E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

চীন সফরে ড. ইউনুস: কী অর্জন করতে পারে ঢাকা?

২০২৫ মার্চ ২৭ ১৭:০৩:৪৯
চীন সফরে ড. ইউনুস: কী অর্জন করতে পারে ঢাকা?

মীর আব্দুল আলীম


বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে চীন সফরে রয়েছেন। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সফর, যা অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এই সফরের মূল লক্ষ্য চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং কৌশলগত সহযোগিতাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়া। এই সফরের মাধ্যমে আরও বৃহৎ বিনিয়োগ এবং নতুন চুক্তির আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বরাবরই অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে এ সম্পর্ক আরও গভীর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যা নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার চলমান চীন সফরকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক মহলে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এই সফর শুধু সৌজন্যমূলক নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা জাগিয়েছে। এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য নতুন বাণিজ্যিক সুযোগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। বিশেষ করে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, কৌশলগত সহযোগিতা এবং ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যের মতো বিষয়গুলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। বিশেষত, যদি চীন বাংলাদেশের উৎপাদনশীল খাত এবং রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখে, তবে তা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সফর শেষে কোনো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি বা বিনিয়োগের ঘোষণা আসবে কি না, তা নিয়ে এখন সবার আগ্রহ তুঙ্গে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সফরটি বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। চীনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়নের গতি বাড়াবে। যদি সফর শেষে বড় কোনো বিনিয়োগ বা কূটনৈতিক সমঝোতা ঘোষিত হয়, তবে তা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ওপর। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক গতিপথ কি নতুন রূপ নিতে যাচ্ছে এমন প্রশ্ন এখন সবার।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা, নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা: অনেকটাই স্পষ্ট যে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা নতুন মাত্রা লাভ করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মতে, সাম্প্রতিক সফরের অন্যতম লক্ষ্য চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য চীনের বিশাল বাজার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। তবে রপ্তানি পণ্যের সীমাবদ্ধতা ও বাজার প্রবেশাধিকারের জটিলতা এই সম্ভাবনাকে পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে বাধা সৃষ্টি করছে। তাই, বাংলাদেশ তার রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।

এছাড়া, স্বাস্থ্যসেবা খাতেও দুই দেশের সহযোগিতা নতুন মাত্রা পাচ্ছে। ভারতের কঠোর ভিসা নীতির কারণে চীনের হাসপাতালগুলো বাংলাদেশি রোগীদের জন্য বিকল্প চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করতে পারে। ইতিমধ্যে কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। সঠিক নীতি ও কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে উভয় দেশই পারস্পরিক লাভবান হতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীনা বিনিয়োগের সম্ভাবনা: বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন ইস্যুতে ভারতের কাছ থেকে সন্তোষজনক সমাধান পায়নি। চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আলোচনা অনেকদিন ধরেই চলছে। ড. ইউনুসের এই সফল এ ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাতে পারে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উত্তরবঙ্গের কৃষি ও সামগ্রিক অর্থনীতি লাভবান হবে। চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার লক্ষ্য নদীর পানিপ্রবাহ পুনরুদ্ধার, সেচব্যবস্থা উন্নয়ন এবং নদীভাঙন রোধ করা। তদুপরি, চীনের অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক দিক হয়ে উঠতে পারে। তবে, চীনের বিনিয়োগে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন ভারতের উদ্বেগের কারণ হতে পারে। ভারত যদি এটি তার ভূরাজনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী মনে করে, তাহলে বাংলাদেশকে কঠিন অবস্থানের মুখোমুখি হতে পারে। বাংলাদেশকে অবশ্যই কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে চীনের সাথে আলোচনায় অগ্রসর হতে হবে, যাতে ভারতীয় উদ্বেগকে প্রশমিত করা যায় এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।

সম্ভাব্য সমাধান ও কূটনৈতিক কৌশল- ১. তিনপক্ষীয় আলোচনার উদ্যোগ: বাংলাদেশ, ভারত ও চীনের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে কৌশলগত সমঝোতা তৈরি করা। ২. অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক প্রস্তুতি: বাংলাদেশের উচিত ভারতের উদ্বেগ প্রশমিত করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো। ৩. বিকল্প অর্থায়ন বিবেচনা: শুধুমাত্র চীনের ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে অর্থায়ন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করাই মূল চ্যালেঞ্জ। ভারত ও চীনের মধ্যকার প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে অত্যন্ত সতর্ক কৌশল অবলম্বন করতে হবে, যাতে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

ভূরাজনীতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার এই সফর নিয়ে ভারতের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। ভারত মনে করে, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব তাদের নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বার্থের জন্য হুমকি। বাংলাদেশ যদি চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো সহযোগিতায় আরও গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলে, তাহলে তা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বর্তমানে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের আওতায় ভারতকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখছে। বাংলাদেশ যদি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করে, তাহলে ওয়াশিংটন থেকে নতুন করে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের প্রভাব বিস্তারে সবসময়ই সচেষ্ট থেকেছে। ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে ঘনিষ্ঠ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। চীন বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ এবং সামরিক সহযোগিতা বাড়াচ্ছে, যা ভারতীয় কৌশলবিদদের দৃষ্টিতে অস্বস্তিকর। ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তাদের আঞ্চলিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সরাসরি কৌশলগত অবস্থান নিচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বর্তমানে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের আওতায় ভারতকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখছে। এই কৌশলের মূল লক্ষ্য হলো ভারতকে শক্তিশালী সহযোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা, যাতে দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আধিপত্য সীমিত রাখা যায়। বাংলাদেশ যদি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করে, তাহলে ওয়াশিংটনের দৃষ্টিতে এটি একটি ভূরাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি চীন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ সরকার চীনের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত সহায়তার সুযোগ নিলেও ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বজায় রাখতে সচেষ্ট। তবে ভবিষ্যতে এই ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা কীভাবে বাংলাদেশের জন্য প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করবে দেশের কৌশলগত সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন শক্তির ভূমিকার ওপর।

বাংলাদেশের জন্য করণীয় এবং ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি জরুরি: বাংলাদেশের জন্য একটি কার্যকর, সুসংগঠিত ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অপরিহার্য। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার জন্য দূরদর্শী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক চীন সফর বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে। যদি এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হয়, তাহলে এটি দেশের অর্থনীতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হবে। তবে, একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এমন হতে হবে, যাতে কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারের স্বার্থ ক্ষুণ্ন না করে। চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক দিন দিন আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নতুন সুযোগ এনে দিতে পারে। তবে, দীর্ঘমেয়াদে এই সম্পর্ক কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক পদক্ষেপ ও চুক্তির বাস্তবায়নের ওপর। এই সফরের সফলতা নির্ভর করবে কতটা ফলপ্রসূ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় তার ওপর। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হলে শুধু বিনিয়োগ আনাই যথেষ্ট নয়, বরং এই বিনিয়োগের কার্যকারিতা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও বিবেচনায় নিতে হবে।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, বাংলাদেশকে অবশ্যই তার আঞ্চলিক স্বার্থ ও কৌশলগত নিরাপত্তার বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে হলে সঠিক কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। তাই, এই সফরকে কেবল একটি অর্থনৈতিক অর্জন হিসেবেই নয়, বরং বৃহত্তর কৌশলগত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, যাতে বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে এগিয়ে যেতে পারে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর শুধু অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেই নয়, বরং এটি কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্র্নিধারণেরও একটি সুযোগ। বাংলাদেশ যদি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায়, তবে তা অবশ্যই জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় এবং কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রেখেই করতে হবে। সফর থেকে যদি বড় কোনো বিনিয়োগ ঘোষণা আসে, তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হবে। তবে একই সঙ্গে, ভারতের উদ্বেগ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া এবং সমগ্র ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব বিবেচনা করা জরুরি। কারণ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কেবল অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং কূটনৈতিক ভারসাম্য ও কৌশলগত স্বার্থের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

এই সফর বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, যেখানে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, কূটনৈতিক দক্ষতা এবং ভূরাজনৈতিক বাস্তবতাকে সমন্বয় করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এখন সময়ই বলে দেবে, বাংলাদেশ এই কৌশলগত হিসাব-নিকাশ কতটা দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে পারে।

লেখক: সাংবাদিক, সমাজ গবেষক, মহাসচিব-কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।

পাঠকের মতামত:

৩১ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test