E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

অপসারণ চেয়ে লিখিত অভিযোগ

আদমদীঘিতে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

২০২৫ মার্চ ২০ ১৮:৩১:৫৩
আদমদীঘিতে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

আদমদীঘি প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাস্তাঘাট, ড্রেন, ব্রীজ, স্কুলসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজে তার অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে গত রবিবার (১৬ মার্চ) বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন একাধিক বিএনপি নেতা। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলা এলাকাতে সরকার বিভিন্ন সময়ে রাস্তাঘাট, ড্রেন, ব্রীজ, স্কুলসহ নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম করে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলীদের তত্বাবধানে ঠিকাদার দিয়ে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন করা হয়। এতেকরে প্রত্যেকটা উন্নয়নমূলক কাজ দৃশ্যমান হয়। অথচ স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের আমলে আওয়ামীপন্থী প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা ঠিকাদারের সঙ্গে সরকারি উন্নয়নমূলক কাজে যোগসাজশ করে বিভিন্ন অনিয়মে তাদের সহযোগিতা করে আসছেন। গত ২০২২ সালের ৩ অক্টোবরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।

যোগদানের পর ওই সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজুর সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। তার ছত্রছায়ায় বিভিন্ন অনিয়মের কাজে জড়িত হন তিনি। এতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পছন্দের ঠিকাদার নামমাত্র কাজ করলেও তিনি বাধা নিষেধ করতেন না। ফলে নির্মাণ কাজগুলো বছর পেড়িয়ে যেতেই গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। নিম্নমানের সামগ্রী ইট, পাথর, বালু, সিমেন্ট, কাঠের সার্টারের বদলে বাঁশ, পুরাতন লোহার রড এসব দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে ঠিকাদার যার কোন কাজে তিনি গুরুত্ব দিতেন না।

গণমাধ্যম কর্মীরা রাস্তাঘাট, স্কুল, ব্রীজ সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে অনিয়ম নিয়ে জাতীয় আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত করেন। সংবাদ প্রকাশের পর কিছুদিন কাজ বন্ধ থেকেও পরে কিছু নিম্নমানের সামগ্রী সড়িয়ে দিয়ে কয়েকদিন পর পুনরায় একই নিয়মে কাজ করার অনুমতি দেন তিনি। বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তর গোপনে বিভিন্ন বিষয়ে সুবিধা নিয়ে ঠিকাদারদের অনিয়মের কাজে সহযোগিতা করতেন।

এ কারণে বিভিন্ন অনিয়ম থাকা সত্বেও তাদের কাজের বিল নিয়ে বাঁধা প্রদান না করে উল্টো উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিল ছাড়তে তকবির করেন প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা। গত কয়েকমাসে বিভিন্ন স্থাপনার অনিয়মের কিছু উল্লেখযোগ্য ছাতিয়ানগ্রাম অন্তাহার স্কুলের বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রীর ব্যবহারের অভিযোগ আসে। পরে এ ঘটনার এর সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর পুনরায় কাজ চালু করতে অনুমতি দেন তিনি। পরে আবারও কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আওয়ামী লীগের সময়ে উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে চারপাশে দেওয়ালে শ্যাঁওলা, ফাঁটল, প্লাস্টার খসে পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। দমদমা গ্রামে একটি রাস্তার কার্পেটিং কাজের একদিন পরেই পাথরসহ পিচ উঠে যাচ্ছিলো প্রকৌশল দপ্তর জেনেও তার সমাধান করেনি।

তাছাড়াও কড়ই এলাকায় রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় প্রতিবাদ করে এলাকাবাসী। এরপর চাঁপাপুর এলাকায় একটি ব্রীজ নির্মাণে পুরাতন লোহার রড ও কাঠের সার্টারের বদলে বাঁশ ব্যবহারের ফলে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ছাতিয়ানগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিল্ডিং হস্তান্তরের আগেই দেওয়ালে নোনা, ফাঁটল সহ প্লাস্টার উঠে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা৷ এদিকে তাঁরাপুর স্কুলের প্রাচীর নির্মাণে কাজে ব্যাপক অনিয়ম উঠে আসে। এভাবে কয়েকবছরে সরকারি বহু অর্থ নামমাত্র কাজ দেখিয়ে ঠিকাদারের সহযোগিতায় প্রচুর অর্থের মালিক বনে যান প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা।

এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা জানান, অভিযোগটি ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

(এস/এসপি/মার্চ ২০, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

৩১ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test