একদিনের বাঙালি: সংস্কৃতির মৌসুমি মুখোশ
মীর আব্দুর আলীম এই একদিনের বাঙালিয়ানা,একদিনের খেইল, একদিনের পান্তা ইলিশ, একদিনের ‘সনাতন চেতনা’-তার পরে আবার প্রগতি স্মার্টনেসে ফিরে যাওয়া। এবারও ব্যাতিক্রম নাই। বৈশাখ নিয়ে হৈ চৈ হয়েছে। বৈশাখ শেষ সবাইই শান্ত হয়ে গেছে। বৈশাখী উম্মাদনা নেই। বৈশাখ শেষ হতেই আবার পুরনো রূপে ফেরা। গাঁয়ের গন্ধ ধুয়ে মুছে স্যানিটাইজড শহুরে চেহারায় ফেরা। হ্যান্ডওয়াশে ধোয়া হাতে কফি ধরেছি, মুখে “আসলে আমার কালচারাল রুটস কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল” টাইপ কথা। পান্তা? উহু, ওইটা গরিবের খাবার। এখন ‘সুশি’ চলবে, ‘পাস্তা’ ভালো, ‘থাই’ হচ্ছে ‘hi-class’।
বছরের ৩৬৪ দিন আমরা কফি খাই স্টারবাক্সে, আর একদিন হুট করে চিৎকার করে উঠি-“কোথায় পান্তা? গামছা কই?” পহেলা বৈশাখ এলেই হঠাৎ ‘মধ্যরাতের বাঙালি’রা জেগে উঠে। এক রাতেই ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে পান্তা-ইলিশের সেশন, বেনারসী শাড়ি আর সাদা পাঞ্জাবির পাহাড়। ভোরবেলা রমনা বটমূলে গিয়ে “এসো হে বৈশাখ” বলে গলা ফাটানো হয়।
আমরা মুখোশে অভ্যস্ত। আজকাল আত্মপরিচয়ও ‘সিজনাল’ হয়ে গেছে। পয়লা বৈশাখ মানেই এখন পান্তা ইলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ফ্রেমে বাঁধানো স্মাইল, একটুখানি লোকজ ঢঙ। কিন্তু প্রশ্ন হলো—পান্তা-ইলিশ তো গরিবের খাবার ছিল, আজ তা গুলশানের ডিনারে কেমনে উঠল? মাটির সানকিতে সাজিয়ে দিলে কি ইতিহাসের ক্ষুধা মিটে? আসলে আমরা এখন ‘ইভেন্ট বাঙালি’।
মুশকিল হলো, এরা বাঙালি না হলে কী? ইংরেজও না, আবার আমেরিকানও না। এরা এক ধরণের ‘বিউটি পার্লার বাঙালি’—চুলের গোড়ায় এখন গন্ধরাজের তেল নেই, আছে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট। ভাষায় ‘থ’, ‘ষ’ মরে গেছে, এখন শুধু ‘awesome’, so ‘aesthetic’। আর মনটা? মনটা রয়ে গেছে সেই একদিনের বাঙালি। যেটা বৈশাখে গর্জায়, আর বাকি দিনে ঘুমায়। আসলে বাঙালি হওয়া একটা দিন না, এটা একটা চর্চা। পান্তা-ইলিশ খাওয়া বাঙালিয়ানার চূড়ান্ত পরিচয় না, বরং রিকশাওয়ালার কষ্ট বুঝে পাশে দাঁড়ানো, কিংবা গ্রামের মা’র কাছে ফিরে গিয়ে “মা, সেই নারকেল-ডাবের সন্দেশটা বানাবি তো?”-এই হোক বাঙালিয়ানা। তা না হয়ে এখন যা হচ্ছে, তাতে বলা যায়-“একদিন বাঙালি ছিলাম রে... এখন তো ডেলিভারি অ্যাপে ধইরা খাই!”
পহেলা বৈশাখ-শুধু একটি দিন নয়, এটি বাঙালির অস্তিত্বের প্রতীক। আমাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ভাষা ও ইতিহাসের আত্মপরিচয়ের দিন এটি। অথচ বর্তমান সময়ে এই দিনটিকে ঘিরে উদযাপন যতটা জাঁকজমকপূর্ণ, এর গভীরতা ততটাই প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা কি সত্যিই বাঙালিয়ানাকে ধারণ করছি, নাকি এই বিশেষ দিনে কেবল বাহ্যিকভাবে তা প্রদর্শন করছি? সারা বছরের নিরবতা ভেঙে হঠাৎ করে একদিন বাঙালি সাজা কি আমাদের সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ? এ প্রশ্ন ভাবার সময় এসেছে।
এক সময় বৈশাখ মানেই ছিল গ্রামের খোলা মাঠে বসা বৈশাখি মেলা। বাবা-দাদার হাত ধরে মেলার মাঠে গিয়েছি-হাতে বায়স্কোপ, পুঁতির মালা, বাঁশির সুর, আর কাঁচের চুড়ির ঝমঝম। মেলার ভেতরে নাগরদোলা আর পুতুলনাচের এক অন্য জগৎ। ঢেঁকি ছাঁটার খেলা, গরুর দৌড় প্রতিযোগিতা, লাঠিখেলা-সব মিলিয়ে এক প্রাণবন্ত, লোকজ উৎসব। মেলার পাশে খোলা আকাশের নিচে বসত হালখাতার আয়োজন-নতুন খাতা খুলে দোকানদার কাস্টমারদের মিষ্টিমুখ করাত। গাছতলায় বসে যাত্রাপালা চলত, যার ভাষা, সুর ও ছন্দে ছিল এক অবিস্মরণীয় বাঙালিয়ানা। আজ সেই মেলাগুলো বিলুপ্তির পথে, আর শিশুদের জন্য সেই অভিজ্ঞতা গল্প হয়েই রয়ে গেছে।
বছর ঘুরে বৈশাখ আসে, আর আমরা ক্ষণিকের বাঙালি হয়ে যাই! বাঙালি হতে দিগ্বিদিক ছুটি। পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরে তো হাঁটার জায়গাও থাকে না। বাঙালি হতে অনেকেই ঘর থেকে ছোটেন পহেলা বৈশাখের এই দিনে। আমি আবার একদিনের বাঙালি হতে চাই না। বৈশাখের ওই বিশেষ দিনটাতে সকালে পান্তা, শুঁটকি ভর্তা, ইলিশ খাই না। ওসব বছর ধরেই খাই। শহরে থাকলেও শরীর থেকে গাঁয়ের (গ্রামের) গন্ধ মুছে যায়নি এখনও; মন থেকে মুছে ফেলিনি বাঙালিয়ানা। ঘণ্টা, মাস, বছর ধরেই নিজেকে বাঙালি ভাবি। পূর্বপুরুষ তো যথার্থই বাঙালি ছিল। চিন্তা, পরের প্রজন্ম নিয়ে। আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব আর বিদেশি মিডিয়ার সর্বগ্রাসী দৌরাত্ম্যে দিন যত গড়াচ্ছে, ভাবি ছেলেগুলো বাঙালি থাকবে তো? ভিনদেশি দাপটে ওদের বাঙালি রাখাই তো কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘরে কখনো মুড়িমুড়কি, কড়িমুড়ালি, নিমকি কিংবা জিলাপি এনেছিতো আমার ছোট ছেলেটা ভেংচি কাটে। ওদের এগুলো মোটেও পছন্দ নয়। বড় ছেলেটাতো বলেই ফেলে, বাবা এগুলো ব্যাকডেটেড খাবার। রাগ করি না। ভাবি ওদের কি দোষ? আমরাই তো ওদের সাহেব বানিয়ে ফেলেছি। ওরা বলে পান্তায় নাকি লাখ লাখ ব্যাক্টেরিয়া জন্মে। আমার দাদা সুবেদ আলী মীর তো এগুলো খেয়েই ১শ ২২ বছর পার করেছেন। মৃত্যুর আগে কোন রোগবালাই দেখিনি। হাসপাতালে যাননি কখনও। জীবনের শেষ দিনের সকালেও বিনে চশমায় পত্রিকা পড়েছেন। তিনি পাট ব্যবসায়ী ছিলেন। অর্থকড়ির কমতি ছিল না। তবুও তার খাবার তালিকায় ছিল কেবলই বাঙালি খাবার। বিচিকলা, বাঙ্গী, খিরাই, মিষ্টি আলু, ডাল, ভাত ছিলো প্রিয় খাবার।
আমার গিন্নী মাঝে-মধ্যে মোরগ পোলাও কিংবা কাচ্চি বিরিয়ানী পাকালে বলতেন, “ওসব ছাইপাশ দিওনা, ভাত দাও।” ভাতের মতই সোজাসাপটা কথা দাদার। বাবার মাঝেও ভাব দেখিনি কখনও। বাঙালি মেজাজেই চলেছেন শেষ দিন পর্যন্ত। খাবার-দাবারেও ছিলেন তিনি ষোল আনা বাঙালি। দিন যত গড়াচ্ছে ভাবি, ছেলেগুলো বাঙালি থাকবে তো? ভিনদেশি দাপটে ওদের বাঙালি রাখাইতো কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরে-বাইরে কোথাও বাঙালিআনা নেই। পাশ্চাত্য ঢং সবখানে। পোশাকে, খাবারে, চলাফেরা সবখানেই ভিনদেশি ভাব। কি সাহিত্যে, কি চলচ্চিত্রে সব জায়গায়ই বাঙালি হটাও মনোভাব।
আধুনিক ঢাকায় বৈশাখ মানে রমনার বটমূলে ছায়ানটের গান। সকালে সাদা পাঞ্জাবি-লাল পাড়ের শাড়িতে সজ্জিত মানুষ ঢল তোলে এই ঐতিহ্যবাহী স্থানে। “এসো হে বৈশাখ” ধ্বনিতে মুখরিত হয় চারপাশ। তবে এই আয়োজনও অনেকের জন্য এখন ছবি তোলার স্পট বা সেলফি স্টেশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গান হয়, কিন্তু মনোযোগ কম। সেখানে ‘চেতনার প্রকাশ’ কম, ‘দেখানোর চেষ্টা’ বেশি। রমনার আশেপাশে এখন আর সেভাবে বই কিংবা পুতুল কিনতে পাওয়া যায় না, বরং ফুড কোর্ট আর ব্যান্ড শোর হুল্লোড় বাড়ছে। লাল-সাদা জামার নিচে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতির গভীরতা। আগে বৈশাখের আগের দিন থেকেই বাড়িতে চলত পরিষ্কারের ধুম। দাদী-মা হাতে আল্পনা দিত উঠানে।
মা নিজ হাতে বানাতেন চিতই পিঠা, মুড়ি-মুড়কি, আর খেজুর গুড় দিয়ে পান্তা ভাত। পান্তার পাশে থাকত ইলিশ বা শুঁটকি ভর্তা। কাপড় ইস্ত্রি করা থাকত আগের দিনই, যাতে সকালে উঠে সবাই স্নান করে, নতুন জামায় বৈশাখ পালন করতে পারে। এখন অবশ্য জামা-কাপড় কিনে ফেলা হয় এক সপ্তাহ আগে থেকেই, এবং মেন্যু ঠিক হয় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার মতো করে। ঘরোয়া সেই আত্মিক প্রস্তুতির জায়গা নিয়েছে ক্যাফে, ফুড ফেস্ট আর পারফেক্ট ইনস্টাগ্রাম ছবি তোলার তাড়া। আজকের প্রজন্ম অনেকেই পান্তাকে ‘ব্যাকডেটেড’ ভাবছে। কেউ বলে এতে ‘লাখো ব্যাক্টেরিয়া’। অথচ আমাদের দাদা-নানারা এই খাবার খেয়েই শতায়ু হয়েছিলেন। এখন ঘরে মুড়ি, খিরাই, মিষ্টি আলু, বা বিচিকলা আনলে অনেকেই নাক সিঁটকায়। এর দায় কি কেবল ছেলেমেয়েদের, নাকি আমরাই ওদের সাহেব বানিয়ে ফেলেছি?
নববর্ষ এলেই শুরু হতো ঘরদোর ধোয়া-মোছার ব্যস্ততা। ছোট-বড় সবাই মিলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় হাত লাগাতো। যেন নতুন বছরের আগমনে পুরনো সব জঞ্জাল ঝেড়ে ফেলে এক নতুন শুভ সূচনার প্রস্তুতি। উঠান ঝাঁট দেওয়া, জানালার কাঁচ মুছে ঝকঝকে করা, বিছানার চাদর পরিবর্তন, এমনকি পুরনো পেঁচানো আলমারিও খুলে ঝেড়ে ফেলা হতো। সেই সঙ্গে চলত গাছপালায় পানি দেওয়া, টব পরিপাটি করে সাজানো—সবমিলিয়ে একধরনের আত্মিক আনন্দ মিশে থাকত এই প্রস্তুতিতে। আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে মেলা দেখা ছিল এ উৎসবের অনিবার্য অংশ। দূর-দূরান্ত থেকে আপনজনেরা এসে জমায়েত হতেন বাড়িতে। কেউ আসতেন গরুর গাড়িতে, কেউবা রিকশা-ভ্যানে করে। কুশল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে মিশে যেত দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতির শূন্যতা।
দাওয়াত দেওয়া, একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া, গল্পগুজব, পুরনো স্মৃতি রোমন্থন—সবকিছুতেই একধরনের ঘরোয়া মমত্ব ও সামাজিক সংহতির ছোঁয়া থাকত। অনেকটা যেন হৃদয়ের আলিঙ্গন হতো সবার সঙ্গে। গানের আসর মানেই ছিল লালনের ভাবগম্ভীরতা, রবীন্দ্রনাথের সূক্ষ্ম আবেগ, আর হাছন রাজার অন্তরস্পর্শী কথা। রাতের বেলা উঠানে বসে একতারা হাতে গান গাওয়া হতো। কেউ একতারা বাজাতো, কেউ দোতারা, আবার কারও হাতে থাকত ঢোল কিংবা খঞ্জনি। সেইসব গান ছিল আত্মার সাথে কথোপকথন, কেবল বিনোদন নয়—ছিল একধরনের আত্মদর্শন। অনেক জায়গায় তখন লোকগানের দল আসত, তারা বাড়ির উঠানে বসে গেয়ে যেত “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি” বা “কে তুমি নন্দিনী”-এসব চিরায়ত বাণী।
শহুরে ফ্ল্যাটে ‘বৈশাখ স্পেশাল’ প্যাকেজের নামে অর্ডার করা খাবার। ডিজে সাউন্ডে ফিউশন গান—লালনকেও তুলে ধরা হয় ড্রামের তালে। ‘বৈশাখি ফ্যাশন’ মানে বিদেশি ডিজাইনের অনুকরণ। লোকজ আনন্দকে প্রতিস্থাপন করছে ব্যান্ড কনসার্ট ও ফ্যাশন শো। বর্তমান সময়ে বৈশাখ মানেই যেন কৃত্রিম আনন্দ। হাছন রাজার গানেও গিটার-বাঁশির মিশ্রণ, লালন সাঁইয়ের গানেও পাশ্চাত্য সুরের হস্তক্ষেপ। বাংলা গানের আত্মিকতা হারিয়ে যাচ্ছে “আউ আউ মার্কা” টিভি গানের ভিড়ে। আমাদের উত্তর প্রজন্ম বাংলা গান, নাচ ও নাটকের স্বাদ নিতে নিচ্ছে বিদেশি ফিল্টার। বৈশাখের গান এক সময় ছিল আত্মার খোরাক। বাউল, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি—সব ছিল আমাদের মাটি ও মানুষের গান। আজ সেই গানও ডিজে সংস্কৃতির মোড়কে পরিবেশিত হচ্ছে। গিটার ও সিন্থেসাইজারে লালন কীভাবে টিকে থাকবে? এই ‘মডার্নাইজেশন’ কি সংস্কৃতির পরিপোষক, না ভাঙন?
আগে বৈশাখ মানেই ছিল গ্রামীণ খাবার: পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, বেগুন ভর্তা, শুঁটকি ভুনা, আর গুড়ের পায়েস। এখন অনেকেই স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে এগুলো পরিহার করছেন। অথচ এই খাবারগুলো কেবল খাবার নয়, সংস্কৃতির অংশ। এর জায়গা নিচ্ছে পিজ্জা, বার্গার, স্যান্ডউইচ। এই বদল আমাদের শিকড় থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় আসল চেতনা? ১. বাংলা সংস্কৃতির পাঠ বাধ্যতামূলক করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে: ইতিহাস-ঐতিহ্য যেন পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে অনুভবেও আসে, ২. পরিবারে গল্প-আসর ও দেশীয় গানের চর্চা: সপ্তাহে একদিন হোক ‘বাংলা দিবস’, ৩. লোকজ উৎসব আয়োজন: পাড়ায় পাড়ায় হোক ঢেঁকি চালানো, নকশিকাঁথা প্রদর্শনী, পুতুলনাচ, ৪. বাঙালি খাবারের উৎসব: যেখানে বিদেশি খাবারের জায়গায় থাকবে চিতই-পিঠা, শুঁটকি ভর্তা, পান্তা, ৫. সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা: সরকারি-বেসরকারি অনুদান দিয়ে লোকজ সংস্কৃতির ধারকদের এগিয়ে নিতে হবে।
শুধু উৎসবের বাঙালি নয় আত্মিক বাঙালি হতে হলে- আমাদের সাবধান হতে হবে। বাঙালি মনকে আরও শাণিত করতে হবে, মনের ভেতরকার জং মুছে ফেলতে হবে; আরও গভীর থেকে দেশকে ভালোবাসতে হবে, বাংলা ভাষাকে ভালোবাসতে হবে। আমি বাঙালি, এটা ভেতরে লালন করতে হবে। নিজেদের পরিচয় নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মতো শক্তি জোগাতে হবে। গুরুসদয় দত্ত তার গানে বলেছিলেন, ‘বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙালি হ, বাঙালি হ, বাঙালি হ।’ অর্থাৎ সাহস জোগাতে হবে। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে নিজের ভেতরে। কেবল বৈশাখে নয়, বাঙালি হয়ে যেতে হবে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে। যেন স্মৃতি হাতড়ে না বলতে হয়, ‘একদিন বাঙালি ছিলাম রে...। একদিন বাঙালি ছিলাম রে...।’
শেষে বলি, বাঙালিয়ানার রিফিল চাই। এই ‘সিজনাল’ মুখোশ খুলে ফেলতে হবে। সংস্কৃতি কোনো দিনপঞ্জিকাবদ্ধ উৎসব নয়—এটা শিকড়, এটা রক্তে। যারা শুধু উৎসবে বাঙালি, তারা জাতির আসল মুখ নয়। তারা কেবল মুখোশধারী নাট্যশিল্পী—যাদের মঞ্চ একদিন পরেই বন্ধ হয়ে যায়। পহেলা বৈশাখের মতো বাঙালিত্ব যদি “লিমিটেড এডিশন” হয়, তাহলে তা নিয়ে গর্ব করা কীসের? আসুন, রোজকার জীবনে একটু হলেও বাংলাকে জায়গা দিই। হয়তো সকালে “গুড মর্নিং”-এর পাশাপাশি একটু “সুপ্রভাত” বলব? নয়তো ফোনে মাকে “হ্যালো” না বলে “ও মা!” ডাকব? বাঙালিয়ানা যেন শুধু পান্তা-ইলিশের প্লেটে না থাকে, থাকে রোজকার চালচলনে। নইলে পরের বছর আবার সেই একই স্ট্যাটাস-”আমি বাঙালি, আমার গর্ব!”
লেখক: সাংবাদিক, জীবনমুখী লেখক, কলামিস্ট, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।
পাঠকের মতামত:
- ‘মুজিবনগরে বাংলাদেশের পক্ষ হতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়’
- গোপালগঞ্জে সমন্বয়ক ও ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতার উপর হামলা
- পার্বতীপুরে বীমা পলিসির টাকা ও মৃত্যুদাবির চেক দিলো সন্ধানী লাইফ ইনসুরেন্স
- পাংশা উপজেলা প্রেস ক্লাবের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- জেলেনস্কির অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে চীন
- ‘আগামী বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন নতুন গঠনতন্ত্র’
- নড়াইলে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি, অস্বস্তিতে ক্রেতারা
- ‘অন্তর্বতীকালীন সরকারের নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার কথা নয়’
- ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে সৌদিতে আটক ৫ শতাধিক হজযাত্রী
- ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মিই বড় সমস্যা’
- ঈশ্বরদীতে দুটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার, ২ চোর গ্রেফতার
- সুন্দরবনে দু’টি অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন, আগুন প্রতিরোধে তিন সুপারিশ
- সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা থেকে ৩১ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার
- বৃষ্টিতে ভিজে সাতক্ষীরায় কারিগরি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নীচে পড়ে নারীর প্রাণহানি
- মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে ফরিদপুর পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের গণমিছিল
- পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা
- ফরিদপুরে টেন্ডারের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি-জামায়তের দফায় দফায় সংঘর্ষ
- লংগদুতে শিশু ধর্ষণ চেষ্টা, বৃদ্ধ আটক
- চাটমোহরে ভুটভুটির ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের
- কুষ্টিয়ায় বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, এলাকায় আতঙ্ক
- ফুলপুরে সরকারি চাল আটক
- ‘নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে’
- আবদুল হামিদ মাহবুব’র একগুচ্ছ লিমেরিক
- হোটেল বয় থেকে কোটি টাকার মালিক সাইজদ্দিন মাতাবর
- ‘ইসরাইলসহ সারা বিশ্বে যে অশান্তির আগুন জ্বলছে তার মূল হোতা আমেরিকা’
- মাদক মামলায় জামিন পেলেন নিকোলাস কির্টন
- ফরিদপুরে ব্যবসায়ী দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম
- বরিশালে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ
- ভারতকে ভুগিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় চুক্তিতে কনস্টাস
- সাংবাদিকদের সম্মানে হাজী সেলিম ফাউন্ডেশনের ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময়
- ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে একটি চুক্তি ও আটটি সমঝোতা স্মারক সই
- প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর
- বৈশাখ এসেছে বহুবার: আমরাই যাইনি ওর কাছে
- খুঁড়িয়ে চলছে সালমান খানের ‘সিকান্দার’
- কাপাসিয়ায় অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত
- ‘৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে প্রস্তুত এনসিপি’
- পালিয়ে যাওয়া সাবেক ৪ মন্ত্রীকে দেখা গেল এক ফ্রেমে
- নড়াইলে এসএসসি-৮৭ ব্যাচের উদ্যোগে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ
- অফিসের অসাধু কর্মচারীদের শোকজ দেওয়ায় ইউএনওকে হয়রানি
- গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রাজপথে নামার আহ্বান সারজিসের
- ‘মার্কিন শুল্কের প্রভাব সামাল দেওয়া কঠিন হবে না’
- সাত দিনে ঢাকা ছেড়েছেন ১ কোটি ৭ লাখ সিমধারী, ঢুকেছেন ৪৪ লাখ
- শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইলো বাংলাদেশ
- ২০৩৫ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক যুক্তরাজ্য