E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

৭ কোটি টাকার স্লুইস গেট নির্মাণে জমি ও গাছপালা কাটার অভিযোগ

২০২৫ মার্চ ২৪ ১৭:০৫:৩৪
৭ কোটি টাকার স্লুইস গেট নির্মাণে জমি ও গাছপালা কাটার অভিযোগ

তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়নবোর্ড স্লুইচ গেট নির্মাণ করছে। এটি নির্মত হলে বর্ষা সৌসুমে এলাকার বণ্যা নিয়ন্ত্রণ ও শুস্ক মৌসুমে অন্তত ১ হাজার একর জমি সেচের আওতায় আসবে। এতে এলাকায় দু’ মৌসুমে ধান, সবজি ও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু কোন নোটিশ ও ক্ষতিপূরণ ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি,গাছপালা কাটার অভিযোগ উঠেছে। এতে অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রকল্প এলাকার জমির মালিকরা। 

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি জায়াগায়তেই উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে দাবি করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, কাজ করতে গিয়ে মালিকানা কিছু জায়গা কাটা পড়তে পারে। এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার গচাঁপাড়া গ্রামে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গোপালগঞ্জ নির্বার্হী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ওই গ্রামের ওয়াবদারহাট খালে স্লুইস গেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পাউবো’র তত্ত্বাবধানে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে খোকন কনস্ট্রাকশন এ কাজ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। তবে স্লুইস গেট প্রকল্প এলাকার খাল খনন করতে গিয়ে ঠিকাদার জমি, গাছ-পালা কেটে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

ক্ষতিগ্রস্ত জামির মালিক লিপি সিকদার বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারী জায়গার পাশাপাশি সড়ক ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি, গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে। কোন ধরনের নোটিশ বা ক্ষতি পূরণ না দিয়েই জমি ও গাছ কাটা হয়েছে। বাধা দিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অমান্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে ভাঙন দেখা দেওয়ার আশংকা রয়েছে। ফলে জমি ও ঘর বাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে বলে আমি ধারণা করছি।

তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার বাঁশঝাড় ও গাছপালা ও বাড়ির জমি কেটে স্লুইস গেট নির্মাণ করছে। এতে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমি এবং আমার স্বামী বাধা দিয়েছি। তারা বাধা উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছে। আর পাউবো যে জায়গা অধিগ্রহণের কথা বলছে, সেই জায়গা আমার মালিকানা জমির মধ্যে নয়। সুরতং আমার জায়গা কাটা বন্ধ করতে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক রানা সিকদার বলেন, এটা আমার নানার জায়গা। বর্তমানে আমাদের দায়িত্বে রয়েছে। নানার মালিকানা জায়গার পরে খাল। সেই খালে কালর্ভাটের কাজ চলছে। আমাদের কিছু না জানিয়ে ইচ্ছামত জায়গা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমার কাকা অফিসে গিয়েছিল। কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ ভালো কোন কথা বলেনি।

অপর ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক রাজু আহমেদ বলেন, আমি বালু ভরাট করেছিলাম। সেই বালু কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে বলে বালু ভরাট করে দেবে। আমার প্রায় ৩ লাখ টাকার বালু, এ ক্ষতি কে পুরণ করবে? আর একটা বিষয় ভালো মন্দ কিছু না বলে ঠিকাদার জোর করে কাজ করছে। এটা কিভাবে সম্ভব? তাই আমি এই কাজের প্রতিবাদ করছি।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খোকন কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, জমির মালিক থেকে অনুমতি নেয়ার দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের। কর্তৃপক্ষ আমাদের সিমানা দেখিয়ে দিয়ে সাইড বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা সেই ভাবে কাজ করছি। তারপরও যেটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটা আমরা জমির মালিকদের পুষিয়ে দেয়ার কথা বলেছি।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম রিফাত জামিল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহনকৃত জমির মধ্যেই কাজটি চলমান রয়েছে। আর কাজ করতে গিয়ে মালিকানা কিছু জায়গা কাটা পড়তে পারে। কিন্তু কাজ শেষ হলে ওই জায়গা সেই ভাবে থেকে যাবে। এছাড়া ওখানে যারা সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল, তারাই এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এখন জমি ও গাছ কাটার অভিযোগ তুলছে।

(টিবি/এসপি/মার্চ ২৪, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test