E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

মে মাসে রপ্তানি আয় কমেছে 

২০২৪ জুন ০৫ ১৭:২২:১৩
মে মাসে রপ্তানি আয় কমেছে 

স্টাফ রিপোর্টার : সুখবর নেই রপ্তানি আয়ে। মে মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ১৬ শতাংশ। পণ্য রপ্তানি থেকে মে মাসে আয় হয়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কম। গত বছরের মে মাসে আয় হয়েছিল ৪ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে মাসের রপ্তানি আয় বেড়েছে দুই শতাংশ। এসময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৫১ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার।

রপ্তানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনীতিক অস্থিরতা, পোশাক পণ্যের মূল্যের নিম্নগতি, ডলার সংকট এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিকে রপ্তানি আয়ের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি জন্য দায়ী করেছেন।

মে মাসের সামগ্রিক রপ্তানি নেতিবাচক হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্পের আয় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণে। তৈরি পোশাক পণ্য থেকে মে মাসে আয় হয়েছে ৩৩৫ কোটি ডলার যা আগের বছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ কম।

এ বিষয়ে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হওয়ারই কথা, কারণ এখন কার্যাদেশ কম। অন্যদিকে উৎপাদন বায় বৃদ্ধির কারণে যে কার্যাদেশ আছে তাও আমরা গ্রহণ করতে পারছি না।’

‘একদিকে ক্রেতারা পণ্যের ন্যায্যমূল্য দিচ্ছে না, অন্যদিকে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও অন্যান্য সেবার মূল্যবৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ফলে মূল্য প্রতিযোগিতায় আমরা টিকে থাকতে পারছি না’, বলেন হাতেম।

তিনি আরও বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে অনেক সময় লাগে। ফলে বৈশ্বিক ক্রেতারা লিড টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্ডার কম দিচ্ছে। এছাড়াও কাস্টমসের হয়রানির কারণে যথাসময়ে আমাদের পণ্য ডেলিভারি দিতে কষ্ট হচ্ছে।’

তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো যথাসময়ে অর্থ দিতে পারছে না। আবার যা দিচ্ছে তাও পরিমাণের তুলনায় অনেক কম। ফলে ব্যবসার পরিচালন ব্যয় ও সময় দুটোই বেড়ে যাচ্ছে। তাই রপ্তানিকারকরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারায় ফিরয়ে আনতে এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবি করেন এ বাবসায়ী নেতা।

‘এপ্রিল মাসের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণ ছিল ঈদের ছুটি। কিন্তু মে মাসের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির চিন্তার বিষয়। পোশাক পণ্যের ইউনিট মূল্য কমে যাওয়ার কারণে সামগ্রিক রপ্তানি আয়ে প্রভাব পড়েছে’, বলে মনে করছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মানসুর। তবে তিনি বলেন, ‘সঠিক কারণ এই মুহূর্তে ব্যাখ্যা করা কঠিন।’

‘এই মুহূর্তে রপ্তানি আয় কমে যাওয়া অর্থনীতির জন্য সুখকর নয়। আমাদের আমদানিকারক দেশগুলোর অর্থনীতিক অবস্থার উন্নতি হলে, রপ্তানির গতি স্বাভাবিক হবে’ বলে আশা বাক্ত করেছেন এ অর্থনীতিবিদ।

তিনি আরও বলেন, ‘সামনে অনিশ্চয়তা আছে। রপ্তানিকারকদের কারণ অনুসন্ধানে মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি সরকারকেও নীতিসহায়তা প্রদান করতে হবে।’

হিমায়িত মৎস্য খাত থেকে আয় ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি ৫ লাখ ডলার যা গত বছর ছিল ৪০ কোটি ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার। তবে চামড়ার জুতা থেকে রপ্তানি আয় ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে আয় হয়েছে ৪৮ কোটি ডলার।

যদিও চামড়ার জুতা থেকে রপ্তানি আয় কমেছে কিন্তু নন লেদার জুতা থেকে আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ খাতটি গত ১১ মাসে আয় করেছে ৪৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। হোম টেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ কম। কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এই খাত থেকে আয় হয়েছে ৮৪ দশমিক ৬৩ কোটি ডলার।

সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে পরিচিত ওষুধ শিল্প থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ খাত থেকে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার। প্লাস্টিক পণ্য থেকে আয় হয়েছে ২২ কোটি ২৫ লাখ ডলার।

পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে আয় হয়েছে ৭৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার যা আগের বছর ছিল ৮৫ কোটি ডলার। টুপি রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩১ কোটি ডলার।

(ওএস/এসপি/জুন ০৫, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test