E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে অবস্থান কর্মসূচি 

২০২৫ এপ্রিল ২৭ ১৮:০৬:৪৬
মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে অবস্থান কর্মসূচি 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে পূর্ব ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা।

আজ রবিবার দুপুরে বিআরটিএ অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় অফিসে ইব্রাহিম নামে একজন পিওন ছাড়া আর কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পাওয়া যায়নি। তারা ছাত্রদের অবস্থান কর্মসূচির কথা জেনে আগে থেকেই সরে পরেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে পূর্ব ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা। এসময় অফিসে একজন পিওন ছাড়া আর কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পাওয়া যায়নি। এসময় অনেক সেবা প্রত্যাশীরা সেবা নিতে আসেন। কিন্তু অফিসে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকায় তাদের ফিরে যেতে হয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সেবা প্রত্যাশীদের।

এদিকে অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীরা নানা স্লোগান দেন। ছাত্র নেতারা বিআরটিএ অফিসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

অবস্থান কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দেন- দুর্নীতিবাজদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও। মাদারীপুরের মাটিতে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই ঠাই নাই। হৈ হৈ রৈ রৈ দুর্নীতিবাজরা গেলো কই। রবিবার ছুটি নাই, কেন তারা অফিসে নাই। বাহান্নর বাংলায় দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই। একাত্তরের বাংলায় দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই। চব্বিশের বাংলায় দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই। শহীদদের বাংলায় দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নাই।

উল্লেখ্য, এর আগে ১৭ এপ্রিল বিকেলে মাদারীপুর শহরের শকুনি লেকপাড়ে ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে তারা দুর্নীতিবাজদের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এসময় তারা তিনদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। বিআরটিএ অফিসের দুর্নীতিবাজদের অপসারণ না করা হলে বিআরটিএ অফিস ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতা-কর্মীরা জানান, আমরা মানববন্ধন থেকে কর্মসূচি দিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। সময় পার হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ তাদের অপসারণ করেননি। তাই আমরা আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ (রবিবার) অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।

তারা আরো জানান, এই অফিসের ঘুষ-দুর্নীতির গড ফাদার হচ্ছেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ, মোটরযান পরিদর্শক সামসুদ্দীন আহম্মেদ ও মেকানিক্যাল সহকারী আবদুল আলিম। এই তিন কর্মকর্তাই হচ্ছেন চ্যানেলের মূল হোতা। এরা টাকার বিনিময়ে দিনকে রাত আর রাতকে দিন করে থাকেন।

মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্ল¬াহ বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবী, বিআরটিএর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাদারীপুর থেকে অপসারণ করা না হবে, ততদিন আমাদের নানা কর্মসূচি চলমান থাকবে। আমরা কিন্তু এর আগেও বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। ২৪ এর ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের জন্য রাজপথে ছিলাম তারা কিন্তু বিদায় নিয়েছে। আপনাদেরও বিদায় করে ছাড়বো।

মাসুম বিল্লাহ আরো বলেন, “আমি একটা ভিডিওতে দেখলাম, ‘বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলছেন, যদি অনিয়ম নিয়ে একটা নিউজ হয় তাহলে মাদারীপুরের শত শত মানুষ আরও ভোগান্তিতে পড়বে। ভিডিওতে দেখা যায় তিনি বলেন অনিয়ম নিয়ে নিউজ হলে একটা ফাইলও সাক্ষর করবেন না।’ তাই আমরা এই দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি বন্ধের জন্য আন্দোলনে নেমেছি।

টিআইবির ইয়েস এর দলনেতা কামরুল হাসান বলেন, দুর্নীতিবাজদের সাবধান করে বলতে চাই আপনাদের কালো হাত ভেঙে দিতে আমাদের একটু সময়ও লাগবে না। আমরা মানববন্ধন করে তিন কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম বিআরটিএর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণের জন্য। আমরা কর্তৃপক্ষের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, তারা ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ব্যবস্থা না নেওয়ায় সময় পার হয়ে যাওয়ায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ (রবিবার) অবস্থান কর্মসুচি পালন করছি। এখানে এসে দেখি ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো দুর্নীতিবাজরা অফিস থেকে পালিয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন আকাশ মাতুব্বর, ইখতিয়ার আহমেদ সাবিদ, আবদুর রহিম, তুষার সব্যসাচী, জুবায়ের আহমেদ নাফিজ প্রমুখ।

অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের অফিসে গিয়ে তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এসময় জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তার ছাত্রদের আশ্বস্থ করে বলেন, আমি তিন দিন ছিলাম না। আজকে জানতে পেরেছি আপনারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপিটি আমি কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিবো।

এ ব্যাপারে জানতে বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদসহ অন্যদেরও অফিসে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের মোবাইলে ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

(এএসএ/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test