E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

কিশোর কারুণিক’র তিনটি কবিতা

২০২৫ মার্চ ১৩ ১৭:০৭:১৮
কিশোর কারুণিক’র তিনটি কবিতা










 

জীবন

ধারাপাতার মতো বিশ্বাসের পাটাতনে
ভুলের সিঁড়িগুলো আজ বড়ই পিঁচলে স্যাঁতস্যাঁতে
ভুল পথে ছুটাছুটি করতে গিয়ে মৃত্যুঘটে আমিত্বের
যা কখনো কেউ আশা করে না তবু বাধ্য হয়
হারানো পথে ডুব দিতে সাঁতার কাটতে।

যখন জীবন থমকে দাঁড়ায়
নিরাশার বালুকাময় চূড়াবালিতে
তখন আপন পর উন্মচিত হয় সূর্যের আলোক ছটার মতো
নিবু নিবু প্রদীপের আলোয় যখন সন্ধ্যা নামে
অচেনা সুর, চেনাজানা, চাওয়া পাওয়ার ঘুম ভাঙে
তখন কেমন মিষ্টি সুগান্ধি তালমাটাল করে
তোলে হৃদয় শরীর, মন।

মনমাতানো ধূসর স্বপ্নগুলো উঁকি দিতে থাকে
বিহঙ্গ ক্যানভাসে তখনো
শুকনো পাতার মর্মরধ্বনি, ঝিঁঝিঁপোকার ডাক,
কেউ শুনুক আর নাই শুনুক
আদিগন্ত রেখায় তা ধ্বনিত হয় জীবনের ছায়ছবিতে।

জীবন প্রেম চায়
জীবন ভালোবাসা চায়
জীবন আলো চায়,
জীবন জল চায়, তাপ চায়, বায়ু চায়
জীবন জীবন চায়
জীবনের প্রবাহমানতায়
সময়ের তালে রং বদলায় সময়
কখনো গ্রীস্ম, কখনো বর্ষা,
শরৎ হেমন্ত, শীত কখনো বসন্ত
হাওয়ায় হাওয়ায় ফুল ফোটে,
আবার হাওয়ায় ফুল ঝড়ে
ঝড়ে পড়ার কষ্ট চাপা পড়ে যায়
নতুনত্বেও সভ্যতার বর্ণালি বিজ্ঞাপনে
পরিশেষে জীবন বাঁচতে চায়,
জীবর বাঁচাতেও চায়।

হতেই থাকে

হেমন্ত না যেতেই অসময়ে শীতের উঁকিঝুঁকিতে
কাকডাকা ভোরে লম্ফঝম্ফ বাবুগিরি ভাবখানা
আজ প্রশ্নের সম্মুখিন।
কর্মের দোষ, রাহুর দোষ, কেতুর দোষ
পরিশেষে শনিবাবাজীর দোষ।

দোষ তো আছেই
তবে নির্দিষ্ট দোষটা কার?
ভাগ্যের দোষ?
দোষের ছেলেমানুষির কারণে মাথা নয়ানো
কতবার কতবার বিশ্বাসের প্রতি, আস্থার প্রতি।

না বিশ্বাস আস্থা কোনো কিছুই করতে পারে না
যা হবার হয়েই যায়
মান সম্মান যায়, অর্থ নাশ হয়, সম্পদ হারিয়ে যায়
তবু জীবন থেমে থাকে না
জীবন চলে হামাগুড়ি দিয়ে হয়তো একসময় দাঁড়াবই
সময় হাসে, অদৃশ্যরা হাসে, হাসে অনেকে
ভালো থাকার চেষ্টা করেও মানুষ
মানুষ থাকে না।
কিছু করার থাকে না
যা হবার হতেই থাকে হতেই থাকে।

সিংগুলারিটি

সিংগুলারিটি থাকা অবস্থায় তোমাকে চেয়েছিলাম
তাইতো বিগ ব্যাং হবার পরও তুমি আমার কথা ভাবো।
বস্তুগতভাবে তুমি কত দূরে
চেতনায় অনেক কাছে, পাশে
তখন ঘটে নিউক্লিয়ার সিন্থেসিস।

তার পরই তো নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, ছায়াপথ আরো কতকিছু
আদিগন্তের প্লাজামার মতো যেন তোমার হাসিমাখা মুখ
পড়ন্ত বিকালের শ্রান্ত ছায়াহীন পথ চলা
মাধবীর সুঘ্রাণে মোহিত যখন হিমের সমীরণ
তখনই তোমার আসা যাওয়া, স্বপ্ন দেওয়া স্বপ্ন নেওয়া
এ যে কী যে ভালোলাগা, কেটে যায় লক্ষ কোটি বছর
আনন্দের স্ফুরণ তখন জলন্ত বারুদের মতো নিঃশেষের তরে
মাইলের পর মাইল তীব্র বাতাসের গতিবেগে
উড়ছি, দৌড়াচ্ছি, ভাসছি
এক সময় কেটে যায় সেই মাহিন্দ্রক্ষণ
বাস্তবতার টিটুয়ান্টির ব্যবচ্ছেদে
কেউ ফকির, কেউ রাজা বাদসা
জীবনের চাহিদার কাছে মায়া, ভালোবাসা
যখন প্রশ্নের ব্যারিকেটে একের পর এক লাটিচার্জ
তখন একটি কথা সামনে আসে
হয়তো সিংগুলারিটি থাকাই ভালো ছিল।

পাঠকের মতামত:

১৪ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test