E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

 

ডাকাতি মামলায় কারাগারে পাঠানো হলো কর্মচারি স্বপনকে

২০২৫ মার্চ ১৭ ১৯:৩৯:০৬
ডাকাতি মামলায় কারাগারে পাঠানো হলো কর্মচারি স্বপনকে

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা শহরের শহীদ নাজমুল শরনীস্থ “দে জুয়েলার্সে” ডাকাতির পরিকল্পনাকারি কর্মচারি স্বপন করকে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর শহরতলীর তালতলায় অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড এর ডিপোতে ডাকাতির মামলায় শনিবার রাত সাড়ে ১১ টায় আমতলা মোড় থেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। 

গণধোলাই এর পর শনিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে তাকে তাকে সাতক্ষীরা শহরের খান মার্কেটস্ত জুয়েলারি ব্যবসায়ি সমিতির অফিসকক্ষ থেকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্বপন কর(৪০) শহরের কাটিয়ার কালিপদ কর এর ছেলে। তবে প্রকৃত ঘটনায় মামলা রেকর্ড না করে একটি বিচারাধীন মামলায় স্বপন কর কে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানোয় স্বর্ণকার শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সাতক্ষীরা শহরতলীর উত্তর কাটিয়ার কালিপদ কর জানান, গত শনিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তার ছেলে স্বপন কর তার মালিক বলাই দে এর দোকানে যান। দোকনে ঢোকার আগেই কিছু ব্যবসায়ি ও তাদের কর্মচারি স্বপনকে বেধড়ক মারপিট করে। খবর পেয়ে তিনি ও ভাইপো তপন কর ঘটনান্থলে ছুঁটে যান। এরপর স্বপনকে জয়েলার্স সমিতির অফিসে নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রেখে ব্যাপক মারপিট করা হয়। সভাপতি গৌর দত্ত ও বলাই দে সহ কয়েকজন ব্যবসায়ি স্বপনকে যার পর নেই মারপিট করে। একপর্য়ায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার পর স্বপনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে বলাই দে কয়েকজন ব্যবসায়িকে থানায় নিয়ে স্বপনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ ওই অভিযোগ আমলে না নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তার ছেলেকে শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় আমতলা মোড় থেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর শহরতলীর তালতলায় অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড এর ডিপোতে ডাকাতির মামলায় রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। এটা দূঃখজনক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানান, স্বপন কর তার মালিক বলাই দে এর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মাসিক আট হাজার টাকা বেতনে চাকুরি করলেও মালিকের দোকানে যেভাবে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল তা অবশ্যই ক্ষমার অযোগ্য। তবে স্বপন কর কে নিজের কাজের বাইরে মালিকের ইচ্ছায় কয়েকজন জুয়েলারী ব্যবসায়ির বাসায় ও নির্ধারিত স্থানে মদ বহন করতে দিতে হতো। শুক্রবারও বাদ যেতো না। তা ছাড়া বলাই দেসহ কয়েকজন বড় জুয়েলারী ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে হুন্ডির ব্যবসা, অবৈধ সোনার ব্যবসার কাজে স্বপন করসহ কয়েকজনকে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। ওইসব ব্যবসায়িরা বিভিন্ন সময়ে রাতে মজলিস বসাতেন। তাতে স্বপন কর এর মত কর্মচারিকে মালিকের মন যোগাতে হতো। তবে বলাই দে এর মামলঅ রেকর্ড না করে একটি বিচারাধীন ডাকাতির মামলায় স্বপনকে গ্রেপ্তার দেখানো সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। এতে দে জুয়েলার্স এ ডাকাতির পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত খুলনা শহরের ধর্মসভা এলাকার জয়সহ কয়েকজন রয়ে গেলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

শহরের দে জুয়েলার্সের মালিক বলাই দে জানান, তার দোকানের কর্মচারি স্বপন কর তারই দোকানে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করলে তিনি সকল তথ্য বের করে শনিবার সকাল ১০টায় তাকে দোকনে ঢুকতে দেননি। জুয়েলার্স সমিতির কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেই স্বপনকে তিনি শনিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে পুলিশে সোপর্দ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। হুন্ডি ব্যবসা, অবৈধ সোনার ব্যবসা, স্বপনকে দিয়ে মদ বহন করানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তার মামলা হয়েছে কিনা বা তাকে কোন মামলায় পুলিশ জেলে পাঠিয়েছে তা তার জানা নেই।

সাতক্ষীরা জুয়েলারী ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি গৌর চন্দ্র দত্ত জানান, যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে মোবাইল রেকর্ডিং) দে জুয়েলার্স এর কর্মচারি স্বপনকে ধরে শনিবার দুপুরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অনেকে তাকে মারপিট করেছে স্বীকার করেই বলেন, তিনিও একটি চড় মেরেছিলেন। তবে বলাই দে এর মামলা কেন নেওয়া হলো না তা তিনি জানেন না। প্রকৃত ঘটনায় মামলা না হওয়ায় ডাকাতির পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িতরা প্রকাশ্যে আসলো না।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শামিনুল হক জানান, শনিবার দুপুরে স্বপনকে জয়েলারী সমিতির অফিস থেকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে বলাই দে তার দোকানে ডাকাতির পরিকল্পনার অভিযোগ দিলেও তা গুরুত্ববহন না করায় আগে থেকে সন্দিগ্ধ হিসেবে একটি বিচারাধীন ডাকাতির মামলায় স্বপনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

(আরকে/এসপি/মার্চ ১৭, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test