E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

২০১৮ সালে চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা

সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাত হোসেনসহ ৭ পুলিশ কর্মকর্তার নামে মামলা

২০২৪ অক্টোবর ০২ ১৮:২৮:২২
সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাত হোসেনসহ ৭ পুলিশ কর্মকর্তার নামে মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : কাগজপত্র বিহীন খাবার পানির ব্যবসা করতে দাবিকৃত দুই লাখ টাকা চাঁদা না দিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করায় ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি গ্রামের পাট ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদকে বাড়ি থেকে তুলে এনে সদর উপজেলার বাঁশদহা গ্রামের কয়ারবিলে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের পিতা আবুল কাশেম মন্ডল বাদি হয়ে সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাত হোসেনসহ সাত পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলা (পিটিশন-৭)দায়ের করেন। বিচারক চাঁদ মোঃ আব্দুল আলীম আল রাজী নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারন) আইন ২০১৩  এর ৫(৫) ধারা অনুযায়ী ডিআইজি খুলনাকে একই আইনের ২(৩), ২(৪),২(৫), ২(৭), ৭(১), ৮(১), ১৩(১), ১৩(২) ও ১৪(১) ধারাসহ উল্লেখিত আইনে বর্ণিত ধারার আলোকে তিনি নিজে অথবা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পদমর্যাদার নীচে না এমন কোন পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগের তদন্ত করে ২০২৫ সালের পহেলা জানুয়ারীর মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুল করিম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অন্যান্য প্রধান আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের তৎকালিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ হোসেন, গোায়েন্দ পুলিশের তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন, গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালিন উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান, উপপরিদর্শক রাজু ও সহকারি উপপরিদর্শক মাফুজ হোসেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি চারাবাড়ি গ্রামের আবুল কাশেম ম-লের ছেলে আবুল কালাম আজাদ পাট ব্যবসার করেতন। ২০১৮ সালে তিনি বিশুদ্ধ খাবার পানি প্রস্তুত ও সরবরাহের নতুন ব্যবসা সংযোজন করেন। ২০১৮ সালের ১২ জুলাই সন্ধ্যা সাতটায় গোয়েন্দা পুৃলিশের উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান ও রাজু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহারিয়ার এর সঙ্গে কথা বলার নাম করে বাড়ি থেকে আবুল কালাম আজাদকে ডেকে নিয়ে তাদের অফিসে নিয়ে যান। রাতে ফিরে এসে কালাম মামলার বাদিকে জানায় যে কাগজপত্র বিহীন পানির ব্যবসা করায় তাকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। একপর্যায়ে ১৩ জুলাই বিষয়টি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার ও সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারকে অবহিত করা হয়। ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান, উপপরিদর্শক রাজু ও সহকারি উপপরিদর্শক মাফুজ একত্রে আবুল কালামকে বাড়ি থেকে তুলে আনেন।

তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করে কোন লাভ হবে না উল্লেখ করে তারা বলেন, চাঁদার টাকা পুলিশ সুপার, সহকারি পুলিশ সুপার ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভাগ দিতে হয়। পরে কালামকে একটি সাদা জিপ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ১৪ জুলাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কলারোয়া থানা, সদর থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে যেয়ে কালামকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই দিন রাত ১০টার দিকে উপপরিদর্শক মিজানু ও রাজু বাদির বাড়ি যেয়ে ক্রসফায়ারের হাত তেকে বাঁচানোর জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় চলে যায় তারা। একপর্যায়ে ১৪ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাত দেড়টার মধ্যে আবুল কালামকে সদর উপজেলার বাঁশদহা কয়ারবিলে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। ১৫ জুলাই সকালে বাদি জানতে পারেন যে, কয়ার বিলে ছেলে কালাম ও দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গ থেকে কালামের লাশ নিয়ে রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় ও বর্তমানে অনুকুল পরিবেশ তৈরি হওয়ায় এ মামলা দায়ের করা হলো।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ০২, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৩ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test