E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care

For Advertisement

Mobile Version

দুই মাস বন্ধ থাকার পর সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা শুরু

২০২৫ মার্চ ০২ ১৩:৩৫:২০
দুই মাস বন্ধ থাকার পর সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা শুরু

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম ঘিরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে দীর্ঘ দুই মাস কাঁকড়া ধরা বন্ধ রেখেছিল বন বিভাগ। নিষেধাজ্ঞা শেষে উপকূলের জেলেরা আবারও কাঁকড়া ধরতে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে নৌকা নিয়ে নামতে শুরু করেছে পহেলা মার্চ শনিবার থেকে। বন বিভাগ থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে শনিবার সকাল থেকে তারা কাঁকড়া ধরতে সুন্দরবনে যায়। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এ দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৫৮ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরার অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী, কদমতলা, কৈখালী ও কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনের আওতায় ২ হাজার ৯০০টি নৌকা সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র আছে। এর মধ্যে কাঁকড়া ধরার নৌকা আছে ১ হাজার ৬০০টি।

সুন্দরবনসংলগ্ন দাঁতিনাখালী গ্রামের কাঁকড়া ধরার জেলে বাশার গাজী (৬০) বলেন, ‘বাদাই (সুন্দরবনে) কোনো সচ্ছল মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। যারা যান, তারা প্রায় সবাই দরিদ্র। দুই মাস নিষেধাজ্ঞার সময় আমার মতো গরিব জেলের অনেক কষ্ট হয়। বন্ধের দুই মাস সরকারিভাবে কোনো ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। শনিবার থেকে কাঁকড়া ধরার অনুমতিপত্র পেয়ে একটু স্বস্তি লাগছে।’

গাবুরার আরেক জেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা উপকূলের মানুষ। গত দুই মাস সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা বন্ধ থাকায় আমাদের অভাব-অনটনে দিন কাটাতে হয়েছে। শনিবার থেকে আবার কাঁকড়া ধরতে যাব। আমরা সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারব। ধারদেনা এবার পরিশোধ করতে পারব।’

সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘কাঁকড়া ধরার জন্য জেলেদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা শনিবার সকাল থেকেই কাঁকড়া ধরতে পারবেন। এসব জেলে সুন্দরবনে শুধু মাছ ও কাঁকড়া শিকার করতে পারবেন।’

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মসিউর রহমান বলেন, ‘সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে দুই মাস জেলেদের কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ ছিল। ১ মার্চ থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা প্রবেশ নিষিদ্ধ অভয়াশ্রম ছাড়া অন্য নদী-খালে কাঁকড়া ধরতে পারবেন। তবে কেউ যাতে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারেন, সে জন্য বন রক্ষীদের টহল ও অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনচালিত কোনো নৌকা বা ট্রলার কাঁকড়া পরিবহনের ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।’

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছরই কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ। বাকি অংশের নদী ও খালে অনুমতিপত্র পাওয়া প্রায় ১৫ হাজার জেলে শুধু কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।

(আরকে/এএস/মার্চ ০২, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১০ মার্চ ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test