির্বাহী বিভাগ হতে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা। কেননা, কেবল পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আমাদের দেশে দক্ষ, নিরপেক্ষ ও মানসম্পন্ন বিচার কাজের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
আমাদের সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদে হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি অধস্তন আদালতের বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট তথা হাইকোর্ট বিভাগকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।
কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগের এই তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ নিরঙ্কুশ নয়। কেননা বিদ্যমান কাঠামোতে আইন মন্ত্রণালয় হতে অধস্তন আদালত-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাব আসার পর হাইকোর্ট বিভাগ তার তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগ করে থাকে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের মর্ম অনুসারে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ হাইকোর্ট বিভাগের একচ্ছত্র অধিকার। তাই সাংবিধানিক এই বাধ্যবাধকতা সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক।
এ ছাড়া, বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মামলার সংখ্যা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি, অধস্তন আদালতের বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মপরিধি পূর্বের তুলনায় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলেও বিচার বিভাগের জন্য পৃথক একটি সচিবালয় স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।
তাই সার্বিক বিশ্লেষণে শুধু পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই অধস্তন আদালতের বিচারকগণের শৃঙ্খলা, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি এবং অন্যান্য বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০২৪)
পাঠকের মতামত:
- যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উলামায়ে দেওবন্দের ভূমিকা বেশি
- ‘আমার ক্লিনিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে’
- যশোরে প্রতিবেশির জমি দখলের অভিযোগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে
- সোনারগাঁয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভবন ও স্কুলের জায়গা দখলের প্রতিবাদে কানকাটা মতিনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
- পঞ্চগড়ে ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
- দেশের অন্তত আড়াই লাখ শিশু ক্রনিক কিডনি রোগে ভুগছে
- ‘১৬ বছরে দেড় লাখ মামলায় ৬২ লাখ আসামি’
- বাফুফে নির্বাচনে আলীগ নেতার জয়, ঝিনাইদহে বিক্ষোভ
- ‘এ সমাজে প্রতিটি হত্যার বিচার হবে’
- নাটোরে ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির মায়ের দাফন সম্পন্ন
- ‘ঐক্যবদ্ধ চেতনার কারণেই ৩৬ শে জুলাই’
- ‘দেশ ও জনগণের মুক্তির জন্য আমাদের সংগ্রাম কখনো থামবে না’
- সাতক্ষীরার জাকির হোসেন হত্যা মামলার এজাহার ও আদালতের আদেশ ফেরত
- পাংশায় অবৈধ অস্ত্রসহ একজন গ্রেফতার
- শ্রীমঙ্গলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা উন্মুক্ত টেপ টেনিস ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
- দিনমজুর থেকে শত কোটি টাকার মালিক যুবলীগ নেতা বেলাল
- ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ টাওয়ারের নিচে মিললো সেই যুবকের দেহাবশেষের হাড়গোড়
- পৃথক সচিবালয় চেয়ে প্রধান বিচারপতির চিঠি
- বালিয়াকান্দিতে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতির কাছে পাওনা আদায়ে প্রধান শিক্ষকের আবেদন
- খুলনা-বরিশাল বিভাগের ৭টি মালিক সমিতিকে যাত্রীদের চাহিদা বিবেচনায় বাস চালানোর আহ্বান
- বাগেরহাটে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
- বদলে গেল মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম
- সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক নয়, হাইকোর্টে রুল
- বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ও ডিসির প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল
- মোংলায় যৌথ অভিযানে অস্ত্র-মাদকসহ আটক ২
- `শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়'
- নিয়ামতপুরে জামায়াতে সাবেক আমিরসহ গ্রেপ্তার ২
- ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত’
- গোপালগঞ্জে পূজা মন্ডপে দায়িত্ব পেতে দিতে হয়েছে উৎকোচ!
- বেশি দামে ডিম বিক্রি করায় দুই আড়তদারকে জরিমানা
- হোমনায় মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধারা পাকসেনাদের বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসিক অভিযান চালায়
- রাণীশংকৈলে সনার্তন ধর্মাবলম্বীদের সাথে জামায়াতের সম্প্রীতি সমাবেশ
- ‘আন্দোলনে আহতদের প্রয়োজনে চীনে নেওয়া হবে’
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৮৭৫
- শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সাঈদীর মৃত্যুর দোয়া চাওয়ায় ইমাম গ্রপ্তার
- কালিয়া হরিপুর অ্যাম্বুস
- বগুড়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
- ধামরাইয়ের সন্ধ্যা জুয়েলার্সে দুর্ধষ চুরি
- শ্রীমঙ্গলে পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষ, আহত ৫
- ধামোরের এসিআই নদী ঘেরায় ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
- নওগাঁয় ব্র্যাকের কৈশোর বান্ধব ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
- ‘জাতির জনকের আদর্শ কর্মে পরিণত করতে হবে’
- অ্যান্ড্রয়েড ফোন হারিয়ে গেলে খুঁজে পাবেন যেভাবে
- আগৈলঝাড়ায় পৃথক ঘটনায় আটক ৪
- চকরিয়ায় শেখ হাসিনা বই মেলা শুরু হচ্ছে কাল
২৭ অক্টোবর ২০২৪
- সাতক্ষীরার জাকির হোসেন হত্যা মামলার এজাহার ও আদালতের আদেশ ফেরত
- পৃথক সচিবালয় চেয়ে প্রধান বিচারপতির চিঠি
- সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক নয়, হাইকোর্টে রুল
- খালেদা জিয়াসহ ৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ৫ নভেম্বর
- রিমান্ড শেষে কারাগারে ব্যারিস্টার সুমন
- সাবেক ১০ মন্ত্রী-সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ