E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

জামালপুরে শিক্ষার্থী-আইনজীবী সংঘর্ষের ঘটনায় আইনজীবীদের মানববন্ধন

২০২৫ মার্চ ১১ ১৯:১৩:৪১
জামালপুরে শিক্ষার্থী-আইনজীবী সংঘর্ষের ঘটনায় আইনজীবীদের মানববন্ধন

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে 'ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লাঠি-শোঠা, ছুরি-রড, দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র নিয়া কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করিয়া বিজ্ঞ আদালতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ ও হুমকি দিয়া বিজ্ঞ আইনজীবীদের উপর আকস্মিক ভাবে হামলার প্রতিবাদ' শিরোনামে মানববন্ধন করেছে জামালপুরের আইনজীবীরা।

জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে আজ মঙ্গলবার সকালে জজকোর্ট প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আইনজীবী আব্দুল আউয়াল।

সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রিশাদ রেজওয়ান বাবু, সহ-সভাপতি আইনজীবী জামিল হাসান তাপস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মুন্জুর কাদের বাবুল খান, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রাজজ-১ এর পিপি আইনজীবী দিদারুল ইসলাম, আইনজীবী নজরুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি আবু তাদের তারা প্রমুখ।

মানববন্ধনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রিশাদ রেজওয়ান বাবু বলেন, 'একজন আইনজীবী হিসেবে ধর্ষণকে আমরা কোনভাবেই সমর্থন করিনা। নাগরিক হিসেবেও সমর্থন করিনা, একজন বিএনপির কর্মী হিসেবেও সমর্থন করিনা। আমি সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বলতে চাই, যারা ধর্ষণের শিকার হবেন তারা আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে এবং আইনজীবী সমিতির আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সহযোগিতা পাবেন।

তিনি আরও বলেন, 'আদালতে সবাই নিরাপত্তার জন্য আসেন। এখানে লাঠিসোটা দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন করে বিচারকে প্রভাবিত করা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।'

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে আইনজীবী আব্দুল আউয়াল বলেন, 'একটি মামলাকে কেন্দ্র করে গতকাল দিনের বেলার ছাত্র নামধারী বহিরাগত কিছু মানুষ সশস্ত্র অবস্থায় আদালতে প্রবেশ করে বিজ্ঞ আদালতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে বিজ্ঞ আইনজীবীদের উপর আকস্মিক ভাবে হামলা চালায়। তারা বক্তব্য দিয়ে বিচারকাজে নিয়োজিত বিচারকদেরও হুমকি প্রদান করেছে। যারা আইনগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে তাদেরকেও তারা হুমকি প্রদান করেছে। এমনকি আইনজীবীদের উপরেও তারা হাত তুলেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও জানান, এই আদালত প্রাঙ্গণ একটি পবিত্র জায়গা। এর সম্মান, মর্যাদা, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা দেশের সকল নাগরিকের একান্ত প্রয়োজন ও অপরিহার্য। যারা বিচার চায় তাদেরও যেমন সুবিচার পাবার অধিকার রাখে তেমনি যারা আসামি তারাও সুবিচার প্রার্থনা করে। সর্বক্ষেত্রেই আইনের শাসন যাতে প্রতিষ্ঠা হয়, আমাদের জায়গা এই ভূমিকা পালন করাই আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

তিনি বলেন, আমরা প্রাসঙ্গিকভাবে বলতে চাই, যে মামলার বিষয়টি নিয়ে এই ঘটনার অবতারণা হয়, আমরা সেই জায়গায় নির্যাতিত সেই শিশুটির পক্ষে আছি। সমিতির সকল সদস্যগণ ওই মেয়েটির প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি এবং তার পক্ষে আইনগত সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, আসামি হিসেবে যারাই থাকুন না কেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী তাদেরও আইনি সহযোগিতা পাবার অধিকার আছে।

উল্লেখ, একটি শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে জেলা আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি করেছে, ধর্ষক প্রাপ্তবয়স্ক হলেও জাল জন্মনিবন্ধন করে ধর্ষকের বয়স ১৮ বছরের নিচে দেখিয়ে তাকে জামিন করানোর পাঁয়তারা করছেন আইনজীবীরা। অপরদিকে, আইনজীবীদের দাবি, এটা একটা বিচারিক প্রক্রিয়া। বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার এবং আদালত সেটিকে বিচার-বিবেচনা করবেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের মধ্যে ৮ জন আহত হন।

(আরআর/এসপি/মার্চ ১১, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১২ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test