E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের টেকসই বিকাশে গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে

২০২৪ ডিসেম্বর ০৬ ২৩:২১:১৩
দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের টেকসই বিকাশে গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার : দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের টেকসই বিকাশ নিশ্চিত করতে এবং প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে পণ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে ওয়ালটনের আয়োজিত এক আলোচনা সভায়। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে ওয়ালটন আয়োজিত একক বৃহৎ শিল্পমেলা ‘এটিএস এক্সপো-২০২৪’ এর দ্বিতীয় দিনে “স্থানীয় উৎপাদনকে শক্তিশালীকরণ: ইলেকট্রনিক্স শিল্পে বাংলাদেশের উত্থান” শীর্ষক এই প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং বিজনেস কো-অর্ডিনেটর টু ম্যানেজিং ডিরেক্টর তানভীর আঞ্জুমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কামরুল হাসান, বেস্ট ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ তাহমিদ জামান রাশিক, দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের কমার্শিয়াল ডিরেক্টর কামরুল হাসান এবং কেইডি সল্যুশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার মফিজুর রহমান।

প্যানেল আলোচনায় ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর তানভীর আঞ্জুম বলেন, যেকোন ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির টেকসই উন্নতি নির্ভর করে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) কর্মকা-ের ওপর। দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের উন্নতি সাধনেও আরঅ্যান্ডআই এর কোনো বিকল্প নেই।এ খাতে স্থানীয় উৎপাদকদের প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে।

তিনি জানান, ওয়ালটন শুরু থেকেই রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। তাই ওয়ালটন হাই-টেক পার্কে গড়ে তোলা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহ আরঅ্যান্ডআই সেন্টার ও টিম। ওয়ালটনের প্রতিটি পণ্যের জন্য পৃথক আরঅ্যান্ডআই টিম কাজ করছে। বর্তমানে ওয়ালটনের আরঅ্যান্ডআই টিমে দেশি-বিদেশী অত্যন্ত দক্ষ ও মেধাবী আড়াই হাজারেরও বেশি প্রকৌশলী কাজ করছেন। তাঁরা নিরলস গবেষণার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও ফিচার সমৃদ্ধ পরিবেশবান্ধব নতুন নতুন মডেলের পণ্য উৎপাদন করছেন। তাঁদের গবেষণার ফলশ্রুতিতে ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্যুশন ও কমপোনেন্টস উৎপাদন করছে ওয়ালটন।

সভায় যুগোপযোগি দেশীয় শিল্পবান্ধব পলিসি নির্ধারণের উপর গুরুত্বারোপ করে এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কামরুল হাসান বলেন, দেশীয় শিল্পের জন্য প্রয়োজন ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ। এতে দ্রুত এগিয়ে যাবে দেশীয় শিল্প। এক্ষেত্রে ওয়ালটন বিশাল উন্নতি সাধন করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়ারের মধ্যে সমন্বয় সাধনে বিশাল গ্যাপ রয়েছে, যা দূর করতে হবে। দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিগুলোর উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া। পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে ইন্ডাস্ট্রি পরিচালিত ইন্টার্নশিপ ও গবেষণাসহ নানা কাজে সংযুক্ত করতে হবে। এতে ইন্ডাস্ট্রির বাস্তব অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা; তেমনি ইন্ডাস্ট্রি পাবে দক্ষ জনশক্তি। এভাবে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া মিলে গবেষণায় মনযোগ দিতে হবে।

বেস্ট ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ তাহমিদ জামান রাশিক বলেন, বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স খাতে গত ৫০ বছরে বড় একটা বিপ্লব হয়েছে। এই রেভ্যুলেশনে ড্রাইভিং ফোর্স হিসেবে ছিলো ওয়ালটন। বিশাল ঝুঁকি নিয়ে ওয়ালটন ওই সময়ে ইলেকট্রনিক্স খাতে বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স খাতের প্রায় শতভাগ পণ্য দেশেই উৎপাদন করছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান।

সভায় দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের কমার্শিয়াল ডিরেক্টর কামরুল হাসান বলেন, দেশের অভ্যন্তরে প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এতে দেশে থাকা ম্যানুফ্যাকচারারগণই লাভবান হবেন। দেশে কর্মসংস্থান সৃৃষ্টি হবে। পাশাপাশি গভেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) খাতেও উন্নতি করতে সক্ষম হবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ উন্নতির জন্য আরঅ্যান্ডডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই আমাদের বিনিয়োগ খুবই কম। এসব দিকে উন্নতি করতে পারলে ইলেকট্রনিক্স খাতে আমাদের দেশও দ্বিতীয় চায়না হতে পারবে শিগিগ্রই।

কেইডি সল্যুশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার মফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদনে দেশীয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক এগিয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে ওয়ালটন। পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশেই নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে নানাধর্মী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য যেমন এয়ার কন্ডিশনার, ফ্রিজ, লিফট, টিভি, ফ্যান তৈরি করছে ওয়ালটন। ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাচ্ছে ওয়ালটনের এসব পণ্য।

উল্লেখ্য, ওয়ালটনের উৎপাদিত ৫০ হাজারের অধিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্যুশন ও কম্পোনেন্টস দেশি-বিদেশি শিল্পোদ্যাক্তা ও ক্রেতাদের নিকট তুলে ধরার মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এটিএস এক্সপো আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় দেশীয় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে ওয়ালটন।

(পিআর/এসপি/ডিসেম্বর ০৬, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test