E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

অবশেষে ভন্ড সাধক ও প্রতারক আমিনুল কবিরাজ জেলহাজতে

২০২৪ অক্টোবর ০৭ ১৭:৪২:২০
অবশেষে ভন্ড সাধক ও প্রতারক আমিনুল কবিরাজ জেলহাজতে

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : ভন্ড আধ্যাত্মিক সাধক-পীর, প্রতারক কবিরাজ হাফেজ মো. আমিনুল ইসলামকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার এজাহারভুক্ত মামলার আসামি আমিনুল ইসলাম কবিরাজকে (৪০) বিক্ষুব্ধ জনতা আটক করে গণধোলাই দিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশে সোপর্দ করে।
গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ আজ সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করেছে।

গ্রেফতারকৃত আমিনুল কবিরাজ সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের কোম্পানি মোড় এলাকার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী রাহুল ইসলাম হত্যার মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, মাদক বাণিজ্য, জোর করে ভূমি দখল,প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, ভন্ড আধ্যাত্মিক সাধক-পীর প্রতারক আমিনুল ইসলাম অলৌকিক ক্ষমতা এবং কবিরাজি চিকিৎসার আড়ালে চালাতেন মাদক ব্যবসা, দেহব্যবসাসহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রম। গড়ে তুলেছিলেন,বিশাল অপরাধের নেটওয়ার্ক। হয়ে বসেছিলেন অপরাধীদের গডফাদার। কেউ প্রতিবাদ করলে বা মুখ খুললে দিতেন মিথ্যা মামলা, করতেন মারধর। আবার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে।যাদেরকে দিয়ে মাদক ব্যবসা, দেহ ব্যবসা,জোর করে ভূমি দখল, মারধরসহ নানান কার্যক্রম করতেন।

মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়, যাদু-টোনা করে হয়রানি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বসতবাড়ি দখলের অভিযোগে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার আটক হয় আমিনুল। জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ,র‍্যাব অভিযান চালিয়েও তাকে আটক করে জেল-হাজতে পাঠায়। কিন্তু ক্ষমাশীল আওয়ীলীগের কতিপয় নেতাদের সহযোগিতায় আমিনুল ছাড়া পেয়ে যায়।

আমিনুল ইসলামের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিচারের দাবিতে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।

ক'দিন আগে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে স্মারক লিপি দেয়া ছাড়াও কোম্পানির মোড়ে বিশায় মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। এসময় তারা অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম কবিরাজের শাস্তি দাবি করেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে যাদু টোনা করে মানুষকে হয়রানি করতেন আমিনুল। এলাকায় কেউ প্রতিবাদ করলে ছিনতাই, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ আদায় করতেন।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয়ে অনেকের বসতবাড়ি, জায়গাজমি দখল করেছেন। তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ওই এলাকার মোখলেছুর, আবু-বক্কর, আনোয়ার, মিনারা, আছমা, মোহনা, আলেখজানসহ তার পরিবারের সদস্যরাও জড়িত।

আমিনুল ইসলাম ও তার সহযোগী সাতজনের বিরুদ্ধে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই এলাকার আব্দুল লতিফ নামে এক ভুক্তভোগী।

রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন স্থানীয়রা। তার অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা। এ সময় পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয়রা আমিনুল কবিরাজকে শহরের বড়মাঠ এলাকায় ধরে ফেলেন। পরে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এ বিষয়ে দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন জানান, স্থানীয়রা আমিনুল কবিরাজের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তাকে ধরতে তৎপর হয় পুলিশ। এর মধ্যেই স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে।

উল্লেখ্য, আমিনুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার এজাহারভুক্ত মামলার আসামি। তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করেছে।

(এসএস/এসপি/অক্টোবর ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২২ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test