E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মানুষের মত কথা বলছে কুড়িয়ে পাওয়া দু’টি শালিক

২০২৫ এপ্রিল ২৬ ১৮:৪৩:৩১
মানুষের মত কথা বলছে কুড়িয়ে পাওয়া দু’টি শালিক

একে আজাদ, রাজবাড়ী : ‘বাবা, মা, ভাত খাইছো? তোর আব্বার নাম কি? আব্বার ভাত দাও’ অবিকল মানুষের মত করে এসব কথা বলছে দুটি শালিক পাখি। আদর করে তাদের নাম রাখা হয়েছে মটু ও বাতাসী। শুনতে অবাক লাগলেও, হুবহ মানুষের কণ্ঠে কথা বলছে এই দুটি শালিক পাখি। এই দুটি পাখিকে পোষ মানিয়ে কথা বলতে শিখিয়েছেন রাজবাড়ী সদরের বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় ভবানীপুর গ্রামের হারুন মণ্ডল।

পেশায় ভ্যানচালক হারুন মণ্ডল একজন পাখিপ্রেমী মানুষ। দুই বছর আগে বাড়ির পাশে নারকেল গাছ কেটে ফেলায় শালিক পাখির বাসা ভেঙে যায়। তখন ছোট্ট পাখির ছানা দুটিকে তুলে এনে আশ্রয় দেন হারুন মণ্ডল। লালন-পালন করেন সন্তানের মতো করে। পরম আদর যত্ম পাওয়ায় পাখির কাছে হারুন মণ্ডল এখন নিরাপদস্থল। হারুনকে বাবা ও তার স্ত্রী জহুরা বেগমকে মা ডাকে পাখি দুটি। কেও বাবা-মায়ের নাম জিজ্ঞেস করলে হারুন ও জহুরার নাম বলে।

হারুন মণ্ডল বলেন, খু্ব ছোট থাকতে আমি পাখির বাচ্চা দুটিকে এনেছিলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই ওরা পোষ মানে এবং কথা বলা শেখে। আমাকে আব্বা ডাকে, আমার স্ত্রীকে মা ডাকে, আমার ছেলেকে ভাইয়া ডাকে। আল্লাহর নাম নিয়ে জিকির করে। বাড়িতে কেও এলে সালাম দেয়, গল্প করে। আমি ও আমার স্ত্রী পাখি দুটিকে সন্তানের মতো লালন-পালন করি। ওরা ভাত, কলা-রুটি, মুরগির ফিড খায়। মাঝেমধ্যে মাংস রান্না করে ছিড়ে ছোট ছোট টুকরো করে দেই, তাও খায়।

হরুন মণ্ডলের স্ত্রী জহুরা বেগম বলেন, পাখি দুটি আমাকে মা ডাকে। আমার স্বামী কাজ থেকে বাড়ি ফিরলে ওরা বলে, মা আব্বাকে ভাত দাও। আমি ভাত খেয়েছি কি না তাও জিজ্ঞেস করে। তখন আমার খুব ভালো লাগে। আমি ওদের আমার সন্তানের নজরেই দেখি।

পাখি মানুষের মতো করে কথা বলা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। পাখির প্রতি হারুন মণ্ডলের এমন ভালোবাসায় মুগ্ধ তারা। ইতোমধ্যে শালিক পাখি দুটির কথা বলার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পরেছে। তা জানতে পেরে প্রতিদিন শালিক পাখির কথা শুনতে হারুন মন্ডলের বাড়িতে আসছেন অনেকে। কেউ ছবি তুলছেন কেউ বা ভিডিও ধারন করছেন মোবাইলে।

দর্শনার্থী রেবেকা সুলতানা বলেন, আমি নেটে দেখেছি শালিক পাখি কথা বলছে। সরাসরি দেখতে এসেছি। খুব ভালো লাগছে।

স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা কাজী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ময়না ও টিয়া পাখির কথা বলা অনেক দেখেছি। তবে আমার জীবনে আমি কখনো শালিক পাখির কথা বলা দেখিনি। হারুনের বাড়িতে এই প্রথম দেখলাম শালিক পাখির কথা বলা। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন হারুনের বাড়িতে আসে শালিকের কথা বলা দেখতে। হারুন একজন পাখিপ্রেমী মানুষ। শালিক ছাড়াও তিনি বিভিন্ন জাতের কবুতর পালন করেন। তাকে ধন্যবাদ পাখির প্রতি এমন ভালোবাসা বজায় রাখার জন্য।

(একে/এসপি/এপ্রিল ২৬, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test