E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

শেখ হাসিনা আসলেই পদত্যাগ করে যাননি 

২০২৪ অক্টোবর ২১ ১৭:০৫:১০
শেখ হাসিনা আসলেই পদত্যাগ করে যাননি 

শিতাংশু গুহ


‘জনতার চোখ’ নামে একটি রাজনৈতিক ম্যাগাজিনে মতিউর রহমান চৌধুরী’র একটি প্রচ্ছদ প্রতিবেদন পড়লাম। হেডিং, ‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন ন’। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কিনা তা নিয়ে এ লেখা পড়ে আমি নিশ্চিত যে, দেশত্যাগের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে যাননি, বা সময় পাননি বা যাঁরা আগ্রহের সাথে তাঁকে বিদায় দিয়েছেন তাদের সেদিকে খেয়াল ছিলোনা। এ নিয়ে আলোচনার আগে একটু ভনিতা দরকার আছে।

মতিউর রহমান চৌধুরীকে আমি চিনি দীর্ঘদিন, সম্ভবত: ১৯৭৮ সাল থেকে। ফেরদৌস কুরেশীর ‘দৈনিক দেশবাংলা’ পত্রিকায় আমরা কাজ করতাম। এরপর ‘দৈনিক সংবাদ’ এবং ‘দৈনিক বাংলারবানী’। এরপর তিনি ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এ চলে যান। ওই সময়টায় দক্ষ রিপোর্টার যে ক’জন ছিলেন, মতিউর রহমান চৌধুরী তাদের শীর্ষে ছিলেন। তার গুনকীর্তন করা এ লেখার উদ্দেশ্য নয়, শুধু এটুকু বলা যে, এতদিন পরেও, ঠিক আগের মতই তিনি একটি নির্মোহ সত্য টেনে বের করে এনেছেন।

ধন্যবাদ মতিউর রহমান চৌধুরীকে একটি সংশয় দূর করার জন্যে। প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে যাননি তাতে কি হয়েছে? আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এতে খুশি হতে পারেন বটে, কিন্তু যারা ক্ষমতায় বসে আছেন তাঁদের দু:শ্চিন্তার কোন কারণ নেই, থাকার কথা নয়। তারা এটিকে বিপ্লব বলছেন, বিপ্লবের পর অনেক কিছুই থাকেনা, বিপ্লবীরা যা বলেন সেটাই কার্যকর হয়ে থাকে। কাজেই শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কিনা তা অবান্তর।

যারা স্বপ্ন দেখেছেন শেখ হাসিনা এখনো বৈধ প্রধানমন্ত্রী, তাদের মোহ দূর হতে কিছুটা সময় নেবে। বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর অনেকের সাথে আমিও ভারতে যাই, তখন প্রতিদিনই আমরা শুনতাম ‘জিয়াউর রহমান’ কালই পড়ে যাচ্ছেন, এবং আমরা বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরছি। তা ঘটেনি, আমরা চোরের মত দেশে ফিরেছিলাম। যারা ক্ষমতাসীন তারা অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছেন বটে, কিন্তু ‘ধপাস’ করে পড়ে যাবেন তা ভাবার কোন কারণ নেই?

অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ভাবছেন, ভারত যেনতেন প্রকারে আবারো শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। তাদের জন্যে আমার খারাপ লাগে, এবং বাংলাদেশের হিন্দুদের কথা মনে পড়ে। হিন্দুরা গত ৫৩ বছর ধরে ভেবেছে ভারত তাদের জন্যে কিছু একটা করবে। ভারত করেনি। কেউ করেনা। আওয়ামী লীগও করেনি। এটাই বাস্তবতা। ভারত এ সময়ে হিন্দুদের পক্ষে কথা বলছে, এটিও হিন্দুদের জন্যে নয়, ভারত অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপে রাখতে তা বলছে। এটি রাজনীতি।

ভারত বৃহৎ শক্তি। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ক্ষেত্রে এর অঙ্গীকার আছে, আছে বিশ্ব রাজনীতি, চাইলেই ভারত সবকিছু করতে পারেনা। নিশ্চয় দিল্লি চাইবে ঢাকায় একটি ‘অনুকূল’ সরকার। ড: মোহাম্মদ ইউনুস সরকার এখন আগের চাইতে অনেক কম ‘এন্টি-ভারত’, কারণ বাস্তবতা। মালদ্বীপের মোহাম্মদ মইজু ইতিমধ্যে দিল্লিতে এসে ধর্ণা দিয়েছেন। ভারত সবুজ সিগন্যাল দিলে ড: ইউনুস কাল বিলম্ব না করে দিল্লি যাবেন। দেশের জন্যেই তাঁকে যেতে হবে।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

২২ অক্টোবর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test