E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

সুন্দরবনে গুলিশখালীর আগুন এখনও জ্বলছে, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট

২০২৫ মার্চ ২৪ ১৭:৪৯:৩৯
সুন্দরবনে গুলিশখালীর আগুন এখনও জ্বলছে, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট

সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজির টেপারবিলে আগুন পুরোপুরি নিভলেও সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ‘বাইশ ও তেইশের ছিলা’র মাঝামাঝি লাগা আগুন দুদিন ধরে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখনও জ্বলছে। এমরই মধ্যে আগুন নেভাতে খুলনা ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে পানির উৎস দূরে হওয়ায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগকে। জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। আরো নতুন এলাকায় যাতে আগুন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ফায়ার লাইন কেটে দিয়েছে বনবিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষাকর্মী। আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আগুন কখন নিয়ন্ত্রণে আসবে তাও বলতে পারছে না বনবিভাগ। বাইশ ও তেইশের ছিলার মাঝামাঝি এলাকায় আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। এই নিয়ে সুন্দরবনের দুটি এলাকায় আগুনের লাগার ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি করল বনবিভাগ। এই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে কলমতেজি ফরেষ্ট ক্যাম্পের টেপারবিলে চার একর এলাকাজুড়ে লাগা আগুন তিনদিন পর আজ সোমবার বিকালে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ‘বাইশ ও তেইশের ছিলা’র মাঝামাঝি লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে সবাই মিলে প্রাণপণ দিয়ে চেষ্টা চলছে। এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে এখনও ধোঁয়ার কুন্ডলি পাকিয়ে জ¦লে উঠছে। কোথাও আগুন দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে নেভাতে চেষ্টা চলছে। এই মুহূর্তে পাম্প দিয়ে পানি দেওয়া যাচ্ছে না। ভাটায় নদীতে পানি একদম শুকিয়ে গেছে।

খুলনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারি পরিচালক (এডি) আবু বক্কর জামান জানান, রবিবার রাত নয়টার দিকে সুন্দবনের মরা ভোলা নদীতে পাম্প মেশিন বসানোর কাজ শেষ করে গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ‘বাইশ ও তেইশের ছিলা’র মাঝামাঝি লাগা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়। এখানের আগুন নেভাতে খুলনা ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের দশটি ইউনিট একযোগে কাজ করছে। পানির উৎস তিন কিলোমিটার দূরে থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। মরা বোলা নদীতে জোয়ারের সময় মাত্র ৪ ঘণ্টা পানি থাকায় ওই সময়ে পাম্প চালিয়ে আমদের কাজ করতে হচ্ছে। এই এলাকাটিতে সুন্দরী, বলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের আধিক্য থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায় এক কিলোমিটার বন এলাকাজুড়ে লাগা আগুন যাতে আরো ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য আগুনের স্থানের চারপাশে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। গভীর রাত পর্যন্ত ফায়ার লাইনে পানি দেয়ার কাজ চলে। সোমবার সকালে জোয়ার শুরুর পর পাম্প চালিয়ে মাত্র ৮ঘন্টা আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করা গেছে। আগুনে কুন্ডলি ও ধোঁয়া দেখতে পানি দেয়া হচ্ছে। আমাদের পাশাপাশি বনবিভাগও তাদের নিজস্ব পাম্প দিয়ে পানি ছিটাচ্ছে।

বন অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের বন সংরক্ষক (সিএফ) ইমরান আহমেদ জানান, গুলিশাখালী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির ‘বাইশ ও তেইশের ছিলা’র মাঝামাঝি রবিরার সকালে লাগা আগুন এখনো থেমে থেমে জ্বলছে। রবিবার রাত থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস। পানির সংকট থাকায় বনের আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হচ্ছে। জোয়ারের পানির উপর নির্ভর করে এখানে আগুন নেভানোর কাজ করতে হচ্ছে। নদীর জোয়ারের পানি যতক্ষণ পাচ্ছে ততক্ষণ তারা পানি ছিটানো হচ্ছে। এখানে আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় কখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন এলাকায় যাতে আগুন না ছড়ায় সেজন্য ফায়ার লাইন কাটার কাজ শেষ করা হয়। আগুন এখন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রয়েছে। সুন্দরবনের কলমতেজি ফরেষ্ট ক্যাম্পের টেপারবিলে লাগা আগুন এখন সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে এসেছে। দুটি আগুন লাগার কারন ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

(এস/এসপি/মার্চ ২৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৬ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test