ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে যা করণীয়
চৌধুরী আবদুল হান্নান
“মূলত ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোরই দৈন্যদশা বেশি প্রকট ও দৃশ্যমান, ধর্মীয় আবেগে অনেকেই তাদের শেষ সম্বল এ সকল ব্যাংকে জমা রাখেন। আজও অনেকের বিশ্বাস নামের আগে পরে ইসলামি কথাটা ব্যবহার করা ব্যাংকগুলো সুদের ব্যবসা করে না, তারা মুনাফা দেয়, সুদ নয়।”
ব্যাংকে নিজের টাকা তুলতে গিয়ে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসার ঘটনা ব্যাংক খাতের চরম দুর্দশার শেষ ধাপ। সব ব্যাংকই সরকারের মালিকানায় অথবা সরকার অনুমোদিত বেসরকারি মালিকানায় পরিচালিত হয়। চাহিদা মোতাবেক তাৎক্ষণিকভাবে টাকা প্রদান করার শর্তে মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন এবং এই টাকায় ব্যাংক তার ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। ব্যাংক টাকা ফেরত দিতে পারে না, এমন ভয়ংকর অবিশ্বাস্য খবর আমানতকারীদের এখন শুনতে হয়।
ব্যাংকের টাকা কোথায় গেল?
ব্যাংকের মালিক বা পরিচালক এবং তাদের পছন্দের কিছু লোকের মধ্যে নিজেরা আমানতকারীদের জমানো টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে গেছে। বিস্ময়করভাবে এ কাজটি করার সুযোগ করে দিয়েছে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স্বাধীন সংস্থাটির পলাতক সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পর্দার আড়ালে থেকে অর্থ লুট আর অর্থ পাচারে জড়িত ছিলেন। অবশ্য অর্থ পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা হয়নি।
ব্যাংকের অর্থ লোপাটকারীদের সমাজে উঁচুস্তরে বসবাস, বর্ণাঢ্য জীবন। তাদের অনেকেই লুটপাট করা অর্থ বিদেশে পাচার করে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা কঠিন কাজ নয়, কেবল আইন প্রয়োগের সদিচ্ছা থাকতে হবে।
এ দুষ্টচক্রের বিচার কখন কীভাবে হবে তা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় কিন্ত আমানতকারীদের অর্থ শর্ত মোতাবেক এখনই ফেরত দিতে হবে।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কয়েকটি ব্যাংকের কঙ্কালসার চিত্র জনসম্মুখে উন্মোচিত হয়ে পড়ে, বাংলাদেশ ব্যাংক কোটি কোটি টাকার কাগুজে মুদ্রা ছাপিয়ে মৃতপ্রায় ব্যাংকগুলো লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে এবং অপাত্রে ঋণের নামে টাকা বিতরণ করতে থাকে। ফলে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যায় কিন্ত উৎপাদন বাড়ে না। ফলে মুদ্রস্ফীতি লাগামহীন, বাজারে গেলে বুঝা যায় দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির ফলে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা কত দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। চিহ্নিত মুস্টিমেয় লোকের অপরাধের দায় বহন করে চলেছে দেশের আপামর জনগণ।
এসব অপকর্ম আগের সরকারের সৃষ্টিকরা কিন্ত তাদের পাপের দায় এসে পড়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাঁধে। এ দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
মূলত ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোরই দৈন্য দশা বেশি প্রকট এবং দৃশ্যমান, অনেকটা ধর্মীয় আবেগে অনেকেই তাদের শেষ সম্বল এ সকল ব্যাংকে জমা রাখেন। আজও অনেকের বিশ্বাস যে নামের আগে পরে ইসলামি কথাটা ব্যবহার করা ব্যাংকগুলো সুদের ব্যবসা করে না, তারা মুনাফা দেয়, সুদ নয়।বলতে গেলে এ সব ব্যাংকের আমানতকারীরা এক প্রকার প্রতারণার শিকার।
বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর উভয়ই অর্থনীতি ও ব্যাংক খাত বিশেষজ্ঞ, তাদের প্রতি মানুষের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। দীর্ঘদিনের জমে থাকা জন্জাল সাফ করে এ খাতকে সুশাসনের দিকে ফেরাতে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে যে সকল ব্যাংক নগদ টাকার অভাবে দৈনন্দিন লেনদেন বন্ধ হওয়ার পথে, আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আগে তাদের তাৎক্ষণিক তারল্য সহায়তা দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আমানতকারীদের প্রতি আহবান জানিয়ে সম্প্রতি বলেছেন -“বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখবে।”
ব্যাংক খাতকে অর্থনীতির হৃদপিন্ড বলা হয়, কাজেই এ খাতটি সংস্কারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।ইতোমধ্যে এই খাতে মানুষের আস্থা ফিরিয় আনতে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, তারা প্রাথমিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের পুনরুদ্ধারে কাজ করবে।
গৃহীত সব পদক্ষেপ যতই ইতিবাচক হোক না কেনো শুধু কথায় তো আর পেট ভরবে না। যারা সব ডিম এক হাঁড়িতে রেখেছিলেন, তাদের তো এখন মাথায় হাত। নিজের টাকা ব্যাংকে জমা থাকতে অর্থ সংকটে তারা হাবুডুবু খাচ্ছেন।
আমানতকারীরা তো স্বল্প সময়ে বেশি লাভ পাওয়ার লোভে কোনো বেসরকারি এনজিও বা কোনো সমিতিতে টাকা রাখেননি। তারা সারা জীবনের সন্চয় জমা রেখেছেন সরকার অনুমোদিত ব্যাংকে, চাহিদা মতো টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে। কিন্ত ব্যাংক পক্ষ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে।
ব্যাংক ব্যবসার মূল পূজি মানুষের বিশ্বাস আর আস্হা এবং সেখানেই ফাটল ধরেছে। ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে চলমান সংস্কার কাজ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে হলে মানুষের ক্ষোভ বিক্ষোভে পরিণত হওয়ার আগে তাদের জমানো টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম, সোনালী ব্যাংক।
পাঠকের মতামত:
- ফের বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজছেন ফারিয়া
- সোনারগাঁয়ে বোনের কাছে টাকা পাঠিয়ে প্রতারিত হলেন শিউলি আক্তার
- পাংশা উপজেলা প্রেস ক্লাবের অস্থায়ী কার্যলয়ে মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- এমিরেটস ফ্লাইট ট্রেনিং একাডেমীতে গ্রাজুয়েট হলেন ৮৫ পাইলট
- ঈশ্বরদীতে লেবু চাষ করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন
- পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন
- কুষ্টিয়ায় ট্রাক-নছিমনের সংঘর্ষে গরু ব্যবসায়ী নিহত
- গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারগারে
- ইজতেমা ময়দানে হামলা ও হত্যার বিচার দাবি জামালপুরে
- শিশু কল্পনা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ১
- নাটোরে আগুনে পুড়ে সাংবাদিকের ৯ মাসের শিশু কন্যার মৃত্যু
- সুপ্রিম কোর্টে হাসান আরিফের জানাজা সম্পন্ন
- গৌরনদীতে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
- বিসিসির ৩০ ওয়ার্ডের দায়িত্বে ১৮ কর্মকর্তা
- সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে জরুরী পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত
- টঙ্গীতে ব্রীজ ভেঙে নদীতে ট্রাক
- নগরকান্দায় শীতবস্ত্র বিতরণ
- মঞ্চে গিটার বাজাতে বাজাতেই মারা গেলেন পিকলু
- চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান
- দেশের তিন খাতের উন্নয়নে ১১৬ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
- ‘আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করি না’
- বিল পাস করে শেষ মুহূর্তে ‘শাটডাউন’ এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র
- ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ দিল্লি-লাহোর-ঢাকার বায়ু
- সিরীয় নেতার জন্য কোটি ডলারের পুরস্কার প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রের
- আরও তেল-গ্যাস না কিনলে ইইউ’র ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
- দেল বস্ক বরখাস্ত হতে পারেন!
- দেল বস্ক বরখাস্ত হতে পারেন!
- রাত পোহালেই পাংশা পৌর ভোট
- আত্মকর্মসংস্থান তৈরিতে দুই বোনের স্ট্রিট ফুডের ব্যবসা
- সীতাকুণ্ডে ছাত্রলীগ সভাপতি শিহাবের নেতৃত্বে হরতাল বিরোধী মিছিল
- ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির কনসার্ট
- রিয়েলমি’র পানিরোধী স্মার্টফোন আনার গুঞ্জন
- গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবিতে ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা’ সপ্তাহ
- বিজয় দিবসে দেশবাসীকে টাইগারদের জয় উপহার
- প্রার্থনা
- টাঙ্গাইলে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত
- শতাধিক ভাঙা সেতু দিয়ে ‘বিপজ্জনক’ যাতায়াত
- শরীয়তপুরের তিনটি আসনে মোট ২২ প্রার্থী
- হেলাল হাফিজের কবিতা
- কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস আজ
- দেশবাসীকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান তারেক রহমানের
- ‘মমতার বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি’
- জেনে নিন অ্যালোভেরার উপকারিতা
- প্লাস্টিকের ভীড়ে হারাতে বসেছে বাঁশ-বেতের জিনিসপত্র
- সুবর্ণচরে স্কুল ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, প্রতিবাদে মানববন্ধন