E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

চলচ্চিত্রে অনুদান প্রস্তাবের বিজ্ঞাপনে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ উধাও

২০২৫ মার্চ ০২ ০১:০১:০২
চলচ্চিত্রে অনুদান প্রস্তাবের বিজ্ঞাপনে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ উধাও

বিনোদন ডেস্ক : সরকারি অনুদানে পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য যে প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছে, ওই বিজ্ঞাপনে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটি উধাও। এর বদলে তাতে পাওয়া গেছে ‘সকল রাজনৈতিক অভ্যুত্থান’, ‘আন্দোলন’ ও ‘বিপ্লব’ শব্দ ও শব্দবন্ধ।

গত বছরও অনুদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সিনেমাকে ‘বিশেষ’ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক শাখার জন্য ৭৫ লাখ টাকা করে দুজন প্রযোজক ও পরিচালককে অনুদান দেওয়া হয় দেড় কোটি টাকা। মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক শাখা ছাড়াও গত বছরের অন্য শাখাগুলো ছিল শিশুতোষ, প্রামাণ্যচিত্র ও সাধারণ শাখা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের অনুদানের শর্তের ৯ নম্বর শর্তে বলা হয়, প্রস্তাবিত গল্প ও চিত্রনাট্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, শিশুতোষ, সাধারণ শাখা না-কি প্রামাণ্যচিত্র তা আবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এ বছর, অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শর্তাবলীর ওই জায়গায় অনুদানের শাখাগুলির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রস্তাবিত গল্প, চিত্রনাট্য ও প্রামাণ্যচিত্রটি শিশুতোষ রাজনৈতিক ইতিহাস/আবহমান বাংলার সকল রাজনৈতিক অভ্যুত্থান, আন্দোলন ও বিপ্লব যা এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের নিয়ামক সংক্রান্ত/সাংস্কৃতিক ইতিহাস তথা বাংলার ঐতিহ্য, মিথ ও ফোকলোর সংক্রান্ত কি-না তা আবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

তবে সিনিয়র সহকারী সচিব মোছাঃ শারমিন আখতার স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞাপনে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে ‘বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠীর আবহমান সংস্কৃতি’, ‘বহুস্বর’ এর মতো শব্দবন্ধ ও শব্দাবলী, যা বিগত দিনের চলচ্চিত্রে সরকারি চাহিদার হালনাগাদ ভাবনা বলে বিবেচনা করা যায়।

ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসেন মামুন বলেন, ‘আদর্শিক কারণেই সরকারি অনুদান চালু করা হয়েছিল। চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে টিকতে হলে দেশে গুণগত মানসম্পন্ন ও ভিন্ন ধরনের ছবি হওয়া দরকার, যা বাণিজ্যিক ধারায় হওয়া কঠিন। প্রযোজকেরা তাতে লগ্নি করতে চাইবেন না। শিল্পধর্মী ছবির জন্য পৃথিবীর সব জায়গায় সরকারের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা থাকে। বাংলাদেশে সেটা ছিল না। চলচ্চিত্র সংসদকর্মীরা সেই দাবি করে, সরকার তা চালু করে। তখনই একটা অগ্রাধিকার ছিল, মুক্তিযুদ্ধ অবলম্বনে মানুষের ত্যাগের গল্প তুলে ধরা। সেটা বাণিজ্যিকীকরণ করলে আর মুক্তিযুদ্ধ থাকবে না। সে বিষয়ে অগ্রাধিকারও ছিল সব সময়। এখন কি থাকবে না? যদি না থাকে, যারা সেটাকে তুলে দিচ্ছেন, তারা কি মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতে চান না বা এড়িয়ে ভিন্ন কিছু করতে চান? সেটা হয়তো আমাদের কাঙ্ক্ষিত নয়।’

উল্লেখ্য, সদ্য শেষ হওয়া বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশ কিছু বই। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও সেটি অব্যাহত রাখা জরুরি বলে মত দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের ভাষ্য, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাধীন নির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের ব্যতিক্রম, নতুন ও আপাত অবহেলিত বয়ান উঠে আসতে পারে। সেই বিবেচনায় এই শাখাটিকে বহাল রাখা যেতে পারে।

(ওএস/এএস/মার্চ ০২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

০৬ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test