E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

বরিশালে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা

২০২৫ এপ্রিল ২৭ ১৭:৪৯:২০
বরিশালে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা

আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : ইউনিয়ন পরিষদের জন্য সরকারি সকল বরাদ্দ ইউপি সচিবের সহায়তায় এককভাবে আত্মসাত, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সরকার নির্ধারিত বেতন ভাতা থেকে ইউপি সদস্যদের বঞ্চিত করা, বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও ৪০ দিনের কর্মসূচীর টাকার আত্মসাতসহ বিস্তার অভিযোগ এনে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন পরিষদের সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১১ জন ইউপি সদস্য।

আজ রবিবার দুপুরে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৯ ধারার বিধান মতে জেলার গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে ১২ জন ইউপি সদস্যর মধ্যে ১১ জনের স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ইউপি সদস্যদের লিখিত অনাস্থা প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে বিগত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা ও ইউপি সচিব রুহুল আমিন পরস্পর যোগসাজসে ইউপি সদস্যদের সাথে কোনধরনের যোগাযোগ না করে ইউনিয়ন পরিষদে আসা সরকারি সকল বরাদ্দ এককভাবে আত্মসাত করে আসছেন। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ইউপি সদস্যগণের জন্য সরকার নির্ধারিত বেতন ভাতা উত্তোলন করা যাচ্ছেনা। যেকারণে বর্তমান মাস পর্যন্ত ইউপি সদস্যদের প্রায় ২৪ লাখ টাকা বেতন বকেয়া আটকে রয়েছে।

লিখিত আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যান কৌশলে সাধারণ জনগণকে ভুল বুঝিয়ে ইউপি সদস্যদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এসুযোগে চেয়ারম্যান জনগণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত সমস্ত অনুদান একাই আত্মসাত করে আসছেন। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও ৪০দিনের কর্মসূচীর টাকার অধিকাংশই ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা তার পছন্দের লোকজনের সহায়তায় আত্মসাত করিয়া আসিতেছেন।
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া অনাস্থা প্রস্তাবে সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১১ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।

তারা হলেন-১ নম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলিম হাওলাদার, ২ নম্বর ওয়ার্ডের আহাদুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইসমাইল হোসেন হীরা, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এফএম বাবুল হোসেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মামুন খলিফা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদুল ইসলাম খান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. গিয়াস খান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলাউদ্দিন মীর, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদুল ইসলাম, সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের রেহানা বেগম ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম।

ইউপি সদস্যদের উল্লেখিত অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন দাবি করে নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা বলেন, ৫ আগস্টের পর ওইসব অধিকাংশ ইউপি সদস্যরা নিজ নিজ এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। তারা কখনও আমার সাথে কোনধরনের যোগাযোগ করেননি। এমনকি আমি অসংখ্যবার তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। তাদের অনুপস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমতো আর বন্ধ রাখা সম্ভব নয়।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। যার সঠিক তদন্ত করা হলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

(টিবি/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test