E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

কলারোয়ায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৫

২০২৫ এপ্রিল ১২ ১৯:৩০:২৮
কলারোয়ায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৫

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ভারত থেকে অবৈধপথে নিয়ে আসা ফেনসিডিলসহ আটককৃত মাদক ব্যবসায়িকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে এক নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কাজীরহাট বাজারের ব্রাক মোড়ের মোসলেম কারিকরের চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কলারোয়া গ্রামের উত্তর দিগং গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে সোহাগ হোসেন, একই গ্রামের হারুণ অর রশীদের ছেলে জহুরুল ইসলাম, বাবু কাগুচীর ছেলে রাসেল হোসেন, মুনসুর কারিকরের ছেলে মোসলেম কারিকর ও আলমগীর কাগুচির স্ত্রী নাসরিন খাতুন।

মামলার বাদি ও কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক নিকুঞ্জ রায় এর দায়েরকৃত মামলা থেকে জানা গেছে, তিনি ও তার সহকর্মী উপপরিদর্শক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ শুক্রবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ইউরেকা প্রেট্রোল পাম্পের পাশে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তারা গোপনে খবর পান যে, কাজীরহাট বাজারের ব্রাক মোড়ের পাশে মোসলেম কারিকরের দোকানের সামনে এক ব্যক্তি মাদক বিক্রির জন্য অবস্থান করছেন। রাত ৯টা ৫ মিনিটে তারা মোসলেম কারিকরের দোকানের সামনে পৌঁছালে সোহাগ হোসেন নামের এক যুবক হাতে ২০/২৫ বোতল ফেনিসিডলসহ পালানোর চেষ্টা করে।

এ সময় তাকে আটক করে হাতকড়া পরানোর সময় আটককৃত আসামীসহ বাদশা, মনিরুল, বাবু কাগুচী, মুজিবর কাগুচী ও ছবিরণসহ ১০/১২ জন জহুরুল ও রাসেল সোহাগের হাতে থাকা ফেনসিডিলের ব্যাগ কেড়ে নেয়। সোহাগকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। হামলায় উপপরিদর্শক মিজানুর রহমানের বাম হাতের কনুইতে হাড়ভাঙা জখম হয়। খবর পেয়ে কলারোয়া থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পাঁচজন হামলাকারিকে গ্রেপ্তার করে।

তবে গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ হোসেন জানান, শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে তিনি ও জহুরুল ইসলাম কাজীরহাট বাজারের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়ে মোসলেম কারিকরের চায়ের দোকানে যান। দোকানে তখন মোসলেম কারিকরের ছেলে বাদশা ও মনিরুল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছিলো। দোকানের পাশে একজন ব্যক্তিকে মোবাইলে কথা বলতে দেখেন। সেখানে চা পান শেষে জহুরুল ইসলামের সঙ্গে সাইকেলসহ বাড়ি ফিরছিলেন। তারা ব্রাক মোড়ের প্রাচীর পার হয়ে অজিতের বাড়ি পর্যন্ত এলে একটি হেলমেট পরিহিত মটর সাইকেল আরোহী তার হাতে একটি বাগ দিয়ে বলে যে, তাতে তার ভাবী নাসরিনের জন্য বাপের বাড়ি থেকে জুতো পাঠানো হয়েছে। সে যেন ভাবীকে দেয় বলে মটর সাইকেল আরোহী চলে যায়।

তিনি ব্যাগটি নিয়ে ভাবী নাসরিনের গেটের সামনে আসা মাত্রই সাদা পোশাকে এক ব্যক্তি তাকে আটক করে হাতকড়া পরিয়ে উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান ও তিনি (উপপরিদর্শক নিকুঞ্জ রায়) দোকানে আনেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা জহুরুল ওই চায়ের দোকানে এসে তার (সোহাগ) হাতকড়া খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ঝামেলা এড়াতে বাদশা ও মনিরুল পুলিশ সদস্যদের অন্যত্র চলে যেতে বলেন। পুলিশ চলে না যাওয়ায় সেখানে জড়ো হওয়া বেশ কিছু লোকজনের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তা ধ্বস্তি হয়। খবর পেয়ে কলারোয়া থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাকেসহ জহুরুল, রাসেল, মোসলেম ও নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায়।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি কর্মী ধানঘরা গ্রামের নাভেজ, নজরুল, সাত্তার, বাবু সরদার, জাকির , মুনসুর ও রহিমসহ একটি সুবিধাবোগী গ্রুপ পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানি করার একপর্যায়ে এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুল আরেফিন জানান, সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ফেনসিডিলসহ সোহাগকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় উপপরিদর্শক নিকুঞ্জ রায় বাদি হয়ে শনিবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনসহ ১০জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনকে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

(আরকে/এসপি/এপ্রিল ১২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৩ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test