E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সনিয়ার ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ

২০২৫ এপ্রিল ০৮ ১৯:৪৪:৩৮
সনিয়ার ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ

শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার এক নারীর নামে সম্প্রতি ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। স্থানীয়ভাবে সনিয়া নামে পরিচিত এই নারী যেন পরিণত হয়েছেন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতায়। 

উপজেলা মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ছোট সাদিপুর এলাকার মৃত ইউসুফের মেয়ে সনিয়া। তিনি টার্গেট করেন, প্রভাবশালী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের, এরপর কৌশলে গড়ে তোলেন সম্পর্ক, আপত্তিকর ছবি, অডিও-ভিডিও দিয়ে শুরু হয় তার ব্ল্যাকমেইল গেইম।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, সনিয়ার প্রতারণা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এটি সুপরিকল্পিত এবং ঠাণ্ডা মাথার কাজ। প্রথমে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা সরাসরি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টার্গেটদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন তিনি। ঘনিষ্ঠতার সুযোগে সংগ্রহ করেন ব্যক্তিগত ছবি, অডিও-ভিডিও ক্লিপ, এমনকি পারিবারিক তথ্যও। তারপরই শুরু হয় ভয়, হুমকি ও চাঁদার দাবি। কেউ টাকা না দিলে সরাসরি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। কখনো আবার আইনের হুমকিও দেয়া হয়, যাতে ভুক্তভোগী আতঙ্কে দ্রুত চুপসে যান। এতে সে হয়ে উঠে আরও ভয়ঙ্কর।

সনিয়ার প্রতারণায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭ থেকে ৮ জনের নাম জানা গেছে, যারা তার ফাঁদে পড়ে লাখ লাখ টাকা সনিয়ার হাতে তুলে দিতে বাদ্য হয়েছেন। কিন্তু সামাজিক সম্মান, মর্যাদার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। সনিয়ার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিলো। সম্প্রতি ফের নতুন করে শুরু করা তার প্রতারণার কৌশল ফাঁস করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, সে আসলে এক ধরনের মানসিক সাইকো, মানুষের দুর্বলতা খুঁজে বের করে সেটিকে অস্ত্র বানায়। আর এ কাজে সে একা না, তার সাথে রয়েছে একটি চক্র, যারা সবকিছু ম্যানেজ করে। বারবারই পার পেয়ে যাওয়া সনিয়া এখন নতুন করে হয়েছে আরও বেপরোয়া। সাধারণ থেকে অসাধারণ আবারও সবাই তার টার্গেটে পরিনত হচ্ছে।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, যদি কেউ প্রমাণসহ অভিযোগ দেয়, আমরা অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেবো। এ ধরনের ব্ল্যাকমেইল, আইনে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। প্রতারকদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা যদি নীরব থাকেন, তাহলে এই সামাজিক বিষবৃক্ষ আরও ডালপালা মেলবে। তাই সবার উচিৎ সাহসিকতার সঙ্গে সত্যকে সামনে এনে, আইনানুগ পথে এগুনো।


সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি পরিকল্পিত ব্ল্যাকমেইল চক্রের অংশ হতে পারে, যার পেছনে আরও সক্রিয় সদস্য থাকতে পারে।

এই বিষয়ে সনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি, তবে এরইমধ্যে ভুক্তভোগীরা আইনগত সহায়তা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ০৮, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ এপ্রিল ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test